E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শহীদ দৌলত-ফাগুনের আগুন লাগা মিছিলের রক্তস্নাত ছবি

২০১৯ ডিসেম্বর ০৫ ১৮:২৭:০০
শহীদ দৌলত-ফাগুনের আগুন লাগা মিছিলের রক্তস্নাত ছবি

মানিক বৈরাগী


মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সদ্যস্বাধীন একটি দেশ বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ অর্জনে রক্তের ঋণ গাণিতিক, জ্যামিতিক হিসাবে যারা অংক কষে স্বাধীনতার অর্থবহ, তাৎপর্য নিরুপন আধা-আধাঁরির শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পরিপাটি গবেষণা কক্ষে তাঁদের কাছে বাংলাদেশ, রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, সত্তরের নির্বাচন সর্বোপরি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ বস্তুগত অর্থে,অলৌকিক, পারলৌকিক অর্থে তাদের কলবে প্রবেশ করে নাই।

ভারত বর্ষের অপরাপর যে ক'টি রাষ্ট্র ঐ একি কায়দায় সন্ধ্যার আলো-আধাঁরির ইন্টরিয়ার ডিজানে পরিপাটি করে সাজানো গোল টেবিলে শরাবের পেয়ালা, মাথায় কয়েক ঢংয়ের টুপি, ইউরোপের দেশে বরফের আস্তরণ থেকে আত্মরক্ষার লম্বা লম্বা কোটের আদলে বানানো লং কোট পরে যারা সে দিন দেশ ভাগের মানচিত্র নিয়ে ঠুঁটে চুরুট, পাইপ টেনে শরাবের পেয়ালায় চুমুকে চুমুকে পাকিস্তান, ভারত, সিকিম, নেপাল,চাইনা, আসাম, ত্রিপুরার মানচিত্রে মার্কার পেন দিয়ে দাগ টানছিলেন, সেই অগাস্টের দিনে কলকাতা, পাঞ্জাব, সহ বেশ ক'টি স্বাধীন অঞ্চলে যমুনা,ঝীলম,ইরাবতী, সিন্দু সহ কত নদী রেলের বগির রক্তের ধারায় রঞ্জিত হয়েছিলো এপারওপার করতে করতে সেই অনুচ্চারিত হিসেবনিকেশ ও কত গল্প কবিতা উপন্যাসের পাতায় চিত্রিত হয়েছে। সেই সব চিত্রায়াণের জটিল গানিতিক হিসাব কোন গবেষক তুলে আনেনি।ঠিক একি ভাবে বাংলাদেশ ও তাই।

আমি যেটি বুঝি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ লড়াই কয়েক মাস, কয়েক বছর দিনক্ষণ মেপে যারা হিসেবে বসেন আমি তাদের সাথে সহমত, দ্বিমত, আলোচনা, সমালোচনা কিছুই করতে চাইনা।তাদের জন্য আমার করুণা মায়া দরদ হয়।

আমি মোটা মাথার আবেগী বিবেকি রক্ত মাংসের মানুষ বলেই বাঙালি বাঙলা বাংলাদেশের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। এই ইতিহাসের এক এক পর্যায়ে একটি মাইলস্টোন তৈরি হয়। ঠিক একিভাবে সেই বাঙ্গালির লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে শহীদ দৌলত দিবস ও একটি মাইলস্টোন। এই দৌলত খান কে বাঙালির কু বৈশিষ্ট্যের অংশ হিসাবে আমরা যে যার মতো করে ফায়দা লুটি, বিকৃত করি, আত্মস্বার্থে নিজেদের দখলে রাখি।

শহীদ নূর হোসেন যেমন একটি আন্দোলনের মাইলফলক, সেই নূর হোসেন দিবস কিন্তু একার কোন সংগঠনের একক সফলতা নয় বলে আমি মনে করি ও বিশ্বাস করি।হ্যা শহীদ নূর একটি রাজনৈতিক সত্বা আছে, আছে রাজনৈতিক দর্শন বিশ্বাস ঠিক তেমনি শহীদ দৌলত খানের ও রাজনৈতিক সত্বা ছিলো আছে থাকবে।

