E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান বাড়ানো দরকার’

২০২৩ জুন ০৪ ১৭:০৭:৩৮
‘অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান বাড়ানো দরকার’

স্টাফ রিপোর্টার : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ব্যবধান অবশ্যই বাড়ানো দরকার বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হবে বলে মনে করেন তিনি।

রবিবার (৪ জুন) ‘বাজেট ২০২৩-২৪: প্রেক্ষিত পুঁজিবাজার’ শীর্ষক সেমিনারে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনার আয়োজন করে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ)।

সিএমজেএফ অডিটরিয়ামে সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও এবং সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান বক্তব্য রাখেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, লভ্যাংশে দ্বৈত কর প্রত্যাহারের যে দাবি করা হয়েছে, তা গভীরভাবে দেখতে হবে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউসগুলোর এআইটি নিয়ে তোলা দাবির বিষয়টি আগেও শুনেছি। এটি হয়তো চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাই হোক আজ যেসব দাবি করা হয়েছে, সেগুলো আমি সঠিক জায়গায় পাঠিয়ে দেবো।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, বিশ্বের বড় দেশগুলোতে শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেখানে আমাদের দেশে এটাকে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। কোণঠাসা হয়ে আছে। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে অন্যতম মাধ্যম হওয়ার কথা দেশের শেয়ারবাজার। কিন্তু আমরা সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে আছি। বিশ্বের সব দেশ শেয়ারবাজার দিয়ে কাঁপিয়ে তুলছে, আমাদের কেন যেন সেই জায়গাটা দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।

শেয়ারবাজার নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমি বিশ্বাস করি শেয়ারবাজারকে কোণঠাসা করে রাখা যাবে না, কোণঠাসা থাকবে না। কারণ এটার সঙ্গে দেশের সবস্থরের মানুষ আছে। এছাড়াও এর মধ্যে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে।

সিএসই’র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, শেয়ারবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা তৈরি না হলে দেশের অর্থনীতিকে কখনোই স্ট্যাবল একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বন্ড মার্কেটের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। আমাদের দেশের শিল্পায়নে এখন পর্যন্ত যে বিনিয়োগুলো হয়েছে তার সিংহভাগই ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে। এটা শেয়ারবাজারের মাধ্যমে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। আমাদের দেশে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু দেশে ব্যবসা করা সব বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আসার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই বাধ্যতামূলক থাকা উচিত ছিল। এসময় তিনি এসব বড় কোম্পানিকে বাজারে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার জোর আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ব্যাংকনির্ভর হয়ে উন্নত দেশ হওয়া যাবে না। বিশ্বের সব দেশই শেয়ারবাজারকে সামনে রেখে উন্নত হয়েছে। আমাদেরকেও শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। এই বাজারকে এগিয়ে নিতে লভ্যাংশে দ্বৈত কর প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়া তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান বাড়াতে হবে। এটা কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করা দরকার। এতে করে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসবে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো খুবই দুর্বল। এগুলো ব্যাংকিং কার্যক্রম করে না। কিন্তু মার্চেন্ট ব্যাংকের নাম হওয়ায় ব্যাংকের মতো সাড়ে ৩৭ শতাংশ কর দিতে হয়। এটা সমাধান করা দরকার।

ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, বাইরের দেশগুলোতে যেখানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানির মূল্যায়ন বাড়ে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখানে আমাদের দেশের কেম্পানিগুলো এখানে তালিকাভূক্ত হওয়াকে বোঝা মনে করছে। আমাদের এ অবস্থানটা ঠিক করতে হলে সরকারকে কিছুটা প্রণোদনা দিতে হবে। দেশের সব ছোট ছোট বিনিয়োগগুলো এক ফ্রেমে আনতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম হতে পারে শেয়ারবাজার। এমন একটি পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটের জন্য আমরা নতুন কিছুই পেলাম না। এটা খুবই হতাশাজনক।

(ওএস/এসপি/জুন ০৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test