E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা হাসিনাকে উৎখাত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০৬ ২৩:১২:৩৪
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীরা হাসিনাকে উৎখাত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত

শামীম এইচ চৌধুরী : বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশকে যখন বঙ্গবন্ধু গুছিয়ে সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানান বঙ্গবন্ধু এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সাহায্য আসতে শুরু করে। শুরু হয় বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এক নতুন যুদ্ধ। এরই মধ্যে সক্রিয় হয়ে ওঠে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে রাজনৈতিক অস্থিতশীলতা সৃষ্টি করতে উঠে পড়ে লাগে এই চক্রটি। ঠিক তখনি এই পাকিস্তানি ও মার্কিনীরা ষড়যন্ত্র শুরু করে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নপুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। সেই ষড়যন্ত্রের বলী হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে এই জাতিকে অভিভাবক শূন্য করা হয়। শুরু হয় দেশ ধ্বংস ও দেশের ইতিহাস ধ্বংসের হলি খেলা।

স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ থেকে তারা স্বাধীনতার চিহ্ন টুকুও মুছে দিতে ছেয়ে ছিল, যার কারনে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে সময় লেগেছিল ২১ বছর। বহু চড়ায় উথ্রায় পার করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি যখন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে, ঠিক তখনি সেই ষড়যন্ত্র কারী কচক্রী মহল নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু করে। শুরু হয় তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মানস কন্যা, বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত, বাংলাদেশের মানুষে্র আশা - ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য তনয়া্ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ও আর্থিক সহযোগিতায় জঙ্গি গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ। ষড়যন্ত্র শুরু করে তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার।

১৯৯৬ থেকে ২০০১, বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নপুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া্ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কিছু নমুনা :

১। ৭ মার্চ, ১৯৯৬, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের জনসভা শেষে ফেরার পথে ছাত্রদল ও ফ্রিডম পার্টির ক্যাডাররা কার্জন হল থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে।

২। ১৯৯৭ সালের ৬ জানুয়ারী ২৩ রাউন্ড গুলি ও রিভলবার নিয়ে রমনায় জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল থেকে আনিসুল বারি নামে এক জঙ্গি সংগঠনের সদস্য গ্রেফতার হয়। লক্ষ্য ছিল নেত্রীর উপর গুলিবর্ষণ।

৩। ১৯৯৭ সালের ৩০ জানুয়ারী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনা করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা একটি ইফতার পার্টি থেকে যুব কমান্ডের ১৭ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া সূত্রের ভিত্তিতে অস্ত্র, বোমা ও গুলি উদ্ধার হয়।

৪। ২৬ এপ্রিল, ১৯৯৯, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বোমা হামলা করা হয়।

৫। ২০ জুলাই, ২০০০, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজির বোমা পুতে রাখা হয় যা গোয়েন্দারা সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এ বোমা বিস্ফোরিত হলে নেত্রীসহ সমাবেশে উপস্থিত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হতো।

৬। ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০০,সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী বক্তব্য দেয়ার সময় বোমা হামলা হয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে থাকা দুজন নিহত হয়।

৭। ২৯ মে, ২০০১, খুলনার রূপসা সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানস্থলে বোমা পুতে রাখা হয় যা গোয়েন্দারা সনাক্ত করে।

২০০১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্রের ফল প্রহসনের নির্বাচন, ভোট জালিয়াতি করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্রের শেষ নেই, তখন তারা আরো মরিয়া হয়ে উঠে, শুরু করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের নেতা কর্মীদের নির্বিচারে হত্যা। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্র। দেশে শুরু হয় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজত্ব।

তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কিছু নমুনা :

১। ৪ মার্চ, ২০০২, খুনি ফারুকের এক আত্মীয় নওগায় এক কর্মসূচিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে।

২। ২৯ আগস্ট, ২০০২, সাতক্ষীরার কলারোয়াতে জননেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায় জামাত-শিবিরের সশস্র ক্যাডাররা।

৩। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০২, বরিশাল ফেরিঘাটে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আলীগ নেতৃবৃন্দের উপর হামলা চালানো হয়।

৪। ২ এপ্রিল, ২০০৪, গৌরনদীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা।

৫। ৫ জুলাই, ২০০৪, জননেত্রী শেখ হাসিনা তুরস্কে অবস্থানকালীন সময় কয়েকজন জঙ্গি প্রাণনাশের হুমকি দান করে। তুরস্ক সরকারের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করলে হামলা থেকে রক্ষা পান।

৬। ২০০৪ সাল, ভয়াল ২১শে আগস্ট এর গ্রেনেড হামলা।

দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, টেন্ডারবাজ ও কুচক্রী মহলের হাত থেকে রক্ষার জন্য রাষ্ট্র ক্ষমতায় আবারো আসে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। দেশকে যখন উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী ও বিশ্বের মাঝে সুনাম অর্জন করে, সামুদ্রিক সীমা নির্ধারিত হয়,

১। ১২ই জানুয়ারী, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শান্তি, নিরস্ত্রীকরন এবং উন্নয়ন এর জন্য তার নিরন্তর সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়। ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।

২। শিশুমৃত্যুর হার ৫০% কমিয়ে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারকে ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০ সালে এই স্বীকৃতি প্রদান করে। জাতির পক্ষ থেকে এই পুরস্কার গ্রহন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৩। ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালে জাতিসংঘ অর্থনীতি কমিশন (আফ্রিকা), জাতিসংঘ স্থায়ী মিশন (Antigua and Barbuda), আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন, এবং সাউথ-সাউথ নিউজ যৌথভাবে শেখ হাসিনাকে এই পুরস্কার প্রদান করে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নসাধনের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

৪। ৬ ডিসেম্বর, ২০১২ সালে, তাঞ্জানিয়ায় অনুষ্ঠিত GAVI alliance Partners Forum এ বাংলাদেশকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। টীকাদান কর্মসূচীতে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য অন্য ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

৫। ৮ই জুন, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে রোটারী ইন্টারন্যাশনাল এর তরফ থেকে রোটারী শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়। দেশে-বিদেশে শান্তির জন্য তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

৬। ১৩ই জুন, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই পুরস্কার গ্রহনের জন্য আমন্ত্রণ জানান জাতিসংঘ খাদ্য এবং কৃষি সংস্থা (FAO) এর ডিরেক্টর জেনারেল হোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভা। ২০১৫ এর অনেক আগেই ক্ষুধার হার্ অর্ধেকে নামিয়ে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্যে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

এছাড়াও দেশ ও জাতির উন্নয়নে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, দুর্নীতি দমন, স্বাধীন বিচার বিভাগ , মানবতাবিরধী অপরাধী রাজাকারদের বিচার, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মাঝে ডিজিটালের ছোঁয়া পোঁছে দেওয়া।

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের হোতারা এখন হাসিনাকে উৎখাতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

আসুন যারা এখন ও আমাদের এই স্বাধীন সোনার বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই, তাদের চেহারা দেশ জাতি ও বিশ্বে দেখিয়ে দেই, তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলি।

দেশ ও জাতির স্বার্থে গণপ্রজাতন্ত্রী বংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মানস কন্যা, বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত , বাংলাদেশের মানুষে্র আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য তনয়া্ জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাড়াই।

লেখক : সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test