E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাজরের কেজি ১৭০ টাকা, টমেটো ১৫০

২০২১ জুলাই ২৩ ১৫:৫২:০৪
গাজরের কেজি ১৭০ টাকা, টমেটো ১৫০

স্টাফ রিপোর্টার : আগে থেকেই চড়া দামে বিক্রি হওয়া গাজর ও টমেটোর দাম ঈদে আরও বেড়েছে। ঈদের পর দু’দিনে এ দু’টি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকার ওপরে। অস্বাভাবিক দাম বেড়ে গাজর-টমেটো এখন অনেকটাই সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

গাজর ও টমেটোর সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। এর সঙ্গে ঈদের পর কিছুটা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দামও। ঈদের পর কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা পর্যন্ত।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখনো বেশিরভাগ সবজির দোকান বন্ধ রয়েছে। অল্প কিছু ব্যবসায়ী দোকান খুলে সবজি বিক্রি করছেন। সবজির মতো মাছ বাজারেও অল্পকিছু ব্যবসায়ীকে মাছ বিক্রি করতে দেখা যায়।

বাজারে বিক্রেতা যেমন কম, ক্রেতাও তেমনি কম দেখা যায়। তবে সবজির মতোই সব ধরনের মাছ চড়া দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ঈদের পর কিছু কিছু মাছের দাম বাড়ার ঘটনাও ঘটেছে। সব থেকে বেশি বেড়েছে চিংড়ির দাম। কেজিতে চিংড়ির দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে। আর পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।

ঈদের পর গাজর ও টমেটোর দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ঈদের কারণে গাজর ও টমেটোর চাহিদা বেড়েছে। অনেকে সালাদ খাওয়ার জন্য কিনছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে এ দুটি পণ্যের সরবরাহ কম, এ কারণে দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, বাজারে এখন যে গাজর পাওয়া যাচ্ছে, তা আমদানি করা। দেশি গাজর এখন বাজারে নেই। আমদানি করার কারণে এমনিতেই গাজরের দাম বেশি। আর যে টমেটো পাওয়া যাচ্ছে, তা কোল্ডস্টোরেজের। শখ করে অল্পকিছু মানুষ এই টমেটো কিনে খায়।

রামপুরার ব্যবসায়ী সবুর আলী বলেন, গাজর ও টমেটোর দাম আগে থেকেই বেশি। এখন ঈদের টানে দাম আরও বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে দাম একটু কমে যাবে। তবে গাজর ও টমেটোর কেজি সহসা ১০০ টাকার নিচে নামার সম্ভাবনা নেই।

রামপুরা বাজারে টমেটো ও গাজর কিনতে এসে দাম শুনে হতাশ ছদরুল হাসান। তিনি বলেন, একটু সালাদ খাওয়ার জন্য টমেটো, গাজর কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু গাজরের কেজি ১৭০ টাকা এবং টমেটোর কেজি ১৫০ টাকা চাইছে। শসার দাম চাইছে ৭০ টাকা। এতো দাম দিয়ে আমাদের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব না। তাই ফিরে যাচ্ছি।

ঈদের আগের দিন কিছু সবজির দাম কমলেও ঈদের পর আবার আগের দামে ফিরে গেছে। বেগুনের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া আগের মতো ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, তা ঈদের আগে ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা।

ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া আদা এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের কেজি আগের মতো ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল।

অন্যান্য মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে তেলাপিয়া মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা, মৃগেল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

চিংড়ির দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মৃনাল বলেন, কোরবানির কারণে দু’দিন ধরে সবাই মাংস খাচ্ছে। মাংসের পাশাপাশি চিংড়ির ভুনা অনেকে পছন্দ করেন। এ কারণে চিংড়ির চাহিদা বেড়েছে। আর চাহিদা বাড়লে দাম একটু বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

মাংসের বাজারে গিয়ে গরু ও খাসির মাংসের দোকান বন্ধ দেখা গেছে। তবে কিছু মুরগির দোকান খোলা পাওয়া যায়। এ সব দোকানগুলোতে আগের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।

মালিবাগের মুরগি ব্যবসায়ী মো. সবুজ বলেন, এখন সবার বাসায় গরু অথবা খাসির মাংস আছে। স্বাভাবিকভাবেই এখন বাজারে গরু ও খাসির মাংসের চাহিদা থাকবে না। এ কারণে গরু ও খাসির মাংসের দোকান বন্ধ।

তিনি বলেন, আমাদের মুরগি ঈদের আগে কেনা। যদি কিছু বিক্রি হয় এই আশায় দোকান খুলেছি। তবে বিক্রি নেই। মাঝে মধ্যে দুই-একজন ক্রেতা আসছেন। বাজার স্বাভাবিক হতে আর এক সপ্তাহ লাগবে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test