সেই সেদিনের মিছিলের আমিও শহীদ দৌলত খানের সারথি। আমি মিছিল গিয়েছিলাম সম্মিলিত রাজনৈতিক দর্শন, লড়াই সংগ্রামের অংশিদার হিসাবে। সেই সেদিনের মিছিলে শহীদ দৌলত খানের রাজনৈতিক দর্শন বিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী রাজনৈতিক সংগঠনের ছাত্রনেতা, কর্মীদের ও অংশগ্রহণ ছিলো। ভিন্ন ভিন্ন ব্যানার থেকে গন্তব্যে দিকে যাত্রা করলেও জিরো পয়েন্ট থেকে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম।

সেই সেদিনের চকরিয়া আজকের মতো ছিলোনা।ছিলো মার্কেটে মার্কেটে ইটের পাহাড়। হাতে গোনা কিছু দোকান, বাজার আর প্রধান সড়ক।

আমাদের জিরো পয়েন্ট ছিলো সেই ফাতেমা স্টোরে সামনের চত্বর। সেখানে সেদিন তিন জোটের প্রত্যেক ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক সংগঠন, জোট সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের লড়াকু নেতা কর্মীরা।

আমি তখন চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের (পাইলট হাই স্কুল) এর দশম শ্রেণীর ছাত্র।তখনকার সময়ে প্রতিটি ছাত্র সংগঠনের স্কুল ভিত্তিক শাকা কমিটি কাজ করতো।

তখন আমি যে সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করতাম তার নাম বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। শহীদ দৌলত খান ছিলো জাতিয় ছাত্রলীগ এর চকরিয়া কলেজ শাখা ও উপজেলা শাখার নেতা।

সেই মিছিলে অংশগ্রহণ কারি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মুজিববাদী ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগ, বাসদ ছাত্রলীগ, বাসদের আর এক অংশের সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ইউনাইটেড কমিউনিকেশন লীগের ছাত্র মৈত্রী (ছাত্র মৈত্রী এখন ওয়ার্কার্স পার্টি মেনন সমর্থিত ছাত্র সংগঠন) আর জাতিয়তাবাদী ছাত্রদল।

আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম,ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আমজাদ হোসেন।

বাকশালের সভাপতি ছিলেন এডভোকেট মমতাজ, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল কাদের শফি।তখনকার সময়ে সাংগঠনিক ভাবে বাকশালের তেমন জনভিত্তি না থাকলেও তাদের ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক প্রভাব কক্সবাজার জেলা ব্যাপি ঈর্ষনীয়।

আর আমরা ছিলাম খুব রাজনৈতিক সচেতন পরিবারের হাতে গোনা কয়েকজন। জাতিয় ছাত্রলীগ এর পর মুজিববাদী ছাত্রলীগ এর অবস্থান। আর আওয়ামীলীগ এর নেতাদের আবার রাজনৈতিক সামাজিক প্রভাবের কারনে মিছিল মিটিং সভা সমাবেশে অধিকাংশ জোট ভুক্ত সংগঠন গুলো আওয়ামীলীগের উপর নির্ভর শীল।

সেই সেদিনের মিছিল শুরু হয় ফাতেমা স্টোর থেকে। যে যার ব্যানারে জড়ো হই ফাতেমা স্টোরের সামনের চত্বরে।

মিছিল শুরু হলো সরওয়ার ভাই প্রথমে শ্লোগান ধরলেন, আমরা কন্ঠ মিলালাম।এভাবে একজন ক্লান্ত হলে অন্যজন শ্লোগানে শ্লোগানে মিছিল পরিচালনা করতো।

সেই মিছিলে রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে উল্লেখ্য নেতার উপস্থিতি ও লক্ষ্যনীয় ছিলো। আওয়ামীলীগের মধ্যে নুরুল আলম চেয়ারম্যান, এডভোকেট আমজাদ হোসেন,নুরুল কাদের বি কম,আমিনুল ইসলাম বিএসসি, ডুলাহাজারার কামাল হোসেন চেয়ারম্যান, মোক্তার আহমদ,আনোয়ার হোসেন বাঙালি ও তরুণ জননেতা এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী এত টুকু মনে পড়ে।

