বরেণ্য নেতৃবৃন্দের ভোজন : যেমনটি দেখেছি
রণেশ মৈত্র
পনের বছর বয়স তখন আমার। ভর্তি হয়েছি অষ্টম শ্রেণীতে পাবনা গোপাল চন্দ্র ইনষ্টিটিউশনে ১৯৪৮ সালে। ঐ বছরেই মার্চে ভাষা আন্দোলনের সুরু। বুঝে-না-বুঝে ঐ পনের বছর বয়সেই রাজনীতির অঙ্গনে পা ফেলতে শুরু করি।
রাজনীতির জীবন বৃত্তান্ত বা ইতিহাস এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় না হওয়াতে সে দিকটা এই লেখায়, অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকটুকু ব্যতীত স্থান পাবে না।
পাকিস্তান আমল সবে শুরু হয়েছিল তখন। কিন্তু যাত্রা লগ্ন থেকে আজতক সে দেশে গণতন্ত্রের নাম-নিশানাটুকুও চোখে পড়ে নি নাগরিকদের। আমরা ছিলাম পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা। জাতীয়তায় বাঙালি। পশ্চিম পাকিস্তানের চক্ষুশূল। তাই বাঙালি জাতি এবং তার অবিসম্বাদিত নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা দাবীতে আন্দোলন সুরু করেন। ছাত্র সমাজই ছিল ঐ আন্দোলনগুলি গড়ে তোলার প্রধান অবলম্বন। ছাত্র হিসেবে আমিও তাতে ঐ আটচল্লিশ সাল থেকেই জড়িয়ে পড়ি।
আর সে কারণেই আমার সুযোগ হয়েছে তৎকালীন বরেণ্য জাতীয় নেতৃবৃন্দের ভোজন দৃশ্য দেখার। এঁরা হলেন শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবর রহমান, আমাদের প্রিয় মুজিব ভাই এবং অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ।
হামেশাই ১৪৪ ধারা জারী, সভা-সমিতি-মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা, রাজনৈতিক নেতা কর্মীদেরকে প্রায়শ:ই হাজারে হাজারে বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করা, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ-এগুলি ছিল তখনকার দৈনন্দিন ঘটনা। কিন্তু আন্দোলন তাতে থামে নি বরং এ জাতীয় নির্য্যাতন ও জুলুমের অবসানের দাবীতে ক্রমান্বয়ে আন্দোলন আরও জোরালো হয়েছে।
এই আন্দোলনে গতি সঞ্চার করতে একদিকে বিভিন্ন দাবীতে বিভিন্ন দিবস ঘোষণা করা হতো যা প্রধানত: স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই সংগঠিত করতেন-তেমনি বেশ ঘন ঘনই বরেণ্য নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন জেলা সফর করতে আসতেন। সেই উপলক্ষ্যে আয়োজিত হতো বিশাল বিশাল কর্মী সম্মেলন ও জনসভার। ফলে আন্দোলনগুলিতে নতুন গতিবেগেরই সঞ্চার হতো তা নয়-আন্দোলনগুলিতে সাধারণ মানুষের সম্পৃতিও ঘটতো। ঐ আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও ছাত্র হত্যার পর থেকে গণ-সম্পৃক্তি ঘটতে শুরু হয়। পাকিস্তানী জোশ ধীরে ধীরে অস্তাচলে যেতে শুরু করে।
ভাষা আন্দোলনের গুলি চালনার ঘটনার পর থেকে ধীরে ধীরে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তায় ধস নামতে শুরু করে। এক পর্য্যায়ে পাকিস্তানে নতুন নির্বাচন চাই-এই দাবীতে আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠতে থাকে। মুসলিম লীগ ও তার পরিচালিত সরকার তখন পূর্ব পাকিস্তানে প্রাদেশিক পরিষদের ৩০ টিরও অধিক আসন সাংসদদের মৃত্যু, দেশত্যাগ প্রভৃতি কারণে শূণ্য হয়ে পড়লেও সে আসনগুলিতে উপনির্বাচনের আয়োজন করতে সাহস পায় নি।
