E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বাসভাড়া, দ্রব্যমূল্য, রোহিঙ্গা : সংখ্যালঘু : সর্বত্রই সাফল্য!

২০২১ নভেম্বর ৩০ ১৫:১৪:২৫
বাসভাড়া, দ্রব্যমূল্য, রোহিঙ্গা : সংখ্যালঘু : সর্বত্রই সাফল্য!

রণেশ মৈত্র


দু’তিন সপ্তাহ বা মাসখানেক আগে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা হঠাৎ করেই সরকার বাড়ালো সম্পূর্ণ বিনাকারণে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানী তেলের দাম দ্রুত নিম্নমুখী জেনেও। যা হোক সবাই মিলে দাবী জানান হলো তেলের দাম কমানোর। কে শোনে কার কথা।

হুশিয়ারী দিলেন পরিবহন মালিক শ্রমিকরা অবিলম্বে মূল্যবৃদ্ধি প্রতাহার না করলে বাংলাদেশে কোন পরিবহন চলবে না। পরিবহন অর্থাৎ যাত্রী ও পণ্য সকল রকম পরিবহনেই বন্ধ করে দেওয়া হলো অনিদিষ্টকালের জন্য। দেশের ভয়াবহ অচলাবস্থা সব কিছু স্থবির অচল জনজীবন বিপর্য্যস্ত।

দ্রব্রমূল্য সিন্ডিকেট এ সুযোগ ছাড়বে কেন? তারা পরিবহন সংকটের অভিযোগে তেল, নূন, চাল, ডাল শাক সবজী, মাছ মাংস প্রভৃতি সহ কিছুরই দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিলো। মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী মালিক শ্রমিক সমিতির নেতাদেরকে বৈঠকে ডাকলেন নির্দিষ্ট দিন ও সময় দিয়ে। সমিতির নেতাদের জানালেন তাঁরা ঐদিন বসবেন না পরদিন বতে রাজী। মন্ত্রী মহোদয় তাতেই সম্মত। পরদিন বৈঠক খানা-পিনা সব হলো। মালিক শ্রমিকরা ভাড়া যে পরিমাণ বৃদ্ধির দাবী জানালোন, বুঝিয়ে সুঝিয়ে মন্ত্রী মহোদয় তার কিছু কমে রাজী করালেন। ভাড়া বাড়ালো। বাড়লো সব কিছুরই। ডিজেল চালিত নয় এমন যানবাহন (গ্যাস চালিত) এর সংখ্যা প্রায় সমান সমান। সুযোগটি ছাতছাড়া না করে তাঁরাও সমভাবে ভাড়া বাড়ালেন একই সাথে। যেমন ডাকাতি তাও আবার দিনে দুপুরে এবং সর্বত্র।

সরকার গ্যাস চালিত পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি না করতে বললেন। মালিকেরা বৃদ্ধাঙ্গলি দেখালো। ডিজেল চালিত পরিবহন মালিকেরা সরকারের কাছে স্বীকৃতি মতে না বাড়িয়ে অনেক বেশী বাড়ালেন তাদের পরিবহনের। সরকার হুঁশিয়ারী জানাল। এটাও অমান্য হলো। বসানো হলো মোবাইল কোর্ট। তাঁরা বাড়তি ভাড়া নেওয়া জরিমানা দিল কিন্তু ভাড়ায় পরিবহন চালানো অব্যাহত রাখলো।

মানুষের পকেট কাটা যাচ্ছে কিন্তু তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকার ও মালিকদের ডবল লাভ হচ্ছে। বিশ্ব কমদামে কিনে বেশী দামে বিক্রী করায় আগের তুলনায় বেশী লাভবান হচ্ছেন এবং হতেই থাকবেন কারণে এদেশে দাম একবার বাড়লে তা সরকারই হোক বা ব্যবসায়ীই হোক আর কমান না। পরিবহন মালিকেরা সরকারের সাথে আলাপ করে একদফা ভাড়া বাড়ালেন আর একে দফা তার উপর নিজেরা বাড়ালেন। মন্ত্রী মহোদয়েল হুমকি ও মোবাইল কোর্টের কাজও চলছে। তেলের দাম বাড়া কতই না সুযোগ সৃষ্টি করলো। মাননীয় সড়ক মন্ত্রী সরকারও মলিক সকলের কাছেই ধন্যবাদই।

দ্রব্যমূল্য

এই একটা ব্যাপার যার কোন বাপ-মা নেই নেই কোন অভিভাবকও। পরিবহনের দ্বিগুন বাড়লো দ্রব্যমূল্য তিনগুন। দেশে বৃষ্টিপাত হলো দ্রব্যমূল্য বাড়ানো হলো বৃষ্টির অজুহাতে। দেশে খরা হলো দ্রব্যমূল্য বাড়ানো হলো সেই অজুহাতে। ভারত রফতানি বন্ধ করলো পেঁয়াজ কাঁচামরিচের দাম দিগুন বাড়লো। সরকার তেলে দাম (খারাপ তেল) লিটারে পাঁচ টাকা বাড়ালো ব্যাসায়ী সিণ্ডিকেট সেই সুযোগে আরও ১০-১৫ টাকা বাড়িয়ে দিল।

