E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

করোনাকালে ব্যাংকারদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা

২০২০ জুন ২৯ ১৬:২৮:৪৬
করোনাকালে ব্যাংকারদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা

চৌধুরী আবদুল হান্নান


ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্হা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সার্কুলার নং ১৮ তাং ১৫ এপ্রিল, ২০ এর মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য বিশেষ স্বাস্হ্য বীমা এবং বিশেষ অনুদান ঘোষণা করে সকল ব্যাংকের প্রতি নির্দেশনা জারি করেছে।

কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা ভেদ সর্বনিন্ম ৫ লাখ এবং সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পাবেন এবং চিকিৎসার সকল ব্যয় ব্যাংক বহন করবে। করোনায় কারো মৃত্যু হলে তার পরিবার বীমার টাকার ৫ গুণ বিশেষ অনুদান পাবেন ।
সাধারণ ছুটি কালীন যারা ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের জন্য আপদকালীন এ ব্যবস্হা।

সরকার করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে,তেমনি প্রতিষ্ঠানও নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী করোনা মোকাবেলায় এগিয়ে আসবে, সেটাই স্বাভাবিক। সম্মুখযোদ্ধা ব্যাংকারদের জন্য এ প্রণোদনা সময়োপযোগী ও অত্যন্ত প্রশংসনীয়।এ ঘোষণায় কর্মীগণ উজ্জীবিত হবেন,তাদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে।

অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস হিসেবে, ব্যাংকের কাজ বন্ধ রাখা যায় না,সকলের দরজা এখানে খোলা।সীমিত কাজ,স্বাস্হ্য-বিধি বজায় রাখা এখানে সম্ভব নয় । অনেক ব্যাংকার কর্মরত অবস্হায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন,অনেকে অকালে মারা গেছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে ৪০ জনের বেশি ব্যাংকার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং সহস্রাধিক আক্রান্ত হয়েছেন।আক্রান্তের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্হাপনা পরিচালক মো:আতাউর রহমান প্রধান “ কালের কন্ঠকে বলেন (২৮ জুন)—“, করোনাকালে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে ব্যাংকাররাও জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন।আমাদের প্রায় ২৬৫ জন সম্মুখ যোগ্ধা করনায় আক্রান্ত হয়েছেন।যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আমরা চেষ্টা করছি, তাদের মনোবল শক্ত রাখতে ।”

করোনায় মৃত্যুবরণকারী কোনো ব্যাংকারের পরিবারের হাতে বা আক্রান্ত কোনো ব্যাংকারের হাতে এ বিশেষ অনুদান পৌছে দেয়া হয়েছে কিনা তা চোখে পড়েনি ।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও এ প্রণোদনা বিতরণে কেনো গতি আসেনি,তা বড় বিস্ময়।

টাকা দিয়ে জীবনের মূল্য নির্ধারণ করা যায় না কিন্ত একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তির হঠাৎ মৃত্যুর পর একটি অসহায় পরিবারের জন্য এ অর্থ জীবন বাঁচানোর অবলম্বন। আনুষ্ঠানিকভাবে কেনো এ প্রণোদনার অর্থ শোকাহত, অসহায় পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে না, তা আমাদের অবাক করেছে।

ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য মহামন্দা মোকাবেলার লক্ষ্যে যদি কর্মীদের বন্চিত করে অর্থ সাস্রয়ের পরিকল্পনা হয়ে থাকে, তা হবে আত্মঘাতি। কারণ এ কর্মীবাহিনীই একদিন ব্যাংককে জাগিয়ে তুলবে। যুদ্ধরত সৈনিকদের মনে অসন্তোষ জিইয়ে রেখে যুদ্ধ জয় করা যায় না । বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিস্কার অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও করোনায় আক্রান্ত ব্যাংকারদের এবং মৃত্যুবরণকারী ব্যাংকারদের পরিবারের জন্য এ অনুদান পেতে কর্তৃপক্ষের নিকট এখন যদি আবার ধর্ণা দিতে হয়, তা কেবল লজ্জার নয়, মর্মান্তিকও ।

লেখক :সাবেক ব্যাংকার।

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test