একদিকে ক্রমবর্ধমান নির্য্যাতন অপরদিকে গণতান্ত্রিক নিয়মকানুন অমান্য করে অতগুলি আসনে উপনির্বাচন না দেওয়ার ফলে দেশব্যাপী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবী জোরদার হয়ে উঠে। এক পর্য্যায়ে সরকার পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন দিতে সম্মত হয় এবং ১৯৫৪ সালের মার্চের প্রথম দিকে ঐ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে।
এই নির্বাচনকে যেমন দেশের ছাত্র-যুব সমাজ, তেমনই সকল গণতন্ত্রকামী দল ও বরেণ্য নেতারা একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলেন। ছাত্র সংগঠন এবং যুবলীগসহ (আওয়ামী যুব লীগ নয়-কারণ তার তখন জন্মই হয় নি) গণতন্ত্রকামী দল ও নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিটি আসনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে একক প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে এবং সে কারণে একটি যুক্তফ্রন্ট গড়ে তুলতে হবে এমন দাবী উত্থাপণ করেন জোরে সোরে।
সেই দাবীর প্রেক্ষিতে আওয়ামী মুসলিম লীগ, শেরে বাংরা এ.কে. ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক পার্টি বা কে এস পি, গণতন্ত্রীদল ও নেজামে ইসলাম সমবায়ে হক-ভাসানী-সোহ্রাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় এবং সকল আসনে একজন করে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
মনোনয়ন পর্ব শেষ হতেই জাতীয় নেতৃবৃন্দ সারা প্রদেশ সফরে বেরিয়ে যুক্তফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের সপক্ষে ব্যাপক প্রচার অভিযানে নেমে পড়েন।
ভোজনে শেরে বাংলা এক ফজলুল হক
তখন পাবনা সদর (পাবনা-৫) আসনে মনোনয়ন পান কৃষক শ্রমিক পার্টির প্রার্থী আবদুল গফুর। শেরে বাংলা বিভাগোত্তর পাবনায় ঐ প্রথম এলেন তাঁর দলীয় প্রার্থীর সপক্ষে নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠানের জন্য। থাকলেন পাবনা সার্কিট হাউসে। বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হলো পাবনা ষ্টেডিয়াম ময়দানে।
পরদিন সকালে শেরে বাংলা ব্রেকফাষ্ট করবেন তাঁর প্রার্থী গফুর সাহেবের বাসায়। যেহেতু কৃষক শ্রমিক পার্টির কোন কর্মী ছিল না-তাই ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রলীগ নেতাদেরকে বলা হয়েছিল শেরে বাংলাকে নাস্তা খাওয়ানোর কাজে সহায়তা করতে। সৌভাগ্যক্রমে আমাকেও বলা হয়েছিল ঐ দায়িত্ব পালন করতে। তাই উপস্থিত থেকে শেরে বাংলাকে অত্যন্ত কাছে থেকে দেখা এবং খাওয়ানোর সুবাদে তাঁর ভোজন পর্ব দেখার সুযোগ হয়েছিলো।
যেমন ঊঁচু, লম্বা, ভারী ওজনের দেহ শেরে বাংলার, তেমনই ঊঁচু মাপের আয়োজন ব্রেকফাষ্টের। বাড়ীতে কাজের লোক বেশী না থাকায় ভেতর থেকে প্লেট, গ্লাস, খাবার যা যা তৈরী হয়েছে সেগুলো এনে আমরাই পরিবেশন করছিলাম।
চীনামাটির এক বিশাল প্লেট শেরে বাংলার সামনে, আর টেবিলে এক পাত্রে ডজন দুই বড় সাইজের ঘিয়ে ভাজা পরেটা, বড় এক পাত্রে প্রচুর পরিমাণে মুরগীর মাংস, ২৪টা সিদ্ধ ডিম, এক ছড়া বড় শবরী কলার কথা মনে আছে। ভাবছিলাম অত বেশী বয়সের মানুষ এত খাবার খেতে পারবেন না।
কিন্তু না। পরেটাগুলি এক এক করে হাতে তুলে ছিড়ে টুকরাগুলি মুখে পুড়ছেন অত:পর মাংস, এক এক করে সিদ্ধ ডিম মুখে পুড়ছেন, সেগুলি শেষ করে কলা ১০/১২টা। যা যা আনা হয়েছিল তার কোন কিছুই প্রায় অবশিষ্ট থাকে নি। আজ এমন ভোজন কথা সবার কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হবে। তবে যেহেতু চোখে দেখেছি তাই হুবহু বর্ণনা করলাম। দীর্ঘ দেহ-ফলে বিরাট হা। তাই যাই মুখে দিচ্ছেন সবই গিলে খাওয়ার মত খেয়ে ফেলছেন।
