E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রিজার্ভ কত কমলে বিপদ সংকেত!

২০২৩ মে ২০ ১২:২২:৫৯
রিজার্ভ কত কমলে বিপদ সংকেত!

স্টাফ রিপোর্টার : সাম্প্রতিক সময়ে রিজার্ভ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। বিষয়টি গড়িয়েছে রাজনীতির মাঠেও। কেউ বলছেন টাকা পাচারের কারণে রিজার্ভ কমেছে। কেউ আবার বলছেন অর্থনৈতিক খাতে অনিয়মের ফল এই রিজার্ভ সংকট। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ অর্থনৈতিক বিষয়ে এতদিন সাধারণ মানুষের তেমন আগ্রহ ছিল না। তবে সম্প্রতি রিজার্ভ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার কারণেই এ বিষয়ে জানার আগ্রহ বেড়েছে জনমনে। অনেকেরই এখন প্রশ্ন, রিজার্ভ কত কমলে তা দেশের জন্য বিপদ সংকেত দেয়?

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বুধবার দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ ৩ হাজার ৩২ কোটি (৩০.৩২ বিলিয়ন) ডলার হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে এর ৫০০ কোটি ডলার রিজার্ভ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নয়। সে হিসাবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হবে ২৫ বিলিয়ন ডলার বা তার কাছাকাছি।

এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধে বড় চাপে পড়েছিল রিজার্ভ। আকুর দায় ১১৮ কোটি ডরার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।

তবে এখন অনেকেরই প্রশ্ন, কোনো দেশের জন্য কী পরিমাণ রিজার্ভ থাকা দরকার বা কী পরিমাণ রিজার্ভ থাকলে সেটাকে বিপজ্জনক বলা যাবে না। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊধ্র্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা বলেন, কোনো দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভ থাকলে সেটা কোনো বিপদ সংকেত দেয় না। তবে আমাদের রিজার্ভ কম ছিল, এখন বাড়ছে। একই সঙ্গে আমদানির দায়ও কমছে। বর্তমানে আমাদের যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে ছয় মাসের আমদানির দায় মেটানো সম্ভব।

তথ্যমতে, আমাদের আমদানির দায় মেটাতে প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন। সে হিসাবে আমাদের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের বেশি সময়ের আমদানির দায় মেটানো সম্ভব। ফলে দেশের বর্তমান রিজার্ভকে কোনো অবস্থায় খারাপ অবস্থা বলা যাবে না, এমনটিই বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

রিজার্ভের এ অবস্থায় আশা জাগাচ্ছে রেমিট্যান্স। চলতি মে মাসের প্রথম ১২ দিনে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে আসছে প্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দুই বিলিয়নের মাইলফলকে যাবে রেমিট্যান্স।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, আমাদের এখন (চলতি মাস) রেমিট্যান্সের প্রবাহ ভালো। আগামীতে কোরবানির ঈদ রয়েছে, এক্ষেত্রে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। আর রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে দেশের রিজার্ভও বেড়ে যাবে এমনটাই আশা তাদের।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে টানা ছয় মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায় রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে।

এছাড়া চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। এরপর স্বাধীনতার মাস মার্চে এসেছে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স। সবশেষ মাস এপ্রিলে রেমিট্যান্স আসে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

(ওএস/এএস/মে ২০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test