E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে কয়লার অভাবে ৭৩টি ইট ভাটা বন্ধ

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ০২ ১৮:৫১:১৩
নাটোরে কয়লার অভাবে ৭৩টি ইট ভাটা বন্ধ

নাটোর প্রতিনিধি : চলমান রাজনৈতিক সংকট ও আমদানী নির্ভর কয়লার অভাবে ৯৮টি ইটভাটার মধ্যে ৭৩টি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভাটা মালিকদের বিনিয়োগ করা প্রায় ১৫০ কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার পাশাপাশি ৩০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বেকার  হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতি নাটোর জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে এবছরের ভ্যাট মওকুফ ও দেশীয় খনি থেকে সরাসরি কয়লা সরবরাহের দাবি জানিয়েছে।

স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম জানান, নাটোরের ৯৮টি ইটভাটার অধিকাংশ এবার ইট পুড়ানো শুরু করতেই পারেনি। যে কয়েকটি চালু হয়েছিল তাও জ্বালানী কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ৭৩টি ভাটা বন্ধ রয়েছে। আরও কয়েকটি বন্ধ হওয়ার পথে। তিনি জানান, ভারত কয়লা রপ্তানী সীমিত করার ফলে বর্তমানে প্রতি টন কয়লা কিনতে হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা দরে। দিনাজপুরের বড়-পুকুরিয়া কয়লাখনি হতে গতবছর ৯ হাজার ২০০ টাকা টন কয়লা বিক্রি হলেও সরকার এবার তা বাড়িয়ে ১৩ হাজর ৭০০ টাকা টন নির্ধারণ করেছে। দালালদের অত্যাচারে ওই দরেও ভাটার মালিকরা সরাসরি কয়লা কিনতে পারছেন না। এ অবস্থায় ইটের দর আগের চেয়ে প্রতি হাজারে প্রায় দুই হাজার টাকা বাড়িয়ে মালিকদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে ইটের দাম আর বাড়ানোও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ইট তৈরী বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এছাড়া সরকার প্রতি ইটভাটার ওপর নূন্যতম দুই লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা ভ্যাট আরোপ করেছে। ভাটা বন্ধ থাকলেও এটা পরিশোধ করতে হবে। তাই ইট প্রস্তুত করলেও লোকসান হচ্ছে, না করলেও লোকসান হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাটোরে প্রায় ১ লাখ টন কয়লার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু চাহিদা মোতাবেক কয়লা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ইট ভাটা মালিকদের ঠিকমত কয়লা সরবরাহ করা হচ্ছে না। যেটুকু সরবরাহ করা হচ্ছে, তা আবার প্রচুর পরিমানে পানি মিশ্রিত কয়লা নিতে বাধ্য করা হয় এবং প্রতি টনে অলিখিত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এতে ইট ভাটা মালিকদের মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সমিতির সভাপতি আরও জানান, নাটোরের ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে এই ব্যবসায় ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়া ইট প্রস্তুতের জন্য প্রতিটি ভাটার মালিক শ্রমিক সরদারদের আগাম ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে রেখেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তাঁরা এ টাকা ফেরত নিতেও পারছেন না, ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া এ টাকা ফেলেও রাখতে পারছেন না। ভাটা বন্ধ থাকায় এখানকার প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তারাও জামানতের টাকা মাথায় নিয়ে অন্যত্র কাজে যোগ দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় ইট প্রস্তুতকারকরা সরকারের কাছে এবছরের ভ্যাট মওকুফ দাবি করেছেন এবং দ্রুত ন্যায্যমূল্যে তাদের কয়লা সরবরাহ করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম রমজান, সাবেক সভাপতি গোলাম সারোয়ার, আলহাজ্ব সুলতান আহম্মেদ, সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিল্টন, খলিলুর রহমানসহ সকল ইটাভাটা মালিকগণ।

(এমআর/এএস/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test