ভাবলাম ব্রেকফাষ্ট এমন হলে লাঞ্চ, ডিনার বা কেমন! এটা ১৯৫৪ সালের কথা। অত:পর ১৯৬২ সাল। আইউবের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হচ্ছে। ছাত্র সমাজ ঐ আন্দোলন সুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
রাজনৈতিক দলগুলি নিষিদ্ধ। নয় নেতা এক যুক্ত বিবৃতি দিলেন সামরিক শাসন প্রত্যাহার, সারা পাকিস্তানব্যাপী সাধারণ নির্বাচন, রাজবন্দীদের মুক্তি প্রভৃতি দাবী তুলে। মওলানা ভাসানী তখন জেলে। নয় নেতার মধ্যে ছিলেন হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, শেখ মুজিবর রহমান, মাহমুদ আলী, আবু হোসেন সরকার, নূরুল আমিন, যাদু মিয়া প্রমুখ।
ঐ নয় নেতার যুক্ত বিবৃতি সংবাদপত্রে প্রকাশের সাথে সাথেই দেশব্যাপী তার সপক্ষে বিপুল সাড়া, আলোড়নের সৃষ্টি হয়।
ফলে ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট এন.ডি.এফ. নামে একটি ঐক্য মোর্চা গঠন করে নেতারা দেশব্যাপী সফর, জনসভা করতে বেরিয়ে পড়েন। উত্তরবঙ্গ সফর তাঁরা শুরু করেন পাবনা দিয়ে। বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয় পাবনা ষ্টেডিয়াম ময়দানে। নেতারা থাকলেন পাবনা সার্কিট হাউসে-ষ্টেডিয়াম থেকে হাঁটা পথে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা। টিমে নাম থাকলেও নূরুল আমিন আসেন নি তাঁর নামে সর্বত্র কর্মীদের আপত্তি থাকার কারণে।
যা হোক, বিকেলে জনসভা অনুষ্ঠিত হলো। সন্ধায় তা শেষ করে পরদিন সকালে নেতৃবৃন্দ ঈশ্বরদী থেকে ট্রেনে উত্তরবঙ্গের বড় বড় জায়গাগুলিতে যাবেন।
আমি তখন দৈনিক সংবাদদের পাবনাস্থ সংবাদদাতা। সংবাদ অফিস থেকে টেলিগ্রামে আমাকে জানান হয়েছিল এন.ডি.এফ নেতাদের উত্তরঙ্গ সফর কভার করার জন্য। মুজিব ভাই পাবনার জনসভা শেষে বললেন, সংবাদ তাঁকে জানিয়েছে আমি তাঁদের সাথে যাব। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আমি প্রস্তুত কিনা। আমি জানালাম, আমি প্রস্তুত।
যথারীতি পরদিন সকালে বাসা থেকে নাস্তা সেরে সার্কিট হাউসে এলাম। খানিক পইে নেতৃবৃন্দের সাথে একটি মাইক্রোবাসে ঈশ্বরদী এবং সেখান থেকে ট্রেনে রাজশাহী। সেখানে সার্কিট হাউসে সবার থাকবার ব্যবস্থা। বিকেলে রাজশাহী মাদ্রাসা ময়দানে বিশাল জনসভা। অত:পর প্রেস টেলিগ্রামে সংবাদ পাঠালাম। পাবনার জনসভার পরেও তাই করা হয়েছিল। সময় হাতে না থাকায় সার্কিট হাউস থেকে দ্রুত রাতের খাবার নিজ রুমে বসে খেয়েই সকলের সাথে রাজশাহী ষ্টেশনের দিকে ছুটতে হলো।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, শেখ মুজিবর রহমান, আবু হোসেন সরকার, মাহমুদ আলী, যাদু মিয়া প্রভৃতি। ঢাকা থেকে সাংবাদিক এসেছিলেন দু’জন। একজন উত্তেফাক থেকে অপরজন বার্তা সংস্থা পি.পি.আই (পাকিস্তান প্রেস ইন্টারন্যাশনাল) থেকে। আমি খবর পাঠাতাম প্রেস টিলিগ্রামে, তঁরা টেলিফোনে (ল্যা-ফোন)।
ট্রেন গিয়ে থামলো সান্তাহার ষ্টেশনে। সোহ্রাওয়াদী সাহেব এক কামরায় অন্য নেতৃবৃন্দ অপর এক কামরায়-আমরা সাংবাদিক তিনজন অন্য কামরায়।
সকালে নাটোর ষ্টেশনে সামান্য ষ্টপেজ। হালকা নাস্তা চলে এলো আমাদের কামরায়। পর পরই নেমে এলেন মুজিব ভাই। প্ল্যাটফর্মের ওপর ইত্তেফাক ও সংবাদ হাতে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন আমাদের ঘুম কেমন হয়েছে-নাস্তা পেলাম কি না ইত্যাদি। তিনি স্বেচ্ছায় পরমযত্নে এ কাজ করে চলেছেন সর্বত্রই। পত্রিকা দুটি দেখিয়ে বললেন, “সংবাদ” এর নিউজ সব চাইতে ভাল হয়েছে।
