E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা

দেশের ২৪ জেলার প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করবে প্রাণ-আরএফএল

২০২৩ মে ৩১ ১৫:৪৩:১৮
দেশের ২৪ জেলার প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করবে প্রাণ-আরএফএল

স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস সামনে রেখে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জনমানুষকে সচেতন করতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ক্যাম্পেইন করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ২৪টি জেলার ব্যবহৃত প্লাস্টিক সংগ্রহে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ নামে দিনব্যাপী এ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে।

সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এ ক্যাম্পেইন চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল। আগামী ২ জুন (শুক্রবার) রাজধানীর হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

বুধবার (৩১ মে) রাজধানীর বাড্ডায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ ক্যাম্পেইনের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা ও আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএন পাল।

ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে একই দিন সারাদেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা বিশেষ করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক পরিষ্কার করা হবে এবং মানুষ যেন যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, প্লাস্টিক বর্তমান দুনিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল ব্যবহৃত একটি উপাদান। প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশগুলোর একটি। তবে, প্লাস্টিকের কাঁচামাল পচনশীল না হওয়ায় এটি পরিবেশ দূষণের অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে, সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে পরিবেশকে এ দূষণের হাত থেকে অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতে দেশে দেশে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিক রিসাইকেল ও ব্যবস্থাপনার ওপর। কারণ প্লাস্টিক রিসাইকেল ও ব্যবস্থাপনা পরিবেশ দূষণরোধে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় গৃহস্থালি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে।

আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএন পাল বলেন, ২০১২ সালে প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় গ্রুপটি। প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত প্রাণ-আরএফএল বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। প্রতি বছর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকসহ প্রায় ৩২ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করে বানাচ্ছে শতাধিক পণ্য, যা কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করলে আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে ৪৫০ কোটি টাকার বেশি।

তিনি আরও বলেন, রিসাইক্লিংয়ের একটি বড় খাত হতে পারে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্যাকেজিং, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিইটি বোতল (অয়েল ফিলিং)। পিইটি বোতল এবং পিইটি জাতীয় প্যাকেজিংয়ের ব্যাপক ব্যবহার হয় বাংলাদেশে। এ ভাবনা থেকে প্রাণ-আরএফএল এ খাতে আগামী দুই বছরের মধ্যে পিইটি বোতলের রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে ফেব্রিক পর্যন্ত করা যাবে। পিইটি বোতলের রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট করার জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে গ্রুপটির।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ২০৩০ সালের মধ্যে ভার্জিন প্লাস্টিকের ব্যবহার এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা এবং রিসাইক্লিং করা সম্ভব এমন প্যাকেজিংয়ে অধিক গুরুত্ব দেবে। সেইসঙ্গে প্রায় শতাধিক প্লাস্টিক সংগ্রহ কেন্দ্রের মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদনের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে প্রাণ-আরএফএলের।

দেশের সব জেলায় নিয়মিত ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে। মানুষ যাতে ব্যবহার করা প্লাস্টিক বর্জ্য যেখানে-সেখানে না ফেলে একটি নির্ধারিত স্থানে ফেললে যা সহজে সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও নদ-নদীতে ফেলা প্লাস্টিক বর্জ্যরে কারণে কীভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে তার একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়া কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনায় সবার সহযোগিতা চেয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও আহসান খান চৌধুরীর একটি ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।

এসময় টেল প্লাস্টিক এর নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল হাসান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব করপোরেট ব্র্যান্ড নুরুল আফসার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/মে ৩১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test