বাকশালের মধ্যে শফিকুল কাদের শফি ও মাস্টার আবুল হাসেম বি কম আমি যাদের কে প্রত্যক্ষ ভাবে চিনি তাদের নাম গুলোই আমার মনে পড়ছে।

ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কমরেড হাজী বশিরুল আলম,বাসদ (খালেক)কমরেড নুরুল আবছার,বাসদ (মাহবুব) ডাক্তার জামাল উদ্দিন, সাম্যবাদী দলের কমরেড আব্দু শুক্কুর,সিপিবি থেকে কমরেড জাফর আলম।

ছাত্রনেতাদের মধ্যে সরওয়ার আলম,জাহাঙ্গীর বুলবুল,রুস্তম শাহরিয়ার, নোমান(তার দুই ভাই)খানে আলম,নুরুল আবছার,বরুল আলম(আমরা বদরু ভাই ডাকতাম)মোহসীন বাবুল,আমিনুর রশিদ দুলাল সহ অসংখ্য ছাত্র কর্মী ছিলো জাতিয় ছাত্রলীগের,

দ্বিতীয় উপস্থিত লক্ষ্য করেছি বাংলাদেশের এডভোকেট লুৎফুল কবির,লম্বা আমিরু,কাইসার, মোহাম্মদ মুসা, এম আর চৌধুরী, জামাল উদ্দিন জয়নাল, ইয়াহিয়া খান কুতুবী, সাংবাদিক ফরিদুল মুস্তফা, ডুলাহাজারা থেকেও সাইফুল (চেয়ারম্যান সাইফু নয়) এর নেতৃত্বে বেশকিছু ছাত্রলীগ নেতা কর্মী মিছিলে অংশ নেন।

বাসদ ছাত্রফ্রন্ট থেকে বর্তমানে চট্রগ্রাম কলেজের অধ্যাপক রেজাউল করিম,চকরিয়া কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ আ ক ম গিয়াস উদ্দিন, করাইয়া ঘোনার মহিউদ্দিন (চকরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস প্রার্থী) আজম খলিফা,বাসদের মনির(মোটা মনির) এত টুকু নাম মনে পড়ে।

ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মালুমঘাটের আজিজুল হক,মোহাম্মদ বারেক, শিবু কান্তি দে,ফুটবলার সঞ্জয়,ভরামুহুরির দিপক চৌধুরী, সমির সিকদার (সমির এর বাড়ি বাশখালি)সাইফ উদ্দীন আহমদ মানিক।

ছাত্রমৈত্রী ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের থেকে কমরেড হাজী বশির, সুলতান (সুলতান এখন আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা পরিষদ মেম্বার) বিএনপি থেকে আমি যাকে চিনি একমাত্র আবুল হাসেম(বাশ হাসেম হিসাবে পরিচিত)তাকে দেখেছি,আর ছাত্রদল নেতা জকরিয়া,গিয়াস উদ্দিন (অনেকেই লুঙ্গি গিয়াস ডাকে) জসিম উদ্দিন(চকরিয়া করলেজ ছাত্র সংসদের এ জি এস প্রার্থী) তিন বাবুলের মধ্যে আমি দুই বাবুল কে দেখেছি রেফার্ট বাবুল ও কালা বাবুল এতটুকু মনে পড়ে।

সেই মিছিলের নেতৃত্ব দেন নুরুল আলম চেয়ারম্যান, আমজাদ হোসেন, মাস্টার আবুল হাসেম বি কম, কমরেড বশির, কমরেড আবছার,কমরেড জাফর বিভিন্ন জোটের নেতারা। তখন তুখোড় বক্তব্য রেখে আমাদের উজ্জীবিত করেছিলেন এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম বুলবুলব,সরওয়ার আলম,লুৎফুল কবির।জয়নাল ছিলেন সাহসী যোদ্ধা। আমরা যারা কিশোর শুধু মিছিলে শ্লোগানে সঙ্গী হই।