অত:পর সান্তাহার। সেখানে জনসভা বিকেলে। দুপুরে ওখানেই লাঞ্চের আয়োজন। এই প্রথম নেতৃবৃন্দের সাথে একত্রে খাওয়ার ব্যবস্থা।
চেয়ে দেখি দেখি সমস্তrich food... যেমন, পোলাও, দু’রকমের মাংস, মাংসের চপ, দই, মিষ্টি ইত্যাদির আয়োজন। পরিবেশনকারীরা সোহ্রাওয়াদী সাহেবের পাতে কোন আইটেম একটু কমে এলেই আবার দিচ্ছেন কিন্তু সোহ্রাওয়াদী সাহেব বিন্দুমাত্র আপত্তি না করে বেমালুম সবই খেয়ে যাচ্ছেন। শেরে বাংলা ছিলেন প্রায় প্রাচীন যুগের নেতা-যে যুগে খাবার প্রতিযোগিতা চলতো। সর্বাধিক যিনি খেতে পারতেন তিনি পুরস্কৃত হতেন। ছোট বেলায় দেখেছি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের কেমিষ্ট্রির শিক্ষক ডা. মনীন্দ্র মজুমদার এমন এক প্রতিযোগিতায় ৮০টি বড় বড় পানতুয়া খেয়ে পুরস্কৃত হলেন। এগুলি অনেকটা ফিউডাল যুগের ব্যাপার। কিন্তু আধুনিক যুগের পাশ্চাত্য অনুরাগী সোহ্রাওয়ার্দী সাহেব অমন খাবেন-কেউই আমরা ভাবতে পারি নি।
জনসভা শেষে আবার ট্রেনযোগে পার্বতীপুর। সেখানেই রাত্রি বাস। ডিনারের ব্যাপক আয়োজন। আমরা তো ভয় পাচ্ছি আবারওrich খাবার খেতে হবে কিনা। ঠিক তাই। স্থানীয় নেতারা কোথায় কত rich খাবারের আয়োজন করবেন-তার প্রতিযোগিতা যেন। আবারও সোহ্রাওয়ার্দী সাহেবের খাবারটা দেখবো। প্রচন্ড rich food এবং একই ধরণের আয়োজন-খেলেনও প্রচুর পরিমাণে।
আমরা তিন সাংবাদিক সাদাভাত আর মাছের আয়োজন থাকলে দিতে বললাম। কিন্তু তা না থাকায় ঐ খাবারই খেলাম সামান্য পরিমাণে।
সকালে প্ল্যাটফর্মেই বড় সড় জনসভা। ট্রেনে মাইক বেঁধে নেতারা বক্তৃতা করলেন। অত:পর ব্রেকফাষ্ট। আবারও একই চিত্র। সেখান থেকে ট্রেনযোগে রংপুর। দুপুরের খাবার সেখানে। এবারে আয়োজক স্বয়ং যাদু মিয়া। তিনিই বা কমে ছাড়বেন কেন? একই ধরণের আয়োজন তাঁরও। নিশ্চিন্তে খেলেন সোহ্রাওয়ার্দী সাহেব আগের মতই। তবে যাদু মিয়া আমাদের জন্য মাছ ভাতের আয়োজন রেখেছিলেন-মহা আনন্দে খেলাম।
রংপুরের জনসভা শেষে আমি রাতেই রাতের খাবার শেষে ট্রেনযোগে ঈশ্বরদী রওনা হলাম পাবনার পথে। অন্য সকলে ভোরে ওখান থেকে ঢাকা যাবেন।
মওলানা ভাসানী
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর প্রচন্ড ভক্ত ছিলাম। অবশ্য ৬২’র পর থেকে তাঁর চীন সমর্থক (আইউবের প্রতি দুর্বল এবং পরবর্তীতে ছয় দফা বিরোধিতা) রাজনীতির কারণে রাজনৈতিক ব্যবধান রচিত হলেও তাঁর দেশপ্রেম নিয়ে আজও আমার মনে কোন প্রশ্ন নেই। সম্ভবত: ১৯৫৭ সালের গোড়ার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে মিশরের কর্ণেল নাসেরের আমন্ত্রণে তিনি কায়রো গেলেন। বিপুল সম্বর্ধনা পেলেন কায়রো বিমান বন্ধরে। তাঁকে রাখা হলো আন্তর্জাতিক মানের হোটেল আলেকজান্দ্রায়।
হঠাৎ একদিন পাবনার বাসায় ডাকযোগে একটি চিঠি পেলাম কায়রো থেকে। খুলে দেখি মওলানা ভাসানীর নিজ হাতে লেখা।
দুর্ভাগ্য, চিঠিটি আজ নেই।
যাহোক তিনি লিখেছেন, দেশে ফিরে তিনি জানাবেন। আমি যেন রংপুর জেলার মাইনকার চরে গিয়ে তাঁর সাথে দেখা করি। অনেক জরুরী কথা আছে।
ইত্তেফাক প্রতিনিধি এবং ভাসানী ভক্ত মাহমুদ আলম খানকে সঙ্গে নিয়ে গেলাম। পৌঁছুতে পৌঁছুতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল।
কাঁচা বাড়ীতে ঢুকে দেখি মওলানা ভাসানী লুঙ্গি পরে গামছা কাঁধে বারান্দায় বসে অপেক্ষা করছেন। দেখেই বললেন, হাত মুখ ধুয়ে এসো। আগে খাওয়া-পরে কথা। একটি মাদুর পেতে মওলানা সাহেবের সাথে বসলাম খেতে। অতি সাধারণ খাবার। ভাত, ডাল, সবজী ও মাছ-সঙ্গে কাঁচালংকা কাঁচা পেঁয়াজ। তবে পরিমাণে প্রচুর খেলেন তিনি।
কিন্তু যখন ওনার সাথে নানা জায়গায় ট্যুরে গিয়েছি তখন স্থানীয় আয়োজন হতোrich food এর। তাতেও মওলানা সাহেব কমে যেতেন না। দিব্যি খেয়ে যেতেন বেশ ভাল পরিমাণেই। তবে যখন যেমন তখন তেমন এমনই ছিল তাঁর খাদ্যাভ্যাস।
বঙ্গবন্ধু
এবারে বলি বঙ্গবন্ধুর কথা। সুযোগ হলেও তাঁর খাওয়া বিশেষভাবে কখনও খেয়াল করি নি। তিনিrich ও হালকা যখন যা পেতেন তাই খেতেন।
১৯৬৭ তে ঢাকা সেন্টাল জেলে তিনি দেওয়ানী ওয়ার্ডে-আমি পুরাতন ২০ সেলে। একদম সামনাসামনি। ভাবী বেগম ফজিলতুন্নেসা ও শেখ হাসিনা একদিন বঙ্গবন্ধুর সাথে ইন্টারভিউতে এসে অতি সুস্বাদু নানা ধরণের খাবার দিয়ে যান। রাতে বঙ্গবন্ধু সকল আইটেমই বেশ ভালো পরিমাণে আমাকে পাঠালেন। পরম তৃপ্তির সাথে খেলাম। ভাবীর হাতের অসাধরণ সুস্বাদু রান্না। জানি না, ঐ ধরণেরই ছিল কিনা বঙ্গবন্ধুর দৈনন্দিন খাবার।
অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ
মস্কোপন্থী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি (প্রয়াত) অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদের সহকর্মী হিসেবে ১৯৫৭ সাল থেকে দীর্ঘ দিন নানা পদে তাঁর সহকর্মী ছিলাম (১৯৯৩ সাল পর্য্যন্ত)। এই দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় তাঁর সাথে নানা স্থানে সভা-সমিতি সম্মেলন উপলক্ষে সফরও করেছি।
তাঁর খাবার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। অতিরিক্ত পরিমাণে স্বাস্থ সচেতন অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ। আজীবন অতি সাধারণ খাবার খেয়েছেন। বিভিন্ন জেলায় সফর কালে দলীয় নেতারাrich food এর আয়োজন করলে তিনি ক্ষেপে যেতেন। তিনি খেতেন সাদা ভাত, সবজি আর মাগুর মাছের ঝোল এবং হালকা মসলায় রান্না মুরগীর মাংস। তিনি বেঁচেও গেছেন সকল নেতার চাইতে বেশী দিন।
লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ।
পাঠকের মতামত:
- রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মাইক মার্কার ব্যাপক প্রচারণা
- কেন্দুয়ায় অভ্যন্তরিন বোরো সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন
- কেন্দুয়ায় বোরোর বাম্পার ফলন, দামে অখুশি, ফলনে খুশি কৃষক
- ‘সার্বজনীন পেনশন স্কীমের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে’
- কাপাসিয়ায় ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
- নহাটা শ্মশান কালীবাড়িতে বৈশাখ মাসব্যাপী প্রভাতী কীর্তন সম্পন্ন
- জাতীয় শিশু-কিশোর ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- হাজীগঞ্জে আগুনে পুড়লো ৮ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
- ফরিদগঞ্জে ঋণের ভার সইতে না পেরে সিনিয়র সিটিজেনের আত্মহত্যা
- 'প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যাওয়ার মত পরিবেশ ইসি করেছে'
- এসএসসি পরীক্ষায় শ্যামনগর উপজেলা পর্যায়ে প্রথম হলেন মহুয়া রানী গায়েন সৃষ্টি
- 'ফসলের নিবিড়তা ও উৎপাদন বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে’
