E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কোন আপোষই মানা হবে না

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০১ ১১:০৭:৪৮
কোন আপোষই মানা হবে না

স্বপ্নচারী আসিফ : যুদ্ধাপরাধী আব্দুল আলীম গতকাল পটল তোলার পর থেকে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখলাম। এক সুশীল সুবিধাবাদী কিছু মিডিয়া হারামজাদাকে অনেক দাম দিয়ে নিউজ করছে। আর অপর দিকে অনেক সহযোদ্ধা একটা যুদ্ধাপরাধীর স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য ক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

আমার ব্যাক্তিগত দৃষ্টিকোন থেকে দুইটা প্রতিক্রিয়াই কেন যেন মানতে কষ্ট হচ্ছে। প্রথম আসি মিডিয়ার কথায়। আজকাল আর সুবিধাবাদী মিডিয়া নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। রুচিতে বাধে। দুই কূল রক্ষা করে চলা যে কতো ভয়ঙ্কর তা হয়তো একদিন এরা ঠিকই বুঝবে। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রমানিত এবং দন্ডিত কোন পশুর যে কোন নিউজ প্রচারের বেলায় যে যুদ্ধাপরাধী সম্বোধনটা ব্যাবহার বাধ্যতামূলক তা এদের জানা উচিৎ। ট্রাইব্যুনালের এই ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ।

আর দুই আমাদের ক্ষোভের কথায় আসি। হ্যা আমি নিজেও কিছুটা ক্ষুব্ধ তবে কিছু মানুষের মতো হতাশ বা লোক দেখানো ক্ষুব্ধ নই। কেননা আলীমের যুদ্ধাপরাধ আজ প্রমানিত। সে যে একটা মানবতাবিরোধী নরপশু তা আজ সবাই জানে। পশুটা মরেছে যুদ্ধাপরাধীর সিল মাথায় নিয়ে। তার শাস্তিটা কিন্তু ছিল আমৃত্যু কারাভোগের। এখন কথা হতে পারে আপিলেড ডিভিশনে তার মামলার কি হবে। সেখানে আমাদের দাবি আপিলেড ডিভিশন যেন ট্রাইবুনালে প্রমানিত যুদ্ধাপরাধীর সিলটা আলীমের মাথায় বহাল রাখে।

তাহলে কথা আসতে পারে আমাদের লড়াইটা তো ছিল সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তির। এখন তাহলে কেন আলীমের যাবজ্জীবন কারাদন্ড মেনে তার মৃত্যু কে সহজে গ্রহণ করা হবে। আমার অবস্থান এখানেও পরিষ্কার। কোন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুকেই সহজে গ্রহণ করা যায় না। তবে মনে রাখতে হবে ৪৩ বছরের প্রতিক্ষার পর এই বিচার হচ্ছে। এই দেড়ি করে বিচার কাজ শুরু করার দোষটা আমাদের কাধে নিতে হবেই। ৭৫ এর পটপরিবর্তনের পর তো কেউ একটা আওয়াজও করেনি। শাহ আজিজের মতো রাজাকার আর এই আলীমকেই তো মন্ত্রী মেনে নিয়েছিলেন। তখন কেন এর প্রতিবাদ করলেন না।

আমাদের বয়স কম। আপনাদের মতো বুদ্ধিমান, আন্দোলনকারী বা আপোষ-আঁতাতের কিছুই বুঝি না। শুধু জানি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চলে নির্দিষ্ট আইনের ভিত্তি। কোন সেনাবাহিনীর কালা কানুনে না যে যখন ইচ্ছা যাকে তাকে ফাঁসি দেওয়া যায়।

এখন তাই বলে কি চুপ করে থাকব? না, কখনোই না। আমরা আমাদের দাবিতে অটল থাকব। সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। কোন হারামজাদা যদি মারাও যায় তাও তার মরনোত্তর বিচারের ব্যাবস্থা করতে হবে।

আর অবশ্যই সব যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিই চাই। কেননা এই পুরো বিচারটার সাথে মিশে আছে আমাদের আবেগ, ইতিহাসের দায়। এখানে আপোষের কোন জায়গা নেই। কোন আপোষই মানা হবে না। উপরওয়ালা না করুক যদি উল্টাপাল্টা কিছু হয় তাহলে পিয়াল ভাইয়ের ভাষায় বলে দিতে চাই :
'আমার সৃষ্টিকর্তার কসম, প্রতিটা যুদ্ধাপরাধী মারা যাবে, তাদের খুজে খুজে হত্যা করা হবে। নতুন প্রজন্ম একদমই বোকা না, তাদের সাময়িক বিভ্রান্ত করা যায় বটে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বোকা বানানো যায় না। ভাদা খতমের নামে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধপন্থীদের খতমের তোড়ে তারা হাততালি দিয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলবে এই আশায় গুড়ে বালি। দশ ইঞ্চি ইট দিয়ে থেতলে মারা হবে যুদ্ধাপরাধীদের। কোনো উঠতি যুবক দৌঁড়ে এই কাজটা করবে। কোনো বোন হয়তো তার ওড়না নিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে মারবে এসব হায়েনাদের। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লাখ বীরাঙ্গনার কসম। আমি যদি সঙ্গী হতে ব্যর্থও হই, রাস্তায় ঠিকই নামবে মৃত্যুঞ্জয়ীরা, যুদ্ধটা শেষ করবেই। জয় বাংলা।''

লেখক : ছাত্র, ব্লগার

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test