E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এবার ভোগাচ্ছে চাল-তেল

২০২০ ডিসেম্বর ০৫ ১৪:১৯:৪২
এবার ভোগাচ্ছে চাল-তেল

স্টাফ রিপোর্টার : শীতের সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও, চাল ও তেলের দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। দফায় দফায় এই দুটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে টানা দুই সপ্তাহ ধরে চাল ও তেলের দামবৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরাও দিয়েছেন একই তথ্য।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে পাইজাম ও লতা বা মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। পাইজাম ও লতার দাম বেড়ে ঠেকেছে ৫৫ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে এই দুই ধরনের চালের দাম ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ৫৪ টাকা হয়েছিল।

এছাড়া, গত সপ্তাহে মোটা বা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। ‘গরিবের চাল’ হিসেবে পরিচিত এই চালের দাম ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৮ টাকা।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। ৫২-৫৩ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের পাইজামের দাম বেড়ে ৫৫-৫৬ টাকা হয়েছে। নাজির ও মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৭-৬২ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৫-৬০ টাকার মধ্যে।

রাজধানীর রামপুরার ব্যবসায়ী মামুন বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে চালের দাম বাড়তি। মোটা চাল বাজারে নেই বললেই চলে। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম সম্প্রতি দুই দফা বেড়েছে। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন চিকন চালের দামও বেড়েছে। এই দাম বৃদ্ধির প্রবণতা কতোদিন চলবে বলা মুশকিল।’

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘বাজারে মোটা চাল নেই। এক মাসের বেশি হয়ে গেছে আমরা মোটা চাল পাচ্ছি না। সম্ভবত মোটা চালের সঙ্কটের কারণেই মাঝারি ও চিকন চালের দাম বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে যেভাবে চালের দাম বেড়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সামনে আরও দাম বাড়তে পারে।’

এদিকে চালের পাশাপাশি ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে তেলও।

টিসিবি জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ৯৮ থেকে ১০০ টাকা। ৫ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৫০০-৫৩০ টাকা হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৯০-৫২৫ টাকা। বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে ১১০-১২০ টাকা হয়েছে।

দাম বৃদ্ধির এ তালিকায় নাম লিখিয়েছে খোলা ও সুপার পাম অয়েলও। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বাজারে খোলা পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ৯১-৯২ টাকা হয়েছে। এক সপ্তাহে আগে খোলা পাম অয়েলের দাম ছিল ৮৬-৯১ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের দাম ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ৯৪-৯৬ টাকা হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯১-৯৪ টাকা।

এ বিষয়ে রাজধানীর মালিবাগ হাজীপাড়ার বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সবজির দামে এখন কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। কিন্তু চাল ও তেলের দাম সেই স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। আগে সবজি কিনতে পকেটের সব টাকা খরচ হয়ে যেত, এখন চাল ও তেল কিনতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের চাল ও তেলের বাজারে দ্রুত নজরদারি বাড়ানো উচিত।’

রামপুরার বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত মাছ, মাংস, পোলাও খেতে চাই না। ভর্তা, সবজি দিয়ে পেট ভরে দু’মুঠো ভাত খেতে পারলেই খুশি। কিন্তু সবকিছুর যে দাম পেট ভরে ভাত খাওয়ার উপায় নেই। বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি খোলা সয়াবিন তেল কিনতে ১২০ টাকা লাগছে। চাল, তেলের এমন দামের কারণে আমাদের মতো গরিব মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।’

টিসিবি জানিয়েছে, চাল ও তেলের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে আমদানি করা আদা, জিরা আর লবঙ্গেরও দাম বেড়েছে। আদার দাম ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে কেজিপ্রতি ৯০-১০০ টাকা হয়েছে। জিরার দাম ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে কেজি ৩০০-৪০০ টাকা হয়েছে। আর লবঙ্গের দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এতে এই পণ্যটির কেজি ৮০০-১০০০ টাকা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test