E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এবার এলপিজি কনভার্সন ব্যবসায় ভ্যাট গোয়েন্দার হানা

২০২০ ডিসেম্বর ২৪ ১৫:৪১:৩৫
এবার এলপিজি কনভার্সন ব্যবসায় ভ্যাট গোয়েন্দার হানা

স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, বার, সাইকেলের শো’রুমে হানা দেয়ার পর এবার এলপিজি কনভার্সনের ব্যবসায় হানা দিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি এলপিজি কনভার্সনের ব্যবসা পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছ ভ্যাট গোয়েন্দা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, একজন সেবাগ্রহীতার অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার দল ২৩ ডিসেম্বর অভিযান চালায়। সংস্থার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মহি উদ্দিন এতে নেতৃত্ব দেন।

অভিযানে একই ঠিকানায় ওই ব্যবসার দুটো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়। এদের মালিক একই ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠান দুটো হলো- জেন এয়ার টেকনোলোজি ও জেন এয়ার (বিডি)।

প্রতিষ্ঠান দুটো স্ট্যাগ, সিজিএস, রকল ও এটলাস কপকো নামের চারটি ব্রান্ডের গাড়ির এলপিজি কনভার্সন করে থাকে। প্রতি গাড়িতে তারা ক্রেতার নিকট থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা সেবামূল্য গ্রহণ করে।

অভিযানে ওই ঠিকানায় গোয়েন্দারা তাদের ভ্যাট নিবন্ধন দেখতে পাননি। সংশ্লিষ্ট মেহাম্মদপুর ভ্যাট সার্কেলে যাচাই করে দেখা যায়, ওই সার্কেলে বিগত মাসগুলোতে প্রতিষ্ঠান দুটোর কোনও রিটার্ন জমা হয়নি। গোয়েন্দা দলের কাছে তারা এ সংক্রান্ত স্বীকারোক্তিও দিয়েছে।

অভিযানকালে কাগজপত্র যাচাইয়ে প্রাথমিকভাবে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আবুল কাশেম রনি নামের একজন গ্রাহকের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান করে এবং এর সত্যতা পাওয়া যায়।

অভিযোগে ওই গ্রাহক বলেন, ‘আমি কনভার্সন চার্জ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিলে প্রতিষ্ঠান আমাকে একটা কাঁচা ক্যাশমেমো দেয়। আমি ভ্যাট চালান মূসক-৬.৩ চাইলে তারা নানান টালবাহানা করতে থাকে। পরে আমার আরো সন্দেহ হয় যে তারা ভ্যাট ফাঁকির সাথে জড়িত। আমি তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা প্রত্যাশা করছি।’

গোয়েন্দার দল অনুসন্ধানে দেখতে পায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে চট্টগ্রামের ঠিকানায় নিবন্ধন রয়েছে। এদের মূসক নম্বর ০০২৫২৬৭২৫-০৫০৫, ০০১৯১৮৬২৭-০৫০৫। তবে রাজধানীর মোহম্মদপুরের ব্যবসা ওই নিবন্ধের অন্তর্ভুক্ত নয়। ভ্যাট আইন অনুসারে একই মালিকানাধীন ভিন্ন ঠিকানায় একই নিবন্ধের আওতায় ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন নিতে হবে এবং সবগুলো ব্যবসা অনলাইন ভ্যাট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করে মাসিক রিটার্ন জমা দিতে হবে।

অনুসন্ধানে আরো দেখা যায় যে, মোহাম্মদপুরের ওই দুটো প্রতিষ্ঠানের তথ্য গোপন রেখে তারা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে; এদের হিসাব ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা নেই।

অভিযানে দেখা যায়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত থেকে এবং অতি গোপনে তারা এই ব্যবসা পরিচালনা করছে।

গোয়েন্দার দল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সহযোগিতায় সংরক্ষিত বাণিজ্যিক দলিলাদি এবং হিসাব শাখার কম্পিউটারে রক্ষিত সেবা বিক্রি সংক্রান্ত তথ্যাদি জব্দ করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠাটির মোহাম্মদপুরের ঠিকানায় গত ৪ মাসে প্রায় ১ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করা গেছে। এই সেবার উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নিকট হতে জব্দ করা ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলাদি আরো যাচাই-বাচাই করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানাননো হয়েছে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test