E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কাঁচামরিচ আড়াইশ, ২০ টাকার নিচে মিলছে না শাক

২০২০ আগস্ট ২১ ১৫:১৪:০৪
কাঁচামরিচ আড়াইশ, ২০ টাকার নিচে মিলছে না শাক

স্টাফ রিপোর্টার : দুই মাসের বেশি সময় ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম নতুন করে আরও চড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভালো মানের ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অর্থাৎ এক কেজি কাঁচামরিচের দাম পড়ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা।

কাঁচামরিচের এমন চড়া দামের সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শাক। বাজার কোনো শাকের আঁটি এখন ২০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। এর সঙ্গে সবজির চড়া দাম তো আছেই। একমাত্র কচু ছাড়া কোনো সবজির কেজি ৫০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। অধাকেজি নিলে এসব মরিচের দাম রাখা হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। আর এক কেজি নিলে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা দাম রাখা হচ্ছে।

তবে কোথাও কোথাও কাঁচামরিচের পোয়া ৫০ টাকা এবং কেজি ১৮০ টাকা রাখা হচ্ছে। অবশ্য এ মরিচের মান ভালো না। ৫০ টাকা পোয়া বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের মধ্যে একটি বড় অংশই নষ্ট।

মরিচের এমন চড়া দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আলম বলেন, বন্যা আর বৃষ্টিতে সব শেষ। এরপরও কিছু কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে এই ভালো। বাজারে কাঁচামরিচের যে সরবরাহ তাতে কেজি ৩০০ টাকা হলেও আশ্চর্যের কিছু নেই।

খিলগাঁওয়ে ব্যবসায়ী মিলন বলেন, গত বুধবারও এক পোয়া কাঁচামরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ ৭০ টাকার নিচে বিক্রি করা সুযোগ নেই। তবে এক কেজি নিলে ২৬০ টাকা রাখা যাবে।

তিনি বলেন, দুই মাসের বেশি সময় ধরে কাঁচামরিচের দাম বেশি। এর মধ্যে আজ হুট করে আড়তে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গেছে। তারপরও ভালো মানের কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ মরিচ নষ্ট।

মালিবাগ হাজীপাড়ায় ভালো-নষ্ট মিশিয়ে কাঁচামরিচের পোয়া ৬০ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ী হিরুকে। তিনি বলেন, আজ কাঁচামরিচের অনেক দাম। একদম ফ্রেস কাঁচামরিচ আড়তে পাওয়া যায়নি। তাই বেশি দাম দিয়ে এই মরিচ কিনেছি।

তিনি বলেন, গত বুধবার এ ধরনের কাঁচামরিচের পোয়া ৩০ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ যে দামে কেনা পড়েছে তাতে ৬০ টাকা পোয়া বিক্রি করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি যা সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, এই বাজারেই ৫০ টাকা পোয়া কাঁচামরিচ পাবেন। তবে বাসায় নিয়ে ওই মরিচের অর্ধেক ফেলে দিতে হবে।

এদিকে বিভিন্ন বাজারে, লাল শাক, সবুজ শাক, কলমি শাকের পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে পুঁইশাক। পুঁইশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আর লাল শাক, সবুজ শাক ও কলমি শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

শাকের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী হাছান বলেন, ঈদের পর থেকেই শাক এমন দামে বিক্রি হচ্ছে। আড়তেই এক আঁটি লাল শাক, কলমি শাক কেনা পড়ছে ১৫ টাকা। সুতরাং এই শাক ২০ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব কিনা আপনিই বলেন?

এদিকে গত সপ্তাহের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। আগের মতোই বাজার ও মান ভেদে পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। গাজরের কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা। করলা (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। তবে বড় করলা ৭০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা। পাশাপাশি চিচিংগা ৫০-৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, পটল ও ঢেড়স ৫০-৬০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, কচুর মুখি ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ধুন্দল ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙা। লাউয়ের পিস ৬০-৭০ টাকা, চালকুমড়োর জালির পিস ৪০-৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০-৪৫ টাকা এবং কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা।

এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও ডিম। এক কেজি আলুর জন্য ৩৫-৩৭ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আর এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী জহির বলেন, এ সপ্তাহের সবজির দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে বন্যা ও পানিতে সবজি খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক দিন ধরেই সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে সবজি বাজারে আসার আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো এক কেজির ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০-৯০০ টাকায়। ৭৫০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে। আর আধা কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকার মধ্যে।

রামপুরার ব্যবসায়ী অমিত বলেন, এবার জালে প্রচুর বড় ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে দাম কিছুটা কম। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১১০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজির ইলিশ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আরও কিছুদিন এমন দামে ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আমাদের ধারণা। তবে এর থেকে কম দামে পাওয়া যাবে না। বরং হুট করে জালে মাছ পড়ার পরিমাণ কমে গেলে, দাম বেড়ে যাবে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test