E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রিজার্ভ আরও নিম্নমুখী

২০২২ জুন ১৪ ২২:৩৬:২৭
রিজার্ভ আরও নিম্নমুখী

স্টাফ রিপোর্টার : মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। গতকাল সোমবার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।

এর একদিন পর মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ছয় কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় (রিজার্ভ) এখন ৪১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যা দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ২০২০ সালের নভেম্বরের পর এটিই সর্বনিম্ন। ওই বছরের (২০২০ সালের) নভেম্বরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, ব্যাংকগুলোর হাতে দাম ছেড়ে দেওয়ার পর বেড়েই চলেছে ডলারের দাম, বিপরীতে মান হারাচ্ছে দেশীয় মুদ্রা টাকা। গত এক মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার মান প্রায় ৫ টাকা ৮০ পয়সা কমেছে। আর চলতি বছরে শুধু ডলারের বিপরীতে অন্তত ১২ বার মান হারিয়েছে টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, করোনার পরে আমদানি ব্যয় অধিক হারে বেড়ে গেছে। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বাড়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। বাড়তি চাহিদা সামালাতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করছে না। ব্যাংকগুলো যে দামে লেনদেন করে, তার মধ্যে একটি দর বিবেচনায় নেওয়া হয়। বাজারের চাহিদা মেটাতে সোমবার ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং আজ (মঙ্গলবার) ছয় কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এর ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমে এসেছে। তবে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়লে রিজার্ভ আবারও বাড়বে বলে জানান তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গতকাল সোমবার ডলারের বিপরীতে টাকার দাম আরও ৫০ পয়সা কমিয়ে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার দিনের শুরুতে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম ১৩ পয়সা বেড়ে আন্তঃব্যাংকে প্রতি এক ডলার ৯২ টাকা ৩৭ পয়সা বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পর আবারও আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম ৪৩ পয়সা বেড়ে ৯২ টাকা ৮০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করা হয়।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের (২০২১ সালের) আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল।

পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আরও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা।

২৯ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপরও বাজার স্থিতিশীল হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলার ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়।

আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। যদিও ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল।

সোমবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৯৪ থেকে ৯৫ টাকার মধ্যে কেনা-বেচা করছে। আর খোলা বাজারে প্রতি ডলারের মূল্য রাখা হয় ৯৯ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আর মঙ্গলবার (১৪ জুন) আন্তঃব্যাংক ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯২ টাকা ৮০ পয়সা।

(ওএস/এএস/জুন ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test