E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট কাটবে কী?

২০২৩ জুন ১১ ১৬:০৮:৪০
বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট কাটবে কী?

মীর আব্দুল আলীম


খাদ্যগ্রহণ ছাড়া আমরা বেশ কয়েকদিন বাঁচতে পারলেও বিশুদ্ধ পানি ছাড়া কিন্তু বাঁচতে পারি না। আমরা কি বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি? ওয়াসা পানি, নীল জারের কিংবা বাজারের নামকরা কোনো প্রতিষ্ঠানের মোড়কে বোতলজাত ঠাণ্ডা পানি আমাদের জন্য কতটা নিরাপদ? নিরাপদ পানি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এদেশে। এমন পানি অনেকেই নিশ্চিন্তে পান করছি; যার ফলে বেড়ে যাচ্ছে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি। ডায়রিয়া, কলেরা ও আমাশয়সহ আরও অনেক জটিল ও কঠিন রোগের কারণ হতে পারে এই দূষিত পানি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, দূষিত পানি দীর্ঘদিন ধরে পান করলে হতে পারে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি। এসব পানি পান করে আমরা সুস্থ্য থাকব কি করে?

আমাদের শরীরের দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছে পানি। আর এজন্যই বলা হয় পানির অপর নাম জীবন। জীবন বাঁচাতে আমরা প্রতিনিয়তই যে পানি পান করছি তা যদি নিরাপদ না হয় জীবনতো সংশয় বটেই!বিশুদ্ধ পানি সব ধরনের মানবাধিকারের ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃত। এই অধিকারবরাবরই বাংলাদেশে লঙ্ঘিত হচ্ছে। গ্রাম, শহর,পাহাড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পানির দাবিতে রাস্তায় মিছিল নিয়েও নেমেছেন নাগরিকেরা। যে জনপদটি নদীমাতৃক বাংলাদেশ নামে পরিচিত, ফি বছর বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টি হয়; সেই জনপদে সুপেয় পানির সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও স্বীকার করতে হবে, দেশের বিভিন্ন জনপদে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়ে যায়, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে। সবার জন্য উন্নত উৎস থেকে পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবেতা কতটা সম্ভব হয়েছে?

মানুষের জন্য বিশুদ্ধ উন্নত উৎসের পানি সর্বরাহ এখনও সীমিত পর্যায়েই রয়েছে। মলের জীবাণু রয়েছে এমন উৎসের পানি পান করছে এদেশের ৪১ শতাংশের বেশি মানুষ। শহরাঞ্চলের যে পানি খাওয়া হয় তার এক তৃতীয়াংশেই উচ্চমাত্রার ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়া থাকে, যা ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ। উৎস থেকে বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহের সময় এতে আরও বেশি ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়া চলে যায়। পাহাড়ি এলাকা, শহর, বস্তি, দ্বীপাঞ্চল, উপকূলীয় ও জলাভূমিতে এই পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এসব জায়গায় বিশ্বাসযোগ্য পানির উৎস পাওয়া কঠিন। সব মিলিয়ে পুরোপুরি নিরাপদ পানি পানের সুযোগ এখনও সীমিত, মাত্র ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

সুপেয় পানির প্রাপ্তির সুযোগ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘ পানি অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হলেও এখনো এ অধিকার থেকে বঞ্চিত ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষ। তাই সুপেয় পানির অধিকার রক্ষা করা আজ জরুরি। না হলে সংকটাপন্ন এলাকাগুলো আরো বেশি ঝুকির মধ্যে পড়বে। ইউনিসেফের এক জড়িপ বলছে, চীনের ১০ কোটি ৮০ লাখ; ভারতের ৯ কোটি ৯০ লাখ ও নাইজেরিয়ার ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ সুপেয় পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে ইথিওপিয়ায় ৪ কোটি ৩০ লাখ; ইন্দোনেশিয়ায় ৩ কোটি ৯০ লাখ ও পাকিস্তানে ১ কোটি ৬০ লাখ সুপেয় পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের দেশেও আছে চরম সংকট। এখানে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ জনগোষ্ঠী পানি সংকটের মধ্যে জীবন যাপন করে। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ হয় পর্যাপ্ত পানি পায় না। বলা হচ্ছে, আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ ৯শ’ ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৭শ’ কোটিই পানির সমস্যায় পড়বেন। কাজেই এ সমস্যা মোকাবেলা করতে হলে পানির অপচয় রোধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

