E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্হাপনা পরিচালক যখন কারাগারে 

২০২০ জুন ০৬ ১২:০০:৪৮
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্হাপনা পরিচালক যখন কারাগারে 

চৌধুরী আবদুল হান্নান


একজন প্রথিতযশা, স্বাধীনচেতা ব্যাংকারের সাহসিকতার গল্প বলি, মো.লুৎফর রহমানসরকার (এল আর সরকার) ১৯৮৩-৮৫ মেয়াদে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্হাপনা পরিচালকছিলেন, একজন মন্ত্রীর নির্দেশে কাজ না করায় এক পর্যায়ে তাঁকে চাকুরিচ্যুত ও পরে গ্রেফতারকরা হয়েছিল, কারাগারে যেতে হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করা ছাত্রদের জন্য সাময়িক কর্মসংস্হানের জন্য স্বল্প সুদে একটিপ্রকল্প চালু করেন তিনি—বিশ্ববিদ্যালয় কর্ম সংস্হান (বিকল্প) নামে।

হুসেন মোহাম্মদ এরশাদের শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশকৃত ছাত্রদের কেবল এ ঋণ মন্জুর করতে হবে—এমন নির্দেশনা তিনি মেনে নিতে পারেননি।তারপর যা হবার তাই হয়েছিল। এরশাদের সামরিক আদালতে বিচারের নামে প্রহসন করে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।

ব্যাংকিং জগতে তিনি ব্যাপক সুনামের অধিকারী ছিলেন এবং একজন ব্যতিক্রমী ব্যাংকারহিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

অবশেষে ‘৯৬ এর হাসিনা সরকার তাঁর সন্মান ফিরিয়ে দিয়েছিল,কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকেরগভর্নরের পদে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলো।

সম্প্রতি এক্সিম ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীর ওপর হামলার ঘটনায় দেশবাসী স্তম্ভিত হয়েছে, তবে এবারের হামলাটা সরকারের কোনো মন্ত্রীর মদদে হয়নি, একটি প্রাইভেট কোম্পানি সিকদারগ্রুপ তাদের পাঁচশত কোটি টাকার একটি ঋণ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকালে তাদের অন্যায্য দাবি রক্ষানা করায় ব্যাংকারদের ওপর তারা হামলা চালায়। প্রস্তাবিত বন্ধকী সম্পত্তির মূল্যায়ন বাড়তিকরার দাবি ছিলো।

হামলাকারীদের আসামি করে গুলশান থানায় মামলা হয়েছে, পুলিশ তদন্ত করছে। এক্ষেত্রে কেবল ফৌজদারি মামলাই যথেষ্ট ভাবা যায় না,বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্হাপনায় পুরো বিষয়টিখতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা জরুরি।

করোনাকালের অস্হিরতার মধ্যে তড়িঘড়ি করে একটি বড় ঋণের আবেদন, ঋণের প্রকৃতউদ্দেশ্য, ব্যাংকের সাথে তাদের অতীত লেনদেন ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিলকরতে হবে, যাতে এ জাতীয় সন্ত্রাসী শিল্পঋণ গ্রহীতাদের বেপরোয়া আচরণ প্রতিহত করা যায়এবং একই সাথে অন্যান্য ব্যাংকও এ বিষয়ে অধিক সতর্ক হতে পারে।

অব্যবস্হার কারণে ব্যাংকগুলোর দুরবস্হা কাটছে না, খেলাপি ঋণের বোঝা আর বহণ করতেপারছে না,ক্রমে আরও ভারী হচ্ছে।

আর যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, সামর্থ থাকা সত্তেও ঋণ পরিশোধ করছেন না আর বেনামিঋণ,অবলোপনকৃত ঋণের সুবিধাভোগী যারা, তারাই ব্যাংক ব্যবস্হাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়েগেছে, এদের অনেকেই বিদেশে অর্থ পাচারকারী, সেকেন্ড হোমের মালিক ।

কঠোর হস্তে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসীদের দমন করা আর সাহসী ব্যাংকারদের সুরক্ষা দেওয়া এখনঅনেক বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে ।

লেখক : সাবেক ব্যাংকার।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test