E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বহুদর্শী মানবিক নেতা ও বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা

২০২৩ এপ্রিল ৩০ ১৫:১১:৩৪
বহুদর্শী মানবিক নেতা ও বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা

মোহাম্মদ ইলিয়াছ


শেখ হাসিনার মতো দূরদর্শী নেতৃত্ব আছে বলেই বাংলাদেশ আজ সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে। একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সারাক্ষণ দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বদা কাজ করে চলেছেন। তিনি অসীম সাহসিকতায়  সব বাধা অতিক্রম করে মানবতার সেবায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে যিনি ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপদান করে চলেছেন। ক্ষমতার উচ্চ আসনে অবস্থান করেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গরিব-দুঃখী, খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবছেন ও তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। “আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে, আমি শাসক নই, মানুষের সেবক। জনগণের সেবা ও কল্যাণ করাটাকেই আমি সব থেকে বড় কাজ বলে মনে করি। সেই ব্রত নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি।” সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজের অবস্থান পুনরায় এভাবে তুলে ধরেন। তার এ অবস্থান একদিনে সৃষ্টি হয়নি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে, অবিরাম মানুষের পাশে থেকে শোষকের সঙ্গে আপোস না করে নিজের এমন ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন; যা তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। সেই বাস্তবতা তুলে ধরা বর্তমান অবশ্যই প্রাসঙ্গিক।

এক নাগাড়ে টানা তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে চলছেন। বর্তমান বৈশ্বিক এই দুর্যোগেও সারা বিশ্বে তিনি শুধু মানবিকতার গুণে হয়ে উঠেছেন অনন্য। আপন মহিমায় শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা, হিমাদ্রিশিখর সফলতার মূর্তস্মারক, উন্নয়নের কান্ডারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে করোনা সংকট মোকাবিলা করে দেশ আজ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বিশ্বের বিস্ময়। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির রোল মডেল, আর উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে শেখ হাসিনার নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন। শেখ হাসিনার মতো দূরদর্শী নেতৃত্ব আছে বলেই বাংলাদেশ আজ সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে। একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সারাক্ষণ দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বদা কাজ করে চলেছেন।

সব বাধা অতিক্রম করে মানবতার সেবায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে যিনি ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপদান করে চলেছেন। ক্ষমতার উচ্চ আসনে অবস্থান করেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গরিব-দুঃখী, খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবছেন ও তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতার ছোঁয়া দেশ ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পর্যায়েও স্থান করে নিয়েছে।

বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশটি উদ্যোগ নিয়েছেন। যা অত্যন্ত দর্শন সঞ্জাত ও আবেদনপূর্ণ– এক অর্থে ধ্রুপদী। এক. একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প দুই. ডিজিটাল বাংলাদেশ তিন. নারীর ক্ষমতায়ন চার. কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ পাঁচ. সবার জন্য বিদ্যুৎ ছয়. আশ্রায়ণ প্রকল্প সাত. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আট. শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম নয়. বিনিয়োগ বিকাশ এবং দশ. পরিবেশ সুরক্ষা।

দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে নিয়েছেন কার্যকরী পদক্ষেপ। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে কৃষি ও শিল্পসহ অর্থনৈতিক খাতগুলোতে সময়োপযোগী প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়। করোনায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেই রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের জন্যই পররাষ্ট্রনীতিতে নিজ দেশের মর্যাদা সমুন্নত রেখে কি প্রতিবেশী, কি ক্ষমতাধর রাষ্ট্র সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখেই বাংলাদেশ উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশে তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নেতৃত্বে এখন শেখ হাসিনার অবস্থান সবার শীর্ষে। দক্ষিণ এশিয়া তথা সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত যা পারেনি; বাংলাদেশ তা করে দেখিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকদের জন্য শেখ হাসিনা একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব। তিনি দেশ-বিদেশের নেতাদের কাছে এখন আস্থা ও ভরসাস্থল।

দুঃসময়েও জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য আবারও মানবিক সহায়তা নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতি দরিদ্র, কর্মহীন, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক এবং কৃষকসহ মহামারির ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্প-আয়ের মানুষের জন্য মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

তিনি ‘বয়স্ক ভাতা’, ‘বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা ভাতা’, ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ভাতা’, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’, ‘গৃহায়ন’, ‘আদর্শ গ্রাম’, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ কর্মসূচিসহ অনেক মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তার নেতৃত্বে কৃষক, ভূমিহীন ও দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।

তার উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি হয়েছে, যা মানবিক চেতনার বাংলাদেশকে নতুন দিগন্ত দিয়েছে। এ চুক্তির ফলে ১৯৯৮ সালে তিনি অর্জন করেছেন ইউনেস্কোর ‘হুপে-বোয়ানি শান্তি’ পুরস্কার।
অসহায়, এতিম, বৃদ্ধ, নারী, শিশু, কবি-সাহিত্যিকদের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি ও বিভিন্ন কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় তিনি বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়কের স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার নির্দেশে সরকারি খরচে ৯ লাখ ঘরহীন পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী হলেও শেখ হাসিনা আসলে সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র মানুষের কণ্ঠস্বর।’বিশ্বের অন্যতম সৎ, দক্ষ ও সেরা প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতিসহ শেখ হাসিনা অর্জন করেছেন পঞ্চাশের অধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও পদক। তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০০ জন বুদ্ধিজীবী এবং ১০০ জন প্রভাবশালী নেতার অন্যতম। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ‘মাদার তেরেসা’ পদক, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ‘সেরেস পদক’, ইউনেস্কোর ‘শান্তিবৃক্ষ পুরস্কার’, জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ পুরস্কার’, ‘ডটার অব ডেমোক্রেসি’ পদকসহ তিনি অর্জন করেছেন অনেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