পানিতে আর্সেনিক একটা বড় সমস্যা। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক দূষণ আক্রান্ত মানুষের বসবাস বাংলাদেশে।অগ্রগতি সত্ত্বেও এক কোটি ৯৪ লাখ মানুষ এখনও সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে থাকা আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। এছাড়া পানিতে ম্যাঙ্গানিজ, ক্লোরাইড ও লৌহ দূষণের কারণেও খাওয়ার পানির মান খারাপ থাকে। বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ পানির উৎসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি মাত্রায় ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতি পাওয়া যায়। পাহাড়ি এলাকা, শহরের বস্তি, দ্বীপাঞ্চল, উপকূলীয় ও জলাভূমিতে বিশুদ্ধ পানি সর্বরাহ পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এসব জায়গায় বিশ্বাসযোগ্য পানির উৎস পাওয়া কঠিন। সারা দেশের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও হাইজিনের অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেগুলো থেকেও জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয় এবং তা নবজাতক ও মাতৃ মৃত্যু হার কমানোর অগ্রগতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশে ২০১৫ সালে যত নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে তার প্রায় ২০ শতাংশই হয়েছে জীবাণু সংক্রমণের কারণে। প্রতি পাঁচটি পরিবারের মধ্যে দুটি, অর্থাৎ বাংলাদেশের ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়া দূষিত উৎসের পানি পান করে। আবার ঘরের কল বা টিউব-ওয়েলের আশপাশ পরিষ্কার না থাকায় বিভিন্ন অণুজীবযুক্ত পানি পানকারীর সংখ্যা হয়ে দাড়ায় নয় কোটি ৯০ লাখ। এছাড়া ঘনঘন বন্যা, ভূমিধ্বস ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও পানির উৎস দূষিত হয়ে পড়ে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে শৌচাগার উপচে ময়লা ছড়িয়ে পানির উৎস দূষিত হয়ে পড়ে। শিল্পবর্জ্য, সেচের জন্য অতিরিক্ত পানি উত্তোলন এবং জমিতে লবণাক্ত পানির কারণে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণও বাংলাদেশে পানির গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এ অবস্থায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট কাটছে না। দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে। বাংলাদেশ, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় পানির সঙ্কট অত্যন্ত প্রবল। ওয়াসা এমডির দাবি ‘বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা ২২৫ কোটি লিটার পানি প্রতিদিন সরবরাহ করছে। এর বিপরীতে ২০০ কোটি থেকে ২১০ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। তাহলে রাজধানীতে বিশুদ্ধ পানির এতো অভাব কেন? ওয়াসার দাবি তাদের সরবরাহ করা পানি শতভাগ বিশুদ্ধ। অথচ একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন।তাতেও পারিন দুর্গন্ধ মুক্ত সুপেয় হচ্ছে না। আর বাসাবাড়িতে এই পানি ফোটাতে বছরে পোড়াতে হয় ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস, যার আর্থিক মূল্য ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

ঢাকা ওয়াসার পানি দূষিত হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে ৪টি প্রধান কারণ বলা যেতে পারে। তা হলো, (১) ভূগর্ভস্থ পানি ছাড়া নদী থেকে সরবরাহ করা পানি সঠিক উপায়ে শোধন না করা, পানির জলাধারগুলো রক্ষণাবেক্ষণ না করা তদুপরি শোধনাগারে পানি শোধনের সময় সঠিক পরিমাণে শোধন কেমিক্যাল না দেয়া, (২) পর্যাপ্ত দূরত্ব রক্ষা না করে সমান্তরালে পানির লাইন ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন স্থাপন, নাগরিক সচেতনতার অভাব এবং ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করা। ঢাকা শহরের বহু পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন যুগ-প্রাচীন। সেই কবে স্থাপন করা হয়েছে। এরপর জোরাতালি ছাড়া কার্যত কিছু করা হয়নি। তদুপরি অনেক ক্ষেত্রে লাইনগুলো গায়ে গায়ে লাগানো। ফলে কোনো কারণে দুটি লাইনের কোনো একটি অংশ ফেটে বা ভেঙে গেলে খাবার পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা মিশে যায়, (৩) অনেক সময় রাস্তার পাশের বাসিন্দা পানি বা সুয়্যারেজ লাইন নেয়ার জন্য লোক নিয়োগ করেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা থাকে অদক্ষ। ফলে কোদাল চালাতে গিয়েও পাইপ ফেটে যায়। খাবার পানির সঙ্গে ময়লা মিশ্রিত হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়, (৪) ওভারহেড ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করাও পানি দূষিত হয়ে পড়ার জন্য কম দায়ী নয়। এর ফলে ট্যাঙ্কে শুধু শেওলা জমা হয় না, ইঁদুর-বিড়াল পড়ে ও পচে-গলে পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত করে। অথচ কি গরম কি শীত! সারাক্ষণই মনে হয় গলাটা যদি একটু ভেজানো যেত। কিন্তু সেখানেই বিপত্তি। যেখানে সেখানের পানি দিয়ে তো আর তৃষ্ণা মেটানো যায় না। কেননা, পানি বিশুদ্ধ না হলে রয়েছে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়। আর গরমে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব যে সবচেয়ে বেশি তা সবারই জানা।