এ ব্যাপারে একজন মন্ত্রী আছেন। বাণিজ্য মন্ত্রী। তিনি বলেন, মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানী ট্যাক্স কমানো হলো। ব্যাবসায়ী সিণ্ডিকেট দাম আরও বাড়লো। সরকার বললো টিসিবি সারা দেশে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রী চালু করবে বাজারে সব কিছুর দাম স্থিতিশীল রাখতে। টিসিবির ঐ ট্রাকের সাক্ষাত জনগণ পায় না ট্রাকগুলি কোথা দিয়ে কখন যায় আসে তাও কেউ জানে না। সম্ভবত: বৃহৎ ব্যবসায়ীরা ট্রাকগুলিকে পণ্য কিনে খালি করে দিয়ে নিশ্চিন্তে লাভেল মাত্রা বাড়াতে থাকেন।

কৃষিপণ্য

দ্রব্যমূল্য তো শুধু আমদানী করেই দেশেল চাহিদা মেটানো হয় না তার বড় অংশ দেশেই উৎপাদিত হয়। এ দফতর আবার কৃষিমন্ত্রী । তিনি অহরহ বলে থাকেন বাংলাদেশ খাদ্য পণ্য উপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এমন কি বেশ কিছু পন্য বিদেশেও রফতানি করা হয় দেশেল চাহিদা মিটিয়ে। যেমন চাল, মাছ প্রভৃতি। দেশের কাদের চাহিদা মেটানো হয় কেউ জানে না। কারণ চালের দাম তো হু হু করে বাড়ছে। মাছের মাদও। ভুগছে মানুষ লাভবান সরকার কৃষিতেও। ডাল, তরীতরকারী, শাক সবজীর দাম শীতকালেই কম তাকে। কিন্তু এবার? এবার ঠিক উল্টোটা। এবার বেড়েছে আজও বাড়ছে কৃষিপণ্যের দাম সকল নিয়মনীতি লংঘন করে। মন্ত্রী আছেন তাঁর বিশাল কর্মী বাহিনী আছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজে বা খাঁটি জিনিষ বিক্রীর কাজ দেখাশুনা করতে কাউকে কখনও দেখা যায় না। মন্ত্রীমহোদয় ঢাকায় থাকেন-সংবাদ সম্মেলন করেন ট্যাক্স কমান-ট্যাক্স বাড়ান। ব্যস। জনগণ ভুগছে ভুগুক।

রোহিঙ্গা সমস্যা

দীর্ঘ দিনের এই সমস্যার সমাধানের দাবী সকলেরই এবং তা দীর্ঘ দিনের। একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা সর্বস্ব হারিয়ে দেশ ছাড়তে এবং সবৃাধিক নিকটবর্তী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। বর্বর মিয়ানমার শাসকেরা জঘন্য সাম্প্রদায়িক মনোভাবে তাড়িত হয়ে লক্ষ লক্ষ অসহায় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকৃতি জানাল। তাদের দাবী, রোহিঙ্গারা বাংলা ভাষায় কথা বলে, বাঙালির মতই তাদের জীবনাচরণ, তাই তারা বাংলাদেশী। কিন্তু উত্তর দিতে ঐ শাসক গোষ্ঠী অপারগ যদি তারা বাংলাদেশের নাগরিকই হয় তবে তাদের জমি-জমা, বাড়ীঘর, প্রার্থনা গৃহ, স্কুল-কলেজের পড়াশুনা কিবাবে শত শত বছর ধরে পূর্ণ স্বীকৃতি নিয়ে বসবাস করলো। উগ্র ধর্মান্ধ বৌদ্ধ শাসকেরা বস্তুত: দেশটাকে রোহিঙ্গা শূন্য করে তাদের বাড়ীঘর, দোকান-পাট, সহায়-সম্বল দখল করার লক্ষ্যে তাদেরকে উচ্ছেদ সাধন করেছে-যা একবিংশ শতাব্দীর সকল নৃশংসতা-সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। এই রোহিঙ্গাদের মধ্যেও উগ্রবাদীর অস্তিত্ব ছিল যারা ‘আরসা’ নামে সংক্ষেপে পরিচিতা মিয়ানমারের শাসকদেরকে তারাও নানা হঠকারিতা দ্বারা তাদের বিরোধী করে তুলেছিল। সেই সময় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে বসে ‘আরসার’ অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নানা ক্যাম্পে খুনাখুনি পর খলির বিড়াল বেরিয়ে আসে। যাতে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে না চায় তাই প্রত্যাবর্তনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গা নেতাদেরকে হত্যার অভিযান সুরু করে। বাংলাদেশের পুলিশও আরসাব অস্তিত্ব স্বীকতার করে এবং ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে রোহিঙ্গাদের নানা ক্যাম্প থেকে চোরাই অস্ত্র, মাদক, ইয়াবা প্রভৃতি উদ্ধার করে। কজেই পরিস্থিতি জটিল। কয়েক মাস আগে জাতিসংঘ বলেছিল রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশী নাগরিকের মত জমি কেনাবেচা, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিয়ে-সাদী এবং বাংলাদেশী পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার পায় তা দেখা উচিত। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং এই তথ্য প্রকাশ করেছিলেন।