উল্লেখ্য, সেই সেদিনের মিছিলের সর্বকনিষ্ঠ সারথি ছিলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস ফাইভের ছাত্র বর্তমান লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম। সে তখন ক্লাস ফাইভে পড়তো। সে তার স্কুলের সামনে দিয়ে আসা চকরিয়া কলেজের সংগ্রাম পরিষদের মিছিল দেখে বই খাতা স্কুলে রেখেই মিছিলে অংশ নেয়।সেদিন তারা পিতাপুত্র উভয়ই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। আর আমরা দুই ভাই ও মিছিলে যাই।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদ এর চত্বরে মিছিল প্রবেশ করার সাথে সাথেই শুরু হয় পুলিশের লাটি চার্য। মিছিল তাতে আরো জঙ্গি রুপ লাভ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে দৌলত খান গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। দৌলতের সেই লাশও পুলিশ ছিনিয়ে নেয়।গভীর রাতে খুব গোপনে লাশ পৌঁছে দেয় কোনাখালির গ্রামের বাড়িতে। তখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এককালীন মুক্তিযোদ্ধা, জাতির জনকের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী এ এই সালাউদ্দিন মাহমুদ। সালাউদ্দিন মাহমুদের ছোট ভাই ছিলো চট্টগ্রাম মহানগর জাতিয় ছাত্রলীগ এর নেতা (কি পদে ছিলেন মনে নেই)।

দৌলত হত্যার পর বিপ্লবী ছাত্রলীগ, জাতিয় ছাত্রলীগ নেতারা যখন ভরামুহুরিস্থ সালাউদ্দিনের বাসায় ইটপাটকেল ছুড়ে তা নিয়েও অনেক বিপ্লবী ছাত্রলীগ কর্মীর নামে মামলা। অথচ দৌলত যে সংগঠন টি ধারণ করতেন সেই সংগঠনের কয়েক নেতা দৌলত ও মামলা নিয়ে ও বেচা বিক্রি করে। যিনি সর্বোচ্চ বেচা বিক্রি করেছিলেন তিনি সেই সেদিনের মিছিলে ছিলোনা, কিন্তু লম্বা গলায় বক্তব্য রাখতো।

বর্তমানে আজকের যারা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা কেউ সেই আন্দোলনের মিছিলে ছিলোনা।একজন লামা আলি কদম গাছ মাটি পাথরের সাথে সর্বনাশা প্রেম পিরিতি করতেন।এমপির সেই সময়ের পত্রিকার পাতা খুল্লে জানতে পারবেন।

গতকাল একটা ফেইসবুক ব্যানার দেখলাম ওখানে সাধারণ সম্পাদক যিনি তিনি আওয়ামীলীগের নেতার সন্তান হলে ও আর এক প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে লজিং থেকে কইয়ারবিল উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজাকার কন্যার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে শিবিরের সাথী প্রার্থী ছিলেন। আমরা যখন চকরিয়া কলেজে শিবির বিরোধী লড়াই সংগ্রাম করছি তখন সে শিবিরের বিরাট নেতা। শিবিরের আর এক নেতা ছিলো লুৎফুল কবিরের ছোট ভাই আরিফুল কবির।

আরিফ চকরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত এজিএস ছিলো। আর দৌলত পরিষদের নেতাটি আমাদের বিরুদ্ধ প্যানেল শিবিরের প্যানেল থেকে সদস্য প্রার্থী ছিলো। আজ দেখি কালের আবর্তে সবাই বগলে ইট রেখে শেখ ফরিদ বনে যায়। আর শহীদ দৌলত নিয়ে কৃতিত্ব নেয়ার কাড়াকাড়ি চলে।কিন্তু আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সম্মেলনের কাউন্সিলর হিসাবে রাখা হয়না।

