E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বছরে সাড়ে ১১ লাখ কোটি টাকার মজুরি হারান শ্রমিকরা

২০১৪ মে ২১ ২১:৩৯:২০
বছরে সাড়ে ১১ লাখ কোটি টাকার মজুরি হারান শ্রমিকরা

নিউজ ডেস্ক : শ্রম শোষণের মাধ্যমে মালিকপক্ষ বিশ্বব্যাপী ১৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বা সাড়ে এগারো লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রতি বছর ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ মালিক পক্ষের নিষ্পেষণেরও শিকার হচ্ছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আইএলও জানিয়েছে এসব নিপীড়িত মানুষের অধিকাংশই অভিবাসী শ্রমিক ও আদিবাসী। খবর বিবিসির।

বিশ্বব্যাপী শ্রম শোষণের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে আইএলও নিজেই আতঙ্কিত হয়েছে আধুনিক দাসত্বের বাস্তব রূপ দেখে। সংস্থাটি জানিয়েছে, শ্রম শোষণের মাধ্যমে লোপাটকৃত অর্থের পরিমাণ পূর্বের সব অনুমানকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। এইসব অর্থের ছিটফোঁটাও যায় না নিপীড়িত শ্রমিকদের পকেটে। এমনকি কর ফাঁকির মাধ্যমে শ্রম শোষকরা সরকারের চোখ এড়িয়ে যান।

আইএলও জানিয়েছে, এইসব অর্থের সবচেয়ে বড় অংশ লোপাট হয় এশিয়া মহাদেশে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার মালিক পক্ষ শ্রমিকদের শোষণের মাধ্যমে আয় করেন এবং এশিয়ার বাকি অঞ্চলে এর পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার। বাকি মহাদেশগুলোর মধ্যে আফ্রিকাতে ১৮ শতাংশ ও লাতিন আমেরিকায় ১০ শতাংশ অর্থ মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ঠকানোর মাধ্যমে আয় করে।

আইএলও আরও জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী এই শোষকরা এতটাইও শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলাটাই শ্রমিকের জন্য মরণের সমান। যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ এই আধুনিক যুগেও দাসত্বের জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে, যার মধ্যে ১ কোটি ১৪ লাখই নারী শ্রমিক।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৯ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার যৌনকর্মীদের শোষণের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও নির্মাণ, উৎপাদন ও খনি খাতে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ঠকিয়ে ৩ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার লোপাট করে। কৃষি খাতে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার ও গাহর্স্ত্য খাতে ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার মজুরি বঞ্চিত হয় শ্রমিকরা। সব মিলিয়ে বাৎসরিক হিসাবে শোষণের এই অংক ১৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে এসে ঠেকে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, শোষণের দিকে শীর্ষে আছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ও একক ব্যক্তি। এই সব প্রতিষ্ঠানগুলো ও ব্যক্তিদের দ্বারা বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ শোষণের শিকার হয়।

বিশ্বব্যাপী এই শোষণ রুখতে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার বলে মনে করছে আইএলও। সংস্থাটির মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, আমরা যদি ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই, তাহলে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই জন্য আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সাথে সাথে নিষ্পেষিত শ্রমিকদের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এর জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের পাশাপাশি শ্রমিকদের শিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

(ওএস/এস/মে ২১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test