E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সুখী ও সমৃদ্ধশীল দেশ গড়তে করের বিকল্প নেই’

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৮:১৯:৫২
‘সুখী ও সমৃদ্ধশীল দেশ গড়তে করের বিকল্প নেই’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সুখী, সমৃদ্ধশীল দেশ গড়তে করের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।  এজন্য করের আওতা বাড়ানো প্রয়োজন বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা করের আওতা না বাড়িয়ে একই ব্যক্তি থেকে একাধিকবার কর আদায় করছি। এতে করদাতাদের মধ্যে বিরক্তি ও ভীতি কাজ করছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে সরকারি কার্যভবন-২ সংলগ্ন মাঠে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় কর দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২৭ জন করদাতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের দেশে ১৬ কোটি মানুষের বাস। সরকারি হিসাব মতে, ১৬ কোটি মানুষ ব্যবসা করে। এর মধ্যে ৪ কোটি মানুষ কর দিতে চায়। রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়াতে না পারায় আগ্রহী করদাতাদের কাছ থেকে কর আহরণ সম্ভব হচ্ছেনা। যদি ২ কোটি মানুষের কাছ থেকেও কর আদায় করা যেত, তাহলে রাজস্ব খাত আরও গতিশীল হতো, রাজস্ব খাতে আয় বেশি হতো।

‘কিন্তু তা না করে এক ব্যক্তিকে দু’তিনবার জবাই করা হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়কে কর মেলার মাধ্যমে করের আওতায় আনা হয়েছে। এটা ভাল। কিন্তু করদাতাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, করের আওতা ও পরিধি বাড়াতে হবে। তা না হলে দেশ পিছিয়ে যাবে।

কর ভবন নিমার্ণের জন্য আগ্রাবাদে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগ্রাবাদে ৪০ তলা কর ভবন নির্মাণ করা হবে। নিমার্ণ হলে এটি হবে চট্টগ্রামের সর্ব্বোচ ভবন।

এছাড়া লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নিমার্ণের জন্য একটি চীনা প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

রাষ্ট্রের সেবা বাড়ানোর জন্য উন্নয়নের জন্য কর দিতে হবে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, কর দেওয়া সম্মানের ও গৌরবের। কর আদায়ে সচেতনতা আরও বাড়ানো দরকার। দেশের উন্নয়নে করের আওতা ও পরিধি বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, কর আদায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৮ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলার আয়োজন করা হয়। কর আদায়ের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, স্বেচ্ছায় করদাতার সংখ্যা কম। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ১২ লাখ মানুষ স্বেচ্ছায় কর দিয়ে থাকেন। এটা আরও বাড়ানো দরকার।

কর পরিশোধে মানুষের ভোগান্তি কমাতে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল ব্যবস্থা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১ বছরের মধ্যে করদাতারা অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে কর পরিশোধ করতে পারবেন। এতে কর পরিশোধে হয়রানি কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, অনলাইন ব্যবস্থায় এক ব্যক্তি একাধিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকতে পারবেন না। ‍এখানে একাধিক ব্যবসা থাকলেও করদাতাকে এক প্রতিষ্ঠানের নামেই তার সব কাজ করতে হবে। এতে অনিয়ম, কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। দেশকে সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে নিতে হলে পরিপালন সংস্কৃতিতে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাজেটে আয়ের বড় অংশ রাজস্ব খাত থেকে আহরণের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকার বড় অংকের বাজেট করা হয়েছে। এ বাজেটের ২ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা আহরণ করা হবে রাজস্ব খাত থেকে। এর মধ্যে ১ কোটি ৮৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা আহরণ করা হবে রাজস্ব বিভাগ থেকে, আর ৬৫ হাজার কোটি টাকা আয়কর বিভাগ থেকে।

এজন্য সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কর আদায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তা না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।

আয়কর দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম কর আপীল কমিশনার কাজী ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল হক, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test