তার সেই জাতিয় ছাত্রলীগ্রর কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউল করিম জাতিয় নেতা রাজ্জাক ভাই,অধ্যাপক আবু সাইদ সহ অনেক মন্ত্রী এমপি থেকে সর্বোচ্চ উপকার ভোগী, উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েও যে উপজেলা পরিষদ স্থলে দৌলত গুলিবিদ্ধ হন সেই স্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেন নি।রেজাউলের সাথে ভাইস চেয়ারম্যান ছিলো জাহাঙ্গীর বুলবুল, একি ইউনিয়নের বাসিন্দা হয়েও উপজেলা পরিষদ মিঠিং একটি প্রস্তাব উত্থাপন কর‍তে ভুলে গিয়েছলো পাঁচটি বছর।অথচ তারাই দৌলতের নামে স্মৃতি সংসদ গঠন করে নিজের তল্পিতল্পা নিয়ে।

দুঃখের বিষয় হলো যে জামাল উদ্দিন জয়নাল দৌলতের রক্তমাখা জামাটি পরম যন্তে প্রেমে ভালোবাসায় সংরক্ষণ করে চলেছেন। এডভোকেট আমজাদ হোসেন কে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা চকরিয়া পৌরসভার প্রথম প্রশাসক নিয়োগ করেন তখন তিনি প্রথম যে কাজটি করেন শহীদ দৌলতের কৃষি পরিবারের জন্য ট্রাক্টর ও কিছু রিকশার ব্যবস্থা করেছিলেন। তার বোনের বিয়ের বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছিলেন, তিনি আজ প্রয়াত। আর আমি দেখেছি দৌলতের পরিবারের সুখে দুঃখে পাশে ছিলেন নিরেট নির্মোহ জননেতা মাস্টার আবুল হাসেম বি কম।

আজ শহীদ দৌলত দিবসে দৌলত নিয়ে যখন ইতিহাস কাড়াকাড়ি চলছে তখন এসব কথা নির্মোহ না থেকে পারিনাই। আমার কৈশোরের আন্দোলন সংগ্রামের স্মৃতির ঝাপি থেকে অনেকের নাম হয়তো বাদ পড়ে গেছে তার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী। আমি সেই সময় যেহেতু জাতিয় ছাত্রলীগের কেউ না সব কথা, ঘটনা আমার না জানার কথা। দৌলত নিয়ে আমার জানা মতে একজন ব্যক্তিই লিখেছিলেন সাপ্তাহিক চকোরী তে ডাক্তার জামাল উদ্দিন (বাসদ)আর মাস্টার আবুল হাসেম বি কম (বাকশাল পরবর্তী আওয়ামীলীগ নেতা)

আমার একান্ত কয়েকটি ফেবুর পড় পোস্ট ও আজকের এ লেখা। এ লেখায় ভুল ত্রুটি একান্ত আমার।
দৌলত থাকতো লইক্ষ্যার চর সিকদার পাড়ার দিকে বর্তমান কোরক বিদ্যাপীঠ থেকে একটু দুরে।
সে লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য আদালতে মহুরির ও কাজ করতেন। তার সাথে আমার বিশেষ একটা সম্পর্ক ছিলো তা হলো চকরিয়া পাইলট হাইস্কুলে আমাদেরর এক বান্ধবী র সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। আর তখন আমাদের স্কুলে বাকশালের শিশু সংগঠন "আমরা পলাশ" এর শাখা ছিলো। আর আমি সেই সময় ছাত্র ইউনিয়ন এর পাশাপাশি মাতামুহুরি খেলাঘর আসর করতাম।

পরিশেষে আবেগে অনেক ক্ষোভ ঝেড়েছি। তারজন্য ও ক্ষমা প্রার্থী, আবার অজানা বিষয় ও উল্লেখ করেছি, না করে উপায় ও নাই। শহীদ দৌলত এর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।শহীদ দৌলত অমর হউক।

লেখক :কবি, নব্বুইয়ের নির্যাতিত ছাত্রনেতা।

পাঠকের মতামত:

১৯ মার্চ ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test