E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ এখন সময়ের দাবি’

২০১৭ জুলাই ২৬ ১২:৫৬:৫৩
‘বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ এখন সময়ের দাবি’

স্টাফ রিপোর্টার : ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট ৬১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের টাকা অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। এ বিপুলপরিমাণ অর্থের উল্লেখযোগ্য অর্থ পাচার হচ্ছে বিদেশে বিনিয়োগের জন্য। যা বৈধভাবে বিনিয়োগ করা হলে বাংলাদেশ কয়েকগুণ বেশি লাভবান হতো। এতে কাঙ্খিত উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন হতে পারত।

মঙ্গলবার ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আইবিএফবির কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইবিএফবি পরিচালক মো. মজিবুর রহমান ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার অপর পরিচালক এম এস সিদ্দিকী।

এতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য অজিত কুমার পাল, আইবিএফবির সভাপতি হাফিজুর রহমান খান, সহ সভাপতি হুমায়ুন রশিদ, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনুর রশিদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তারা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে বাজার সম্প্রসারণ ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন করতে পারেন। অলস অর্থ বিভিন্ন দেশে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

তিনি বলেন, আফ্রিকার অনেক দেশে প্রচুর জমি খালি আছে। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা সেখানে বিনিয়োগ করে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল তুলা চাষের মাধ্যমে সুতার যোগান নিশ্চিত করতে পারেন।

বিডার সদস্য ও বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান অজিত কুমার পাল বলেন, দেশের বেসরকারি খাত এখন অনেক শক্তিশালী, তারা সরকারি সহায়তা ছাড়াই চলতে পারে। কিন্তু স্বাধীনভাবে চলার জন্য এখনো সম্পূর্ণ পরিপক্ক হয়ে উঠেনি। এজন্য দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্য সরকার প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও প্রবিধান প্রণয়নে কাজ করছে। সুষ্ঠু নীতিমালার অভাবে দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়ুক তা আমার চাই না।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার ট্রেড কমিশনার কামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমৃদ্ধির পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে পারেন। কানাডায় বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে ভালো করেছেন বলে জানান তিনি বলেন।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় ট্রেড কমিশনার শিশির কোঠারি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি বিশেষ করে প্রাণ এবং রহিম আফরোজ ভারতে বিনিয়োগ করে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে তারা প্রতিযোগিতা করে বাজারে টিকে থাকতে সমর্থ হয়েছে এবং ব্যবসা পরিচালনালব্ধ জ্ঞান বাংলাদেশেও কাজে লাগাতে পারছে। এ দেশের উদ্যোক্তাদের ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি।

আইবিএফবি প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বৈধভাবে এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিলে তা নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বল্পমূল্যে দক্ষ জনশক্তি, জ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রভৃতি সুযোগ যেমন সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের বিপরীতে বর্ধিত পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং অবৈধভাবে মুদ্রা পাচার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের বহির্মুখী বিনিয়োগের সুযোগ দেশে ও দেশের বাইরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বিশাল প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। যা পক্ষান্তরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test