তিনি পেয়েছেন The voice of the Vulnerable , ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’, ‘মানবতার চ্যাম্পিয়ন’, ‘বিশ্বমানবতার নেতৃত্ব’ ও ‘সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক নেতা’র উপাধি। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকারপ্রধান ‘সততার টাইটেল’ বা ‘সৎ শাসকে’র স্বীকৃতি পাননি।

উপরন্তু, শেখ হাসিনার নিয়মানুবর্তিতা, জীবনদর্শন-আদর্শ ও ব্যক্তিগত সংস্পর্শে অনেক নেতাকর্মী ও আমলা সৎ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়েছেন। শেখ হাসিনাই হচ্ছেন দেশের একমাত্র নেতা, যিনি বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে জয়ী হয়েছেন-প্রিয় বাংলাদেশকে জয়ী করেছেন।

শেখ হাসিনার মানবিক কর্মকাণ্ড বহির্বিশ্বে বেশি প্রচারিত হয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে। অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটি ২০১৭ সালে তাকে ‘মানবতার চ্যাম্পিয়ন’ হিসাবে বিবেচনা করেছে। পোপ ফ্রান্সিস এবং বিল গেটসকে পেছনে ফেলে ২০১৭ সালে বিশ্বের সেরা মানবিক নেতা মনোনীত হয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে ব্রিটিশ মিডিয়া ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ নামে আখ্যায়িত করেছে তাকে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ‘শেখ হাসিনা : দ্য মাদার অব হিউম্যানিটি’ শিরোনামে স্টোরি করেছে ইউরোপের ম্যাগাজিন ‘ডিপ্লোম্যাট’। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে ঢাকা সফরে এসে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ মানবিক রাষ্ট্র। এমন মানবিক বাংলাদেশের পাশে সুইজারল্যান্ড সবসময় থাকতে চায়।’

শেখ হাসিনা ব্যক্তিজীবনেও মমতাময়ী, দয়াশীল, নীতিবান ও ধার্মিক। অনেক এতিম, অসহায়, দুর্গত, দুর্ঘটনায় পতিত এবং পথশিশুদের মায়ের দায়িত্ব নিয়ে তিনি মানবিকতার মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন, ‘দারিদ্র্য নিরসনে আমার সরকার নিজস্ব উদ্ভাবিত সমাধানের ওপর বিশ্বাসী।’ সীমিত সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা, সর্বোচ্চ উপযোগ গ্রহণ নিশ্চিত এবং ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টনে শেখ হাসিনার সফলতা যুগান্তকারী।

১৭ অক্টোবর ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যবিমোচন দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের উন্নয়নের একটি মানবিক অবয়ব রয়েছে। দারিদ্র্য ও ঝুঁকির মধ্যে থাকা জনগোষ্ঠীর জীবন-মানের উন্নয়ন আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অন্যতম নিয়ামক হিসাবে ভূমিকা পালন করেছে।’

শেখ হাসিনার প্রদত্ত ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব জাতিসংঘের অধিবেশনে ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের সমর্থনে গৃহীত হয়েছে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর।

সরকার শুধু রাষ্ট্রের মুখপাত্রই নয়, রাষ্ট্রের রূপকারও। সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের নীতি-আদর্শ ও বৈশিষ্ট্যের কারণেও রাষ্ট্রের ধরন বা শ্রেণি-বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত হয়। শেখ হাসিনা এ সময়ের প্রধান কথক, প্রভাবশালী নিয়ামক, জীবন্ত এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশের স্থপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হয়েও এবং নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়েও সহজ-সাধারণ বাঙালি নারীর মতো বিলাসিতাহীন জীবনযাপন করেন শেখ হাসিনা।

তার শাসনামলে রাষ্ট্র ও সরকারের পরিধি ও কার্যাবলি বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে এবং সমাজজীবনের পূর্ণতার জন্য রাষ্ট্র স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এমন অনেক কার্যাবলি সম্পন্ন করেছে, যা দারিদ্র্যবিমোচনের পাশাপাশি একটি মানবিক রাষ্ট্রের ধারণাকে সমুন্নত করেছে। তার ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নয়ন তত্ত্ব বিশ্বকে নতুন দিগন্ত দিয়েছে। এ দিগন্তকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করলে একটি মানবিক রাষ্ট্রের ধারণা উজ্জ্বল হয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানবিক রাষ্ট্রের ধারণা পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে এবং বাংলাদেশ হবে সেই রাষ্ট্র গঠনের বিশ্ব মডেল।

লেখক : সহকারী পরিচালক (অর্থ ও বাজেট), অবসর সুবিধা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test