E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ক্ষমতা বোধহয় বিএনপির কপালে জুটছে না?

২০২৩ মে ১০ ১৫:৪৫:২৪
ক্ষমতা বোধহয় বিএনপির কপালে জুটছে না?

শিতাংশু গুহ


বিএনপি’র জন্যে বড় দুঃসংবাদ, দিল্লি-ওয়াশিন্টন-জাপান-ঢাকা এক লাইনে চলে এসেছে। ক্ষমতা বোধহয় বিএনপি’র কপালে জুটছে না? বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এ চিন্তা অবশ্য তাঁদের মাথায় ছিলোনা, যেটুকু ছিলো তা হলো, আমেরিকা এমন কিছু একটা করবে, যাতে তারা ক্ষমতায় না আসলেও আওয়ামী লীগ বিদায় হবে? ক্ষমতায় যাওয়ার চেয়েও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো বিএনপি’র মূল লক্ষ্য ছিলো। আওয়ামী লীগ তা জানে, তাই তারা আর যাই হোক, ক্ষমতা বিএনপিকে দিয়ে যাবেনা। বিএনপি’র জন্যে শুধু এটুকু বলা যায়, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের ক্ষমতায় যাওয়া দু:স্বপ্নই থেকে যাবে। 

বিএনপি সুষ্ঠূ ও অবাধ নির্বাচন চাচ্ছে, এটি সবাই চায়। তবে সুষ্ঠূ নির্বাচনের সংজ্ঞা সবার কাছে এক নয়! আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে যাদের মাথাব্যথা তাঁরা বিএনপি’কে চায়না। তাদের কাছে শেখ হাসিনা’র বিকল্প নেই? আওয়ামী লীগের বিকল্প বিএনপি নয়? শেখ হাসিনা’র বিকল্প খালেদা জিয়া নয়! এটিও সত্য ২০১৮’র মত নির্বাচন এবার হবেনা, নির্বাচনের পর বিশ্ব সুষ্ঠূ নির্বাচনে সার্টিফিকেট দেবে। শেখ হাসিনা ‘তাঁর সংজ্ঞামত’ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করবেন এবং পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসবেন। জনসমর্থন কমবেশি যাই হোক, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। এ বিষয়ে শেখ হাসিনাকে যথেষ্ট আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়।

এবারকার জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র সফর সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। জাপান তাঁকে লাল-গালিচা সম্বর্ধনা দিয়েছে। বেশ ক’টি চুক্তি হয়েছে যাতে মনে হয়, চীনকে ঠেকাতে বাংলাদেশ জাপানের সাথে হাত মিলিয়েছে। যেই রাষ্ট্রদূত ঢাকায় বসে বিএনপি’র পরামর্শমত বলেছিলেন যে, ‘দিনের ভোট রাতে হয়’ তিনি ওএসডি হয়েছেন। বর্তমান রাষ্ট্রদূত তো এনিয়ে কথাই বলতে রাজি হননি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক নিমন্ত্রণ করে ডেকে এনে ২.৪ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। আইএমএফ অন্যদের টাকা দেয়না, বাংলাদেশকে আগ্রহী হয়ে টাকা দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান আমেরিকার ইচ্ছায় চলে, আমেরিকা না চাইলে এসব ঘটতো না?

তাহলে কি আমেরিকা পক্ষে চলে এসেছে? সদ্য আমেরিকা বলেছে, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ইইউ বলেভহে, তাঁরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না? ঘটনা যাই হোক, নির্বাচনটি ২০১৮’র মত হবেনা, তা প্রায় নিশ্চিত। তাহলে কেমন হবে? সম্ভবত: সেটি এমুহুর্তে শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ জানেনা। এটুকু হয়তো বলা যায়, সব দলের প্রায় সকল নেতা এবার পার্লামেন্টে যাচ্ছেন। পার্লামেন্ট আবার সচল হবে। কথায় বলে ‘লোকের কথায় জয়, লোকের কথায় ক্ষয়’? দেশের মানুষ কিন্তু বলছে, নির্বাচন যেমনই হোক, কেউ পছন্দ করুন বা না করুন, শেখ হাসিনাই ক্ষমতায় থাকছেন।

আমেরিকার জন্যে চীনকে ঠেকানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা এতে রাজি। ভারতের জন্যে চীন ঠেকানো যেমনি দরকার, তেমনি ‘সেভেন সিষ্টার’ বা ‘চিকেন নেক’ রক্ষা ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা প্রমান করেছেন, একাজটি তিনি গত ১৪বছর বিশস্ততার সাথেই করেছেন। এবিষয়ে বিএনপি’র অতীত রেকর্ড যথেষ্ট কালিমাময়। গ্লোবাল রাজনীতিতে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শেখ হাসিনা আগে কিছুটা দোদুল্যমান থাকলেও এখন আবার ভারত-মার্কিন-জাপান বলয়ে চলে এসেছে।

অনেকদিন আগে লিখেছিলাম, ভারতের সাথে থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব, শেখ হাসিনা তা প্রমান করেছেন। এখন এটিও স্পষ্ট যে, দিল্লিকে পাশ কাটিয়ে ঢাকায় ক্ষমতায় আসা দুরূহ। চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের গুরুত্ব অপরিসীম, দিল্লিকে বাদ দিয়ে ওয়াশিংটন কিচ্ছু করবে না? দিল্লি পুরোপুরি শেখ হাসিনা’র পক্ষে, তবে কি দিল্লি’র সহায়তায় ওয়াশিংটন পুন্:মূষিক ভব? ঘটনা যাই হোক, অন্ততঃ এ মুহূর্তে বোঝা যাচ্ছে, শেখ হাসিনা আছেন, কোথাও যাচ্ছেন না।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test