E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি, রানার অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে মামলা

২০২২ মে ১১ ১৮:০৫:০৫
২১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি, রানার অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রানার অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার পণ্য গোপনে বিক্রির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই গোপন বিক্রির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২১ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

রানার অটোমোবাইলস একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। যার অধীনে একটি কারখানা, একটি বাণিজ্যিক আমদানিকারক এবং একাধিক শোরুম রয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারক হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল এবং থ্রি-হুইলার আমদানি করে কোনরূপ পরিবর্তন না করে গ্রাহকের নিকট সরবরাহ করে থাকে। কারখানা হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল সিকেডি অবস্থায় আমদানি করে তা সংযোজন করে সরবরাহ করে। কারখানা থেকে করপোরেট গ্রাহক, ডিলার এবং নিজস্ব শোরুম- এই তিন ধরনের গ্রাহকের নিকট বিক্রয় করা হয়।

ড. মইনুল খান জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে গত ৩০ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গোয়েন্দা দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

তিনি বলেন, পরিদর্শনের শুরুতে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করলে প্রতিষ্ঠানের সিএফও শনদ দত্ত ভ্যাট কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মূসক ফাঁকির আলামত থাকায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত কিছু বাণিজ্যিক ও মূসক সংশ্লিষ্ট দলিলাদি জব্দ করা হয়। এসব তথ্য ভ্যাট দলিলাদির সঙ্গে ব্যাপক অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়।

তদন্ত অনুসারে, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার ৮৩৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ৮১৭ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্নে সর্বমোট এক হাজার ৭৬৪ কোটি দুই লাখ ৩৩ হাজার ১৫৬ টাকা বিক্রয় হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ টাকা।

ড. মইনুল খান আরও বলেন, তদন্ত অনুসারে এক্ষেত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৭৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার ৩৯৫ টাকা সুদসহ সর্বমোট ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭১ টাকা প্রযোজ্য।

তদন্তে পরিহার করা ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সেবা প্রদানের বিপরীতে মূসক চালান যথাযথভাবে প্রদান করছে কি না তা সংশ্লিষ্ট মূসক সার্কেল ও বিভাগীয় অফিস হতে তদারকি জোরদার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/মে ১১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test