- তারাকান্দায় নির্যাতিত ও অসহায় পরিবারের পাশে ওসি ওয়াজেদ
- টাঙ্গাইলে ফারাক্কা লংমার্চের ৪৮তম দিবসে আলোচনা সভা
- কালিয়াকৈরে মোটরসাইকেলের কর্মীকে মারধরের অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
- হোসেনপুরে তীব্র গরমে ক্লাসেই অসুস্থ ৩০ শিক্ষার্থী
- কাপাসিয়ায় মাদকের বিরুদ্ধে সেমিনার
- শ্যামনগরে রোগীদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ
- ফরিদপুরে ডিবির হাতে ৬ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- সুন্দরবনে বার বার আগুনের নেপথ্য কাহিনি
- গোপালগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার আন্দোলনে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
- ‘ডোনাল্ড লুর বক্তব্যের পর ফখরুলের কথার দাম নেই’
- সালথার জয়ঝাপ স্কুলে ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে নির্বাচনী পথসভা
- প্রতিকার না পেয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা আনারস প্রতীকের প্রার্থীর
- বিশ্বের একমাত্র ভাসমান এনপিপিতে পিয়ার রিভিউ মিশন সম্পন্ন
- সাবেক যুব মহিলা লীগ নেত্রী স্বপ্না খন্দকারের সংবাদ সম্মেলন
- মাদারীপুরে রাস্তা সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় ও ঠিকাদারের সাথে হাতাহাতির ভিডিও ভাইরাল
- ‘প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে’
- গোয়ালন্দে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান
- শায়েস্তাগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে মুখোমুখি দুই সাংবাদিক
- পর্যটন খাতে তুরস্ককে বিনিয়োগের আহ্বান
- বোয়ালমারীতে হাসামদিয়া গণহত্যা দিবস পালন
- মহম্মদপুরে চায়না ৩ সিডলেস লেবু চাষে সফল রিয়াজুল ইসলাম
- ১০ প্রকল্পেই বরাদ্দ ৫২ হাজার কোটি টাকা
- ঈদ উপলক্ষে ওয়ালটনের নতুন মডেলের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পণ্য উন্মোচন
- ফরিদপুরে মৎস্য উৎপাদনে বার্ষিক পর্যালোচনা বিষয়ক কর্মশালা
- কোরবানির পশুর কোন সংকট হবে না : প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- গোপালগঞ্জে ৫ দিনের নারী শিল্প উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু
- বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্পের অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ
- নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গোপালগঞ্জের হোটেল রেস্তরাঁর খাবারের নমূনা সংগ্রহ শুরু
- আগামীতে জেলাভিত্তিক প্রকল্প নেওয়া হবে : পরিকল্পনামন্ত্রী
- বরিশালে ৩ লাখ রেনু পোনা জব্দ, ৯ জেলে আটক
- খালি হাতে বিদেশ ফেরত যুবকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচি
- জামালপুরে অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন
- অতীত ভুলে সামনে তাকাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
- দেশে অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ, প্রয়োজন সতর্কতা
- আচরণবিধি লঙ্ঘন: চেয়ারম্যান প্রার্থী রানা সরদারকে শোকজ
- আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে দুই বোনের স্ট্রিট ফুডের ব্যবসা
- আজ থেকে বাজারে মিলবে চুয়াডাঙ্গার আম
- নড়াইলে ডাকাতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !