E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাকার বিপরীতে ভারতীয় রুপির রেকর্ড মূল্যপতন

২০১৫ আগস্ট ২৬ ২১:৪৭:৫২
টাকার বিপরীতে ভারতীয় রুপির রেকর্ড মূল্যপতন

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ভারতীয় রুপির এ সপ্তাহে রেকর্ড মূল্যপতন হয়েছে। সোমবার একটা পর্যায়ে ১০০ রুপির দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১১৫ টাকার সামান্য বেশি। দুনিয়াময় বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে যে উথালপাথাল চলছে তাতে বাংলাদেশি টাকা ডলারের বিপরীতে বেশি ‘রেজিলিয়েন্স’ বা দৃঢ়তা দেখাতে পেরেছে বলেই রুপির তুলনায় তার দর বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা বজায় থাকলে বাংলাদেশে ভারতের রফতানি আরও বাড়বে– অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে যারা পর্যটন বা চিকিৎসার জন্য ভারতে আসেন সুবিধা হবে তাদের। এ সপ্তাহে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দাম একটা সময় পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে গিয়েছিল, অথচ সেই একই সময়ে বাংলাদেশি টাকার পতন হয়েছে যৎসামান্য।

এর ফলে রুপির বিপরীতে টাকার দাম এক লাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে- আর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও তার সরাসরি প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে দিল্লি-ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক ইকরিয়ের, তার গবেষক ড: অর্পিতা মুখার্জী অবশ্য বলছিলেন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যটা ডলারে হয় বলেই রুপির পতনের প্রভাবটা সীমিত হবে।

তবে সেই সঙ্গেই তিনি যোগ করছেন, রুপির দাম কমায় রফতানিকারী হিসেবে ভারতের ‘কমপিটিটিভনেস’ কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু চট করে সেটার সুফল হয়তো বোঝা যাবে না– কারণ এই ধরনের আমদানি বা রফতানির পরিকল্পনাটা হয় অনেক আগে থেকে– অর্ডার ডেলিভারির ছ'মাস আগেই হয়তো দুপক্ষের মধ্যে সইসাবুদ সারা হয়ে যায়।

তবে বাংলাদেশে বহু বছর ধরে নানা কৃষিপণ্য ও ভোজ্য তেল রফতানি করে আসছেন কলকাতার ব্যবসায়ী দেবাশিস সাহা, তিনি বলছিলেন রুপির দাম কমায় তিনি রফতানিকারী হিসেবে এখন অনেক কম দাম কোট করতে পারবেন। কিন্তু ভারত থেকে বাংলাদেশে রফতানি বাড়বেই–এ কথাটা জোর দিয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না, কারণ শুধু ডলারের দাম ছাড়াও আরও বহু ফ্যাক্টর এই ব্যবসাকে প্রভাবিত করে।

পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কাস্টমস এজেন্ট পঙ্কজ রায় যেমন মনে করেন রুপির দাম কমায় ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সাময়িক লাভ হতে পারে, তবে তাদের আসল সমস্যা অন্য জায়গায় রয়েই যাচ্ছে। তিনি বলছিলেন, ‘পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দরে একটা মালবাহী ট্রাক যখন পণ্য খালাস করতে না-পেরে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকে আর রফতানিকারীকে রোজ দেড়-দু'হাজার টাকা করে গচ্চা দিতে হয় তার সেই ক্ষতির তুলনায় এই ডলারের বিপরীতে লাভটা আসলে অতি সামান্য!’

তবে বাংলাদেশ থেকে যারা ডাক্তার দেখাতে, অস্ত্রোপচার করতে, নেহাত তাজমহল দেখতে বা আজমির শরীফে তীর্থ করতে ভারতে আসবেন তাদের জন্য এটা বড় সুখবর– কারণ টাকা বদলানোর পর তাদের হাতে নগদ রুপি এখন অনেক বেশি আসবে। ঠিক দুবছর আগে ২০১৩'র আগস্টেও অনেকটা একই রকমভাবে রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার দাম বেড়ে গিয়েছিল হু হু করে।

কিন্তু সেই প্রক্রিয়া বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, এখন ২০১৫'তে এসে রুপি-টাকার বিনিময়হার কোথায় এসে স্টেবল বা স্থিতিশীল হয় তার ওপর অনেকটা নির্ভর করছে দু'দেশের বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতির ওপর।

(ওএস/পি/অাগস্ট ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test