E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

পুঁজিবাজার ছেড়েছে লক্ষাধিক বিনিয়োগকারী

২০২১ জুলাই ০৪ ১৮:৫০:৫৩
পুঁজিবাজার ছেড়েছে লক্ষাধিক বিনিয়োগকারী

স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে বেশ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ার কথা থাকলেও গত জুনে এক লাখের ওপর বিও হিসাব কমেছে। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের তথ্যে এই চিত্র উঠে আসে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিও হিসাব কমার মূল কারণ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) নতুন নীতিমালা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী এখন আইপিওতে আবেদন করতে প্রতিটি বিওতে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে। এ কারণে আগে যেসব বিনিয়োগকারী শুধু আইপিও করার জন্য বিও হিসাব খুলতেন, তারা তা বন্ধ করে দিয়েছেন।

তারা আরও বলেন, বিও হিসাবের ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী কমলেও প্রকৃত বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। কারণে আগে অনেকেই শুধু আইপিও আবেদন করার জন্য নামে-বেনামে বিও হিসাব খুলতেন। এসব বিও হিসাব থেকে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ হতো না, শুধু আইপিও আবেদন হতো। কিন্তু এখন যেহেতু আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, সে কারণে শুধু আইপিও’র জন্য খোলা হিসাবগুলো বিনিয়োগকারীরা বন্ধ করে দিচ্ছেন।

সিডিবিএল’র তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জুলাই বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার ৭৭০টি, যা ১ জুন ছিল ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ৯০২টি। অর্থাৎ বিও হিসাব কমেছে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৩২টি।

বিও হলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্রোকারেজ হাউস অথবা মার্চেন্ট ব্যাংকে একজন বিনিয়োগকারীর খোলা হিসাব। এই বিও হিসাবের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে লেনদেন করেন। বিও হিসাব ছাড়া শেয়ারবাজারে লেনদেন করা সম্ভব নয়।

সিডিবিএল’র তথ্য মতে, গত এক মাসে পুরুষ ও নারী উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। বেড়েছে কোম্পানি বিনিয়োগকারী সংখ্যা।

বর্তমানে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ১৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫০টি। ১ জুন এ সংখ্যা ছিল ১৯ লাখ ৬০ হাজার ১০৫টি। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব ৯৬ হাজার ১৫৫টি কমেছে।

অন্যদিকে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ১১৬টি। ১ জুন এ সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৮৩ হাজার ২৯২টি। এ হিসাবে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে ৩৩ হাজার ১৭৬টি।

এদিকে বর্তমানে কোম্পানি বিও হিসাব রয়েছে ১৪ হাজার ৭০৫টি। ১ জুন এ সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৫৩১টিতে। সে হিসেবে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ১৭৪টি।

ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে দেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৫টি, যা ১ জুন ছিল ২৪ লাখ ৮০ হাজার ৭৪৯টি। অর্থাৎ দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ১ লাখ ৭ হাজার ২৪৪টি।

অন্যদিকে বর্তমানে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫৬১টি। ১ জুন এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৪৮টিতে। অর্থাৎ প্রবাসী ও বিদেশি বিও হিসাব কমেছে ২২ হাজার ৮৭টি।

বিনিয়োগকারী বা বিও হিসাব কমার কারণ হিসেবে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘আগে অনেক বিনিয়োগকারী শুধু আইপিও করার জন্য বিও হিসাব খুলত। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন আইপিও আবেদন করতে গেলে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে। এ কারণে আগে যে বিও হিসাব দিয়ে শুধু আইপিও করা হতো, এখন তা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে বিও হিসাবে কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিও হিসাব কমলেও এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কারণ এখন যারা আছে এরাই প্রকৃত বিনিয়োগকারী। আইপিও সুযোগসন্ধানীদের বিও কমছে। এটা বরং বাজারের জন্য ভালো।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিএসইসি আইপিও আবেদন করতে হলে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ থাকার যে নিয়ম করেছে, তা খুবই ভালো পদক্ষেপ। ফলে শেয়ারবাজারে প্রকৃত বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়বে। ফলে বাজারের গভীরতাও বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আইপিও’র নতুন নিয়মের কারণে বিও হিসাব কমেছে। আমাদের ধারণা সামনে আরও কমে যাবে। প্রকৃত বিনিয়োগকারীরাই এখন শেয়ারবাজারে থাকবেন। এটা বাজারের জন্য ভালো।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test