E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সামনে হয়তো বাচ্চারা দিদিকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে ক্ষ্যাপাবে?  

২০২১ জানুয়ারি ৩০ ১২:৫০:৩৮
সামনে হয়তো বাচ্চারা দিদিকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে ক্ষ্যাপাবে?  

শিতাংশু গুহ


আমাদের ছেলেবেলায় ভুত ছিলো, মানে ভুতের গল্প বা ভয় ছিলো। মা বলতেন, রাম নাম নিলে ভুত পালায়, তাই অন্ধকার রাতে ভয় পেলে আমরা জোরে জোরে রাম নাম নিতাম। আমি ভুত দেখিনি, কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে রাম নামে কলকাতায় জলজ্যান্ত মানুষ পালাতে দেখলাম! আগে জয় শ্রীরাম শোনার পর তিনি গাড়ি থেকে নেমেছেন, এবার নামলেন মঞ্চ থেকে, যেভাবে জয় শ্রীরাম এগুচ্ছে, তাতে সামনে হয়তো তাঁকে গদি থেকেও নামতে হবে? ছেলেবেলায় দেখেছি ‘খোদাই ষাঁড়’-কে লাল কাপড় দেখিয়ে ক্ষ্যাপানো হতো? হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভীজ- কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘মমতাকে জয় শ্রীরাম বলা মানে ষাঁড়-কে লাল কাপড় দেখানো’! গ্রাম বাংলায় রাস্তা দিয়ে পাগল গেলে বাচ্চারা ক্ষেপায়, সামনে হয়তো দিদিকে দেখলে জয় শ্রীরাম বলে ক্ষেপাবে? 

দিদি’র মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তাঁর দল এখন ‘ফুটো জাহাজ’। ডুবন্ত মানুষ খড়কুটা ধরে বাঁচতে চায়, দিদিও এখন মোল্লাদের খুশি করে বাঁচতে চাইছেন? দিদি’র বাংলা এখন ‘শিয়ালরাজা’, তাই ‘হুক্কাহুয়া’ বেশি-বেশি শোনা যায়! ভিকটোরিয়া মেমোরিয়ালে দিদি’র এন্টি শ্রীরাম ভূমিকা, সায়নী’র শিবলিঙ্গের কন্ডম পড়ানো বা দেবলীনা’র গরু খাওয়া’র উক্তি বা দিদিপন্থী বুদ্ধিজীবীদের প্রকাশ্যে কুকুরের মত ‘গরুর হাড্ডি’ চিবানো সবই শিয়াল পন্ডিতের ‘কেয়া হুয়া’-র জবাবে সাগরেদদের ‘হুক্কাহুয়া’। মমতা ব্যানার্জী আবারো প্রমান করেছেন, রাজনীতির জন্যে, ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে তিনি ধর্মকে ব্যবহার বা অপমান করতে পিছপা নন, তবে এটি শুধু হিন্দুধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, ইসলামের জন্যে নয়; ভোটের জন্যে তিনি মাথায় হিজাব পড়ে বহু অনুষ্ঠানে ‘আল্লা-আল্লা’ করে কম চিল্লাননি!

পশ্চিমবঙ্গের এবার নির্বাচনটা দিদি সরাসরি হিন্দু-মুসলিম নির্বাচন বানিয়ে দিচ্ছেন! অসাম্প্রদায়িক কলকাতাকে তিনি স্বীয়স্বার্থে সাম্প্রদায়িক করে তুলেছেন। দিদির কর্মকান্ড হিন্দু বিরোধী এবং তাতে প্রচ্ছন্ন ‘মুসলিম তোষণ’ থাকে! সাম্প্রদায়িকতা বুঝতে হলে আপনাকে যেমন ‘বাংলাদেশের হিন্দু’ হতে হবে, তেমনি মুসলিম তোষন দেখতে হলে আপনাকে মমতা দিদি’র পশ্চিমবঙ্গে যেতে হবে! তবে দিদি’র জয়বাংলা বলাটা আমাদের পছন্দ হয়নি, ওটা বাংলাদেশের জাতীয় শ্লোগান। দীলিপ ঘোষ বলেছেন, মমতা বৃহত্তর বাংলার স্বপ্ন দেখছেন’। দিদিকে বলে রাখি, ঐ স্বপ্ন না দেখাই ভালো, গ্রেটার বাংলায় দিদি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারও হতে পারবেন না, কারণ যেই মুসলমানরা এখন তাঁকে সাপোর্ট করছে, সংখ্যাগরিষ্ট হলে তাঁরা তাঁকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। তাছাড়া বাংলাদেশের দুই কোটি হিন্দু কখনোই যুক্ত বাংলা সমর্থন করবে না, কারণ মুসলমানের সাথে বসবাসের ‘মজা’ তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।

দিদি শ্রীরাম বিরোধী, হিন্দু বিরোধী, মুসলিম তোষণকারী। ক্ষমতায় থাকার জন্যে তিনি রাষ্ট্র, ধর্ম, মান-ইজ্জ্বত সবই বিসর্জন দিতে পারেন। নইলে একটি শ্লোগানে তিনি ওই নাটক করতেন না? করে যখন ফেলেছেন, হিন্দুধর্মের বারবার অপমান করছেন, এবার খেসারত দেবার পালা। দিদি কিন্তু দমবার পাত্র নন, মিডিয়ায় দেখলাম বাংলাদেশ বর্ডার সংলগ্ন মুসলিম এলাকায় ভোট বেড়েছে জ্যামিতিক হারে? ওগুলো দিদি’র ভোট! ওপার থেকে দিদি’র ভোট আসছে, এজন্যে হয়তো পশ্চিমবঙ্গে আজকাল প্রায়শ: বাংলাদেশী জঙ্গী ধরা পড়ছে? বাংলাদেশে শেখ হাসিনা জঙ্গী নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছেন, ফলে জঙ্গীরা পালিয়ে দিদি’র কোলে আশ্রয় নিচ্ছে, দিদি’র প্রশ্রয়ে পশ্চিমবঙ্গ ‘জঙ্গীদের অভয়ারণ্য’ হতে আর কত বাকি? বাঁচার একটাই উপায়, দিদিকে ‘বাই-বাই’ জানানো। নূতনকে স্বাগতম বলা।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test