ব্যক্তিস্বার্থের রাজনীতি ও ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ
কবীর চৌধুরী তন্ময়
ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে-এটি স্বস্থির কথা, ইতিবাচক সিদ্ধন্ত। আবার নির্বাচনে না গিয়েও তাদের আর কোনো উপায় ছিলো না-এটিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা। কারণ, সংবিধান তাদের নির্বাচনে যেতে রীতিমত বাধ্য করেছে। অন্যথায়, বিশেষ করে বিএনপি রাজনীতি করার নৈতিক অধিকারটুকু হারিয়ে ফেলবে। নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে।
আরেকটি ব্যাপার আমি ব্যক্তিগতভাবে ইতিবাচক বলেই মনে করছি এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশনের এ ব্যাপারে আন্তরিকতা প্রতীয়মান-পুনঃতফসিল। যুক্ত-ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দাবি করেছিল নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার। আর এটি নির্বাচন কমিশন করেছে এবং নির্বাচনকালীর সরকারও এটিকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যে সংলাপ হয়েছে-এটিকে আমি ব্যক্তিস্বার্থ সংলাপ হিসেবে মনে করছি। এই যেমন, যুক্তফ্রন্ট থেকে মতানৈক্যের মাঝে জন্ম নেওয়া ঐক্যফ্রন্ট বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের রাজনীতি কার জন্য-এটি একটি প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ, ওইসব (নামে) হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কথায় কথায় বলে, দেশের মালিক জনগণ। তাহলে সহজ-সরল ভাষায় বলতে হয়, ‘জনাব, দয়া করে এই জনগণকেই ভাবতে দিন। কাকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে আর কাকে প্রত্যাখান করবে-এটিও তাদের উপর ছেড়েদিন’।
এইসব নেতাদের রাজনীতি কখনো দেশের াকংবা দেশের মানুষের জন্য ছিল বা আদৌ আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করতে পারছি না। আর তাদের বর্তমান কর্মকান্ডও আমার বিশ্বাসকে আরও মজবুত করতে সহায়তা করেছে। এই ধরুন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খুব সন্নিকটে হঠাৎ করে নিজেদের মতানৈক্যের মাঝে ঐক্য গড়ার উদ্দেশ্য কী হতে পারে? কার সাথে কার ঐক্য? আর এই ঐক্যে জগণের সমর্থন কতটুকু-এটিও একটি প্রশ্ন। কারণ, বিএনপির প্রতি মানুষের কী ধরনের চিন্তা ভাবনা এটি বিগত সময়ে দেখা গেছে। আবার তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে কতটুকু সম্মান শ্রদ্ধা করে-এটিও স্পষ্ট দেখা গেছে যখন এতিমের টাকার আত্মসাতের অভিযোগে আদালত কর্তৃক সাজায় কারাগারে পাঠানো হয়। আর জাতীয় ঐক্য বলতে কতিপয় জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিগত স্বার্থবাজ মানুষের মাঝে একটি ভাগভাটোয়ারার ঐক্য হতে পারে; এখানে দেশের সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া নিশ্চয়ই এটি জাতীয় ঐক্য হতে পারে না।
এখানে দেশের মানুষের নয়, রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থই ওইসব তথাকথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মুল উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছি।
এই ধরুন, আওয়ামী লীগের পরে বড় দল হিসেবে বিবেচনা করে বিএনপিকে। সারা দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মী আছে। নির্দিষ্ট ভোট আছে। তাই একদলের এক-নেতাগুলো বিএনপির উপর ভর করেছে। শুধু তাই নয়, একটা সময় যারা বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে ব্যঙ্গ করত; আজ তারাও খালেদা জিয়ার জন্য জীবন দিবে-এই ধরনের গলা ফাটানো বক্তব্য দিয়েছে। আইন অমান্য করে, বিচারবিভাগকে অসম্মান করে, জনগণের রক্ত বন্যা বইয়ে দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন বলেও ‘ইনশাআলøাহ’ বলেছে।
আবার বিএনপিও এইসব জনবিচ্ছিন্ন এক দলের এক-নেতাখ্যাত ব্যক্তিদের নিজেদের দলে টেনে এনেছেন। কারণ, বিএনপির রাজনৈতিক নেতৃত্বশূণ্য চলছে। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করার অভিযোগে আদালত কর্তৃক সাজায় কারাগারে আছেন। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও টাকা পাচারের অভিযোগে আদালতের সাজা মাথায় নিয়ে বিদেশ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর ভদ্রলোক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পারলে বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মহাসচিব পদ থেকে টেনেহিছড়ে নামিয়ে মাটিতে আছাড় দেয়।
এখন ডক্টর কামাল হোসেন আইন পেশায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি কুড়িয়েছে। সিমলা চুক্তির মাঝে আইনজীবী ডক্টর কামাল হোসেন তাঁর আইন ব্যবসার পরিপ্রেক্ষিতে কীভাবে দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে-এটিও বিএনপি অতীতে দেখেছে। আবার নিজ স্বার্থের কারণে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ থেকে কীভাবে বের হয়েছে, কীভাবে মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মনসুর, আ স ম রবরা আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানী করেছে-এটিও বিএনপির পর্যবেক্ষণে আছে। তাই বিএনপি খালেদা-তারেক জিয়ার নেতৃত্বশূণ্যে এইসব নেতাদের ব্যবহারের ছক এঁকেছে। কারণ বিএনপি নিজেও জানে, ওইসব নেতাদের ভোট না থাকলেও জোট আছে। আবার তাদের বড় বড় কথা বড় বড় মিডিয়ায় প্রথম পাতায় ছাপানো হয়। সেই সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গন তো আছেই...!
তবে মজার বিষয় হচ্ছে, লক্ষ্য করলে দেখবেন-জামায়াত ইসলামকে প্রকাশ্যে ঐক্যফ্রন্ট প্রত্যাখান করেনি। আর জামাত-শিবিরমুক্ত জোট করার কথায় যুক্তফ্রন্ট থেকে বের হয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। আরও লক্ষ্য করলে দেখবেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামাতের নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করায় ঐক্যফ্রন্টের কোনো নেতা কোনো কথা বলেনি। তারা সরকারকে ধন্যবাদ দিবে-এটির আশা করাও দুঃস্বপ্ন। কৌশলগত কারণে, জামাতকে পর্দার আড়ালে রেখেই ঐক্যফ্রন্টের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আর জামাতের প্রতিনিধি (অপ্রকাশিত বা অস্বীকৃত) ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন নারীর উপর কলঙ্ক লাগিয়ে নিজেই এখন কলঙ্কিত হয়ে কারাগারে।
তাই, প্রকাশ্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার বা স্লোগান ঐক্যফ্রন্টের কোনো কর্মসূচীতে ব্যবহার করছে না। তবে, ভিতরে ভিতরে জামাতের কোন কোন নেতাকে কোন কোন আসন থেকে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচিত করবে-এটির হিসেব নিকেশ চলছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যুক্ত-ঐক্যফ্রন্ট করতে পারে কারণ মুক্ত পরিবেশ আছে এবং এটি দেশের সকল জনগণ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাংবিধানিক অধিকার। আর এতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অভিনন্দন, শুভেচ্ছাও ছিল। প্রয়োজনে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের ব্যবস্থাও করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
কিন্তু এই সুযোগ গ্রহণে তারা কী করল? নবম সংস‘ নির্বাচনের পরেই তত্ত¡বধায়ক পদ্ধতি কলঙ্কিত-বিতর্কিত হওয়ায় বাতিল করল সর্বোচ্চ আদালত। তখনও তারা নানা রকমের রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই বিলপ্ত তত্ত¡বধায়ক সরকার পূনর্বহাল না করার অভিযোগ তুলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করল। আসলে তখন ইস্যুটা প্রকাশ্যে তত্ত¡বধায়ক সরকার থাকলেও মুলত ছিল জামাতের ইসলামের এজেন্ডা বাস্তবায়ন।
দশম সংসদ নির্বাচনও হয়েছে সংবিধান অনুযায়ী। একাদশ সংসদ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে একই ধারাবাহিকতায়। এটা নবম সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই আলোচিত হয়ে আসছে। তাহলে নতুন করে এই পদ্ধতি বা কলঙ্কিত তত্ত¡বধায়ক পদ্ধতির মতন অনির্বাচিত মানুষদের উপদেষ্ঠা করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে এইসব নেতারা মুলত কী এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রে নেমেছে?
যুক্ত-ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছে সরকারের সাথে সংলাপ করতে চায়। কখনো পাঁচ ‘ফা আবার কখনো সাত দফা দাবি দাওয়া নিয়ে বিস্তর আলোচনার চিঠিও দিয়েছে।
পাঠক! এখানে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখবেন, এইসব নেতাগুলো বিগত পাঁচ বছর ধরে শেখ হাসিনা অবৈধ সরকার, শেখ হাসিনা ভোটারবিহীন সরকার ইত্যাদি ইত্যাদি বলে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। শুধু তাই নয়, যে ডক্টর কামাল হোসেন সংবিধান প্রণেতার অন্যতম সদস্য তিনিও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকে, নির্বাচিত সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে।
প্রকৃতির কী নির্মম জবাব, এই শেখ হাসিনার সাথেই সংলাপ করতে রীতিমত মরিয়া হয়ে উঠেছে আমাদের এইসব মিথ্যাচার করা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ! প্রকৃতির কী প্রতিশোধ, যে শেখ হাসিনাকে দেশ-বিদেশে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে, যে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড ছুড়ে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছে, মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতি ও নেতৃত্ব থেকে যে শেখ হাসিনাকে চিরতরে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছে-আজ সে শেখ হাসিনার দরজার সামনে!
শেখ হাসিনা শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিঁনি মানবতার ফেরিওয়ালা। মানুষ, মানবতাবোধ আর মানবকল্যাণকর নিজেস্ব চিন্তা-ভাবনা আর কর্মকান্ড দিয়ে তিঁনি বিশ্বের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ির গেইট থেকে দেশের শুধু একজন প্রধানমন্ত্রীই নয়, জাতির জনক কন্যা শেখ হাসিনাকে অপমান-অপদস্থ করে ফিরিয়ে দিলেও শেখ হাসিনা ঠিকই ফিরিয়ে দেননি। তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আপ্যায়ণ করেছেন। সবার কথা শোনেছেন এবং সংবিধানের মধ্যে থেকে যা যা করণীয়, তার সবই করার আশ্বাস দিয়েছেন।
শেখ হাসিনার মতন ব্যক্তিরাই ইতিহাস রচনা করেন। তাই শুধু আমন্ত্রণ জানিয়েই বসে থাকেনি, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই আলোচনা শুরু করেন। মন খুলে কথা বলা, প্রাণ খুলে হাসি আর প্রাণবন্তর রাজনৈতিক সংলাপ নতুন ইতিহাসের সংলাপ সৃষ্টি করেছে।
এই ধরনের সংলাপ আমরা অতীতেও দেখেছি। কোন পর্যায়ের নেতাদের মাঝে সংলাপ সীমাবদ্ধ ছিল-এটি দেশবাসী দেখেছে। শেখ হাসিনা সকল দলের, সকল মতের মানুষের সাথে কথা বলেছে, তাদের কথা শুনেছে। অবাক হলেও সত্য, এমন অনেক দল আছে, কিন্তু নেতা নেই। তারা কীভাবে সংলাপে অংশগ্রহণ করবে-এই আবেদনটুকুও করতে আমার ব্যক্তিগত অফিসে এসেছে। আমার পরামর্শ অনুযায়ী আবেদনও পাঠিয়েছে এবং তারা শেখ হাসিনার সাথে কথা বলেছে, শেখ হাসিনার কথাও শুনেছে।
আমি আগেই বলেছি, কতিপয় নেতারা যে ব্যক্তিস্বার্থের কারণে ঐক্যফ্রন্ট নামক জোট করেছে-এটি তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমেই প্রকাশিত। এইসব নেতারা ভেবেছে, সংলাপ শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ থেকেই কখনো ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করেনি। এমনকি বঙ্গবন্ধ্ওু নয়। শেখ হাসিনা সকল মতের, সকল ‘লের সাথে মত বিনিময় করেছে, সবার কথা শুনেছে। আর এই কারণেই কোনো কোনো ঐক্যফ্রন্টের নেতা বক্তব্য দিয়ে বলেছে, সংলাপকে গুরুত্বহীন করে তুলেছে।
প্রথমবার, দ্বিতীয়বার সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মুল এজেন্ডা কী ছিল? জনগণের আশা-আখাঙ্খার কী প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছে-এই হিসেব নিকেশ একেবারেই শুন্য। সবাই ছিল ব্যক্তিগত সমস্যা আর অবৈধভাবে ক্ষমতা যাওয়ার ফরমুলা।
ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সংলাপে প্রস্তাব করেন, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে এবং ওই সময়ে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা করে তার নেতৃত্বে আরও ১০ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন একটি সরকার গঠন করতে হবে।
শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ডক্টর কামাল হোসেনের কাছে তখন জানতে চান, সংবিধানের কোথাও কি এ ধরনের বিধান আছে? যদি সংবিধান পরিপন্থি এ ধরনের সরকার গঠন করা হয় এবং তাদের অধীনে নির্বাচন হয়, এরপর কেউ যদি উচ্চ আদালতে রিট করে এবং আদালত যদি ওই সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে, তখন কী হবে?
দুঃখজনক হলেও সত্য, শেখ হাসিনার এই প্রশ্নে উত্তর শুধু ঐক্যফ্রন্টের নেতারাই নয়, সংবিধান প্রণেতার অন্যতম সদস্য ডক্টর কামাল হোসেনও কিছু বলতে পারেনি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে দ্বিতীয় দাবি ছিল, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার। সংবিধানের ১২৩ (খ) প্রয়োগ করে, সংসদ ভাঙার ৯০ দিন পর নির্বাচনের দাবি উত্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে আবারও ডক্টর কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সংস‘ এখন নিষ্ক্রিয়। এখন সাংবিধানিক কোন বিধানে সংসদ ভাঙা যায়?’
শেখ হাসিনার এই প্রশ্নের উত্তরও ডক্টর কামালসহ ঐক্যফ্রন্টের কোনো নেতা দিতে পারেনি। তৃতীয় দাবি ছিল শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী থাকবে। কিন্তু ১০ সদস্যের একটি উপদেষ্টান্ডলী দেশ চালাবে। প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, এই উপদেষ্টামন্ডলী কারা ঠিক করবে? উত্তরে ডক্টর কামাল হোসেন বলেন, আমরা সবাই মিলে ঠিক করবো। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ডক্টর কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, আমাদের সংবিধানে কোথায় আছে এরকম উপদেষ্টাদের দিয়ে দেশ চালানো যায়?
সংবিধান প্রণেতা আইনপেশায় বিখ্যাত ডক্টর কামাল হোসেন এবারও শেখ হাসিনার প্রশ্নের কোনো জবাবা দিতে পারেননি বরং তিঁনি রীতিমত চুপচাপ বসে ছিলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, বেগম জিয়াকে যেন নির্বাচনের আগে জামিন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ডক্টর কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ কি একজন আটক ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারে?’ তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে?’
যিনি কথায় কথায় আইনের শাসন চায়, সংবিধান সম্মত গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র কাঠামো চায় সেই ডক্টর কামাল হোসেন এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং নিশ্চুপ থাকেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জানতে চান, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি দেওয়া সংবিধানের পরিপন্থী কিনা? এ ব্যাপারে সংবিধানের ব্যাখ্যা কী..?
এবারও ডক্টর কামাল হোসেন মাথা নিচু করেন থাকেন।
পাঠক! ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এই সংলাপে জনগণের পক্ষে কোন কথাটি ছিল-এটি আমি ব্যক্তিগতভাবে খুঁজে পাইনি। আর অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে-এটিও এই সংলাপের মধ্য থেকে উঠে এসেছে। সেই সাথে বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ-এর বাড়ীর সংকট, ডাক্তার জাফরুল্লাহর হাসাপাতালের জমির সংকট, মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্য মিডিয়াতে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে-এই ধরনের আচার-বিচার নিয়েই মুলত সংলাপের ব্যক্তিস্বার্থ এজেন্ড ছিল।
কিন্তু শেখ হাসিনা শুধু এইসব নেতাদের সাথেই কথা বলেননি, যারা সংলাপে যেতে ইচ্ছুক, যারা আবেদন করেছে-এঁদের প্রত্যেককে শেখ হাসিনা ডেকেছে এবং সবার শেষ কথাটুকু পর্যন্ত শুনেছে। কারণ, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে। সংবিধানকে ফলো করে।
এই সংলাপে জনগণের প্রত্যাশা ছিল, বিএনপি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে ক্ষমা চাইবে, দুঃখ প্রকাশ করবে। জনগণ আরও প্রত্যাশা করেছিল, খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর খবরে শান্তনা দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া কর্তৃক যে অপমান. অপদস্থ হয়েছিল-এটিও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে নিতে শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান করবে। আর সবচেয়ে বেশি কাঙ্খিত ছিল, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়ার মিথ্যা জন্মদিন পালন থেকে বেরিয়ে আসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করার অঙ্গীকার করবে।
কিন্তু এখানেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শুধু নিজ ব্যক্তিস্বার্থ আর অবৈধপথে কীভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠ হতে পারে সেই দিকেই তাদের সংলাপ করেছিল যা জনগণের আশা আঙ্খার প্রতিফলন হয়নি।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।
পাঠকের মতামত:
- মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কীভাবে থামাবেন?
- বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর উপহার ‘বাংলাদেশ’
- তারেকের জন্য বিএনপির ইফতার পার্টি, দুঃস্থদের সহায়তায় আওয়ামী লীগ
- উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে এবং দায়হীনতার দায়
- মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস আজ
- ‘পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে’
- ‘নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতায় বসানো সম্ভব নয়’
- কন্যা সন্তানের মা হলেন লিজা
- ‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ আর নেই
- হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে তানভীর-জেসমিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- নাগরপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
- ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে গাঁজা বাগান!
- ফরিদপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য এ কে আজাদ
- ‘স্বাস্থ্যখাতে এখন থেকে কথা কম, কাজ বেশি হবে’
- ঋণের অতিরিক্ত সুপারভিশন চার্জ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ
- চেন্নাইয়ের পথে উড়াল দিয়েছেন মুস্তাফিজ
- দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ৩ লাখ ফিলিস্তিনি
- খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ
- সুইডেনের রাজকন্যা এখন খুলনায়
- সমরেশ মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার পেলেন সেলিনা হোসেন
- বিএনপির তিন নেতার পদোন্নতি
- ম্যালেরিয়া নির্মূলে বান্দরবানে গবেষণা শুরু, দেওয়া হবে টিকা
- ইইউ’র পরিবেশ নীতির বিরুদ্ধে স্পেনে কৃষকদের বিক্ষোভ
- গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, ২০ ফিলিস্তিনি নিহত
- জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি
- সিলেটে সরকারি গাছ কাটার মামলা নিয়ে পুলিশের গড়িমসি
- মাইকে গান বাজিয়ে ১০-১৫ টাকায় লাউ বিক্রি
- 'জায়গা বরাদ্দ পেলেই ফরিদপুরকে স্পেশাল ইকোনমিক জোন হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করবো'
- সাতক্ষীরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করা স্ত্রীকে বাঁচিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
- টাঙ্গাইলের হাতে ভাজা মুড়ির কদর বেড়েছে সারাদেশে
- যশোর নিউ মার্কেটে স্বর্ণের বারসহ দুই যুবক আটক
- সুলভ মূল্যে মাছ-মাংস-ডিম, জনমনে স্বস্তি
- যে কারণে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- চুয়াডাঙ্গা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন
- কাপাসিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
- মামলা করায় বনবিভাগের কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি
- টাকার বিনিময়ে রেল কেটে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না : রেলমন্ত্রী
- ফরিদপুরে জেলা প্রশাসনের চারটি প্রকাশনা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- সাতক্ষীরার হতদরিদ্র সুজিত হালদারের লেখা চতুর্দশপদী কবিতা মন কেড়েছে মানুষের
- শ্রীমঙ্গলে মসজিদের নামের পানির পাম্প যুবলীগ নেতার বাড়িতে
- বাগেরহাটে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক
- বাগেরহাটে নাশকতা মামলায় যুবদলের ১৩ নেতাকর্মী কারাগারে
- সোনারগাঁয়ে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি, নিহত ৪
- পলাশবাড়ীতে দোকান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
- ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ৩২তম মিলিয়নিয়ার হলেন কুমিল্লার ভ্যানচালক হুমায়ুন
- ই-ভিসা প্রকল্প: বেশি খরচে বিদেশি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা
- মহম্মদপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আওয়ালের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
- ত্রিশালে ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আসামি ছিনতাই
- এক্সিম-পদ্মা একীভূত, যেভাবে চলবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ
- আলোচি আরবিটেটর প্রত্যাহার সংক্রান্ত আপিল হাইকোর্টে খারিজ
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !