E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এখন ক্রেতা নেই জিল বাংলা সুগারের

২০২০ নভেম্বর ০৭ ১৫:২৩:২৯
এখন ক্রেতা নেই জিল বাংলা সুগারের

স্টাফ রিপোর্টার : অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর এখন জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ারের এক ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ৭০ টাকা ৯০ পয়সা বা ৩৩ শতাংশ।

অথচ এই দরপতনের আগে কোম্পানিটির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। মাত্র দুই মাসে কোম্পানিটির ৩১ টাকা ৬০ পয়সার শেয়ার দাম বেড়ে ২১৩ টাকা ১০ পয়সায় ওঠে। অর্থাৎ শেয়ারের দাম বাড়ে ১৮১ টাকা ৫০ পয়সা বা ৫৭৪ শতাংশ।

এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জিল বাংলা সুগারের শেয়ার লেনদেন বন্ধ রাখার আদেশ দেয়া হয়।

এ আদেশে উল্লেখ করা হয়, ডিএসইতে জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেন ও দামের তারতম্য লক্ষ করা গেছে। এ কারণে কমিশন মনে করে, বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করা প্রয়োজন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯-এর ১৭)-এর অধীনে ৯ (৭) ক্ষমতাবলে জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে কমিশন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেয়।

দেড় মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে আবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়। তবে লেনদেন বন্ধ হওয়ার আগে দাম বাড়ার যে প্রবণতা ছিল তা আর ধরে রাখতে পারেনি। এক ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়ায় গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দারপতন হয়েছে। এতে ২১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে শেয়ার দাম কমে ১৪২ টাকা ২০ পয়সায় নেমে আসে।

৯ জুলাই থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও জিল বাংলা সুগারি মিল বছরের পর বছর লোকসানে নিমজ্জিত। লোকসানের ফলে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিতে পারছে না। সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪৪ টাকা ৭২ পয়সা।

এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে গত দেড় মাসে দুই দফায় বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২০ আগস্ট ও ১৯ জুলাই এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

জিল বাংলা সুগার মিল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই দফাতেই ডিএসই জানায়, জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

ডিএসইর এই সতর্কবার্তা যে কোনো কাজে আসেনি তা কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার চিত্র দেখলে সহজেই অনুমান করা যায়। সতর্কবার্তা দূরে ঠেলে হু হু করে শেয়ারের দাম বাড়লেও ১৯৮৮ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে নেই।

তবে ডিএসইর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সাল থেকে কোম্পানিটির লাভ-লোকসানের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৯ এই পাঁচ বছরের প্রতিটি বছরেই কোম্পানিটি বড় অঙ্কের লোকসান করেছে।

এর মধ্যে ২০১৯ সালে ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা, ২০১৮ সালে ৮০ টাকা ৮২ পয়সা, ২০১৭ সালে ৫৪ টাকা ৯ পয়সা, ২০১৬ সালে ৬২ টাকা ৫৬ পয়সা এবং ২০১৫ সালে ৫৬ টাকা ৮৯ পয়সা শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test