ইদানীং ঐ জাতিসংঘ সর্ব সম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এগিয়ে আসতে মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে। তদুপরি আসিয়ানও দিন কয়েক আগে অনুষ্ঠিত তাদের সভারও অনুরূপ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছে। পৃথিবীব্যাপি, বাংলাদেশে তো বটেই, এর ফলে যথেষ্ট আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের উপর এতে অতীতেরর যে কোন সময়ের চাইতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে-কিন্তু এত কিছুর পরেও মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জাঙ্গা দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সর্বসম্মত প্রস্তাব এবং তাদের এতদিনকার দৃঢ়সমর্থক চীন ও রাশিয়াও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার পরেও আজ (২৯ নভেম্বর) পর্য্যন্ত তাদের মুখ না খোলায় সকল মহলেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশেল আন্তর্জাতিক কূটনীতিও এযাবত কোন সাফল্যের আলো দেখাতে পারে নি।

অপরদিকে সমগ্র রোহিঙ্গা একাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে নানা বিপদাশংকার প্রতীক। সেখানে চোরাকারবারী অত্যন্ত ব্যাপক এবং তা ছাড়াও নানা বে-আইনী পন্থায় অনেকে বাংলাদেশ জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট প্রভৃতি সংগ্রহ করে এদেশে নানা কিছুর মালিকানা অর্জন করেছে।

এ ব্যাপারগুলি ঘোর দায়িত্বতো পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। ব্যর্থতার কারণে তাদের মুখ খুলতে দেখা যায় না। আরসা প্রতিরোধে ও নির্মুলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাফল্যও সন্দেহমুক্ত নয়। তবুও চলছে এদেশ মন্ত্রণালয়গুলির দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রীরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। মারাত্মক অসুবিধা ভোগ করছেন আজ কয়েকটি বছর ধরে কক্সবাজার, রাঙামাটির আদি বাংলাদেশী বাসিন্দারা। তাঁরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন, রোহিঙ্গাদের চাপে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিমাল সৌন্দর্য্যময় ঐ এলাকার পরিবেশও নিরাপত্তা এতটাই বিপন্ন হচ্ছে যে বিদেশী পর্য্যটকরাও আসতে দ্বিধা বোধ করছেন। ওখানকার হোটেল শিল্প, পরিবহন শিল্প প্রভৃতি হচ্ছে বিপর্য্যস্ত বাংলাদেশের বিদেশী মুদ্রা অর্জনও হচ্ছে চরমভাবে বিঘ্নিত।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু

এই একটি সম্প্রদায় আজ নানা অত্যাচারে জর্জরিত। দুর্গাপূজার শুরুতে নতুন করে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয় তখন রীতিমত সোরগোল উঠেছিল। প্রতিবাদ অতীতেও হয়েছে কিন্তু ক্ষীনকণ্ঠে যা সকলেই দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। কিন্তু এবারে কুমিল্লা দুর্গামন্দিরে ঘটনার পর পরই তা যেভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লো তা পাকিস্তানী আমলকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে আশার কথা, এবারে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে দেশব্যাবী সাংবাদিকেরা লিকেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ দেশব্যাপী সমাবেশ ও মানবন্ধনের আয়োজন করেছে শিল্পী, সাহিত্যিক প্রমুখরা সদলবলে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, নানা বিরোধী রাজনীতিক দল মিছিল করেছে-সরকারী দলও একদিন মিছিল সমাবেশ করেছে।

প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনাবলীতে যারাই দায়ী তারা দলেরই হোক আইন তাদের রেহাই দেবে না-সকলেই কঠোরভাবে শাস্তি পাবেন। অত:পর নানাস্থানে কতিপয় গ্রেফতারের খবর এলো কিন্তু সে সময়কার সংগঠিত, পূর্ব পরিকল্পিত পরিকল্পনাগুলির কোন সুরাহা না হতেই বহু বিচ্ছিন্ন ঘটনা দেশের নানা অঞ্চলে ঘটে চলেছে। অনেক মন্দিরে সন্দেহভাজন লোকজনের আনাগোনা দেখে পুলিশ প্রহরায়ও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু কথাতো ছিল দ্রুত তদন্ত শেষ করার, দ্রুত চার্জশীট প্রদানের এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অভিযুক্ত সকলের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে উপযুক্ত শাস্তি বিধানের। কোথায় সেই দ্রুততা? কোথায় সেই কঠোরতা? ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও তো সরকারি দলের তরুণদেরকেও এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বলে জানা যাচ্ছে।

তবে কি আবারও ২০০১ সালের সংখ্যালঘু নির্য্যাতনের মত পরিণাম আবারও ঘটতে চলেছে?

যা হোক, আমরা ভালই আছি
মাননীয় মন্ত্রীরা দীর্ঘজীবী হোন।

লেখক : সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক।

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test