রাজধানী ঢাকা ওয়াসার পানির ওপর ন্যূনতম ভরসা করার কোনো উপায় নেই। রাজধানী ঢাকা ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির মান নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন রয়েছে। সর্বরাহকৃত পানি দুর্গন্ধযুক্ত। পানিতে এমন কিছু লক্ষ্য করা যায় যে পানি পানতো দূরের কথা এ পানিতে থালাবাসন মাজা, ওযু, গোসলেও অসম্ভব হয়ে পরে।পানিতে ময়লা-আবর্জনা-কেচো ইত্যাদি পাওয়া যায়। পানি ব্যবহারের ফলে হাত-মুখ-গায়ে জ্বালপোড়া এমনকি চর্মরোগও হচ্ছে। অধিকাংশ এলাকাতেই পানি পান ও ব্যবহার যোগ্যতা হায়ে পরেছে। আবার ব্যবহার অযোগ্য পানিও পাচ্ছে না রাজধানীবাসী। যতটুকু পাচ্ছে তার ওপর ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধময় পানি সরবরাহের কারণে মানুষের দুর্ভোগ, বিড়ম্বনা, দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। বিশুদ্ধ পানির বিকল্প উৎস না থাকায় এই দূষিত ও ব্যবহার অযোগ্য পানিই পান ও ব্যবহার করতে বাধ্য হতে মানুষ। এর ফলে অনিবার্যভাবে চর্মযোগ ছাড়াও ডায়রিয়া ও নানারকম পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে হচ্ছে। ইউনিসেফের ভাষ্যমতে ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৭০০ জন শিশুর দৈনিক মৃত্যু ঘটে পানির অভাবজনিত ডায়রিয়ার কারণে। অন্য পরিসংখ্যান বলছে, এ সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার হবে। তার মানে শিশুরা বিশুদ্ধ পানি সংকটের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। এর মধ্যে বাংলাদেশের শিশুর হার ২০ শতাংশ।

পৃথিবীতে ৭০ ভাগ পানি থাকলেও বিশুদ্ধ পানি আছে মাত্র ৩ শতাংশ। যার দুই তৃতীয়াংশ আবার আটকা পড়ে আছে বরফে। বিশ্বজুড়েই বিশুদ্ধ পানির সংকট দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে। পৃথিবীতে ৭০ ভাগ পানি থাকলেও বিশুদ্ধ পানি আছে মাত্র ৩ শতাংশ। যার দুই তৃতীয়াংশ আবার আটকা পড়ে আছে বরফে। বৈশ্বিকভাবে বিশুদ্ধ পানি বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা প্রায় একশ এক কোটি। প্রায় দুইশ ৭ কোটি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস পানির সংকটে ভোগেন। সম্প্রতি বিশ্ব পানি গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে নিরাপদ পানি সংকট এবং এ সংকটের আবর্তে পড়তে চলেছে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ। দিন দিন এ সমস্য আরো ঘনিভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে পৃথিবীর ২৯টি দেশের প্রায় ৪৫কোটি মানুষ নিরাপদ পানির অভাবে সংকটের সম্মুখিন। নদীমাতৃক পানি সম্পদের দেশ বাংলাদেশও আজ নিরাপদ পানি সংকটে ভুগছে। পুকুর, দীঘি, খাল, বিল ও নদ-নদী এখানে পানির প্রধান উৎস। এছাড়া রয়েছে গভির ও অগভির নলকুপ। আমাদের পানিতে লোহা, সীসা ও আর্সেনিকের প্রভাবও আছে। নিরাপদ বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণের জন্য দেশের সর্বত্র স্থাপন করা হয় নলকুপ। কিন্তু বর্তমানে নলকুপের পানিতে আর্সেনিক সহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে দেশে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪৬টি জেলার ভূগর্ভস্থ পানিতে আয়রন, আর্সেনিক, সীসা ও অন্যান্য খনিজ উপাদান অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ ক্রমশ নিরাপদ পানি সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার পানির প্রধান উৎস গভীর নলকুপ। সরবরাহকৃত পানির প্রায় ৮০ শতাংশ আসে এই উৎস থেকে। বাকি পানির উৎস সায়েদাবাদ ও চাঁদনিঘাট শোধনাগার। শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গার পানি শোধন করে এই দুই শোধনাগার থেকে সরবরাহ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গার পানি এতই দূষিত যে, শোধন করেও পান ও ব্যবহারযোগ্য করা যায় না। পানি শোধনে মাত্রাতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এতে পানি অনেক সময় দুর্গন্ধময় হয়ে ওঠে এবং তা ব্যবহারে চোখে-মুখে-গায়ে জ্বালাপোড়া করে। পানির পান ও ব্যবহারযোগ্যতা হারানোর আরও একটি বড় কারণ, পুরনো ও জরাজীর্ণ লাইন, যা দিয়ে সহজেই ময়লা-আবর্জনা- কেচো, পয়োবর্জ্য পানিতে মিশে যায়। বাসাবাড়িতে অবস্থিত পানি সংরক্ষণাগার নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করাও পানি দূষণের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।সে কারণেই এই নগরের অধিবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানির সংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। পানির নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা প্রমাণিত, ঢাকা ওয়াসা এ নগরবাসীর পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপারগ। এ মুহূর্তে যেখানে প্রতিদিন অন্তত ২৩০ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন সেখানে ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করতে পারছে ২১০ কোটি লিটার। তাও সেই পানির ওপর নির্ভর করার উপায় নেই। ঢাকা ওয়াসা পানির জন্য যে উৎসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে সেই গভীর নলকূপেও এমন এক সময় আসতে পারে যখন পানি পাওয়া যাবে না। ভূগর্ভ থেকে নির্বিচারে পানি উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর ঢাকায় পানির স্তর তিন ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। এটাও একটা বিরাট আশংকার ব্যাপার। ঢাকায় পানিনিরাপত্তার নিশ্চিত করতে পানির বিকল্প উৎস যেমন সন্ধান ও ব্যবহার করতে হবে তেমনি ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রম আরও বাড়াতে ও গতিশীল করতে হবে। এই মুহূর্তে ঢাকা ওয়াসাকে সরবরাহকৃত পানির বিশুদ্ধতা সংরক্ষণে মনোযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে কোনো মূল্যে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।

নিজের স্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে দূষিত পানি পান না করে পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা দরকার সবার। এ ব্যাপারে ঢাকা ওয়াসার করণীয় সবচেয়ে বেশি। সার্বিকভাবে ঢাকা শহরের আসন্ন পানি সঙ্কট নিয়ে শিগগির কোনো উদ্যোগ না নিলে তা আস্তে আস্তে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। কথায় আছে দেয়ালে পিঠ না ঠেকলে আমরা সচেতন হই না। ঢাকার পানি সমস্যার সাথে ওয়াসা তথা সরকারের পদক্ষেপ দেখে কিন্তু তারই প্রমাণ মেলে। কিন্তু আমরা চাই জীবন রক্ষাকারী বিশুদ্ধ পাানির সমস্যার সঠিক সমাধান। পানির সঙ্কট না মিটলে ঢাকাবাসীই অসুস্থ হয়ে পড়বে না সমস্যায় পড়বে সরকারও।
বাংলাদেশের বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটের কারণ বিবিধ। কিন্তু প্রায় সব কারণই মানুষের তৈরি। কারণগুলো কী?

১. বাংলাদেশের জনবিস্ফোরণ এই সমস্যার অন্যতম কারণ। বছর-প্রতি বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.০৭%, বছর-প্রতি এই বিপুল হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলেও পানিসম্পদ কিন্তু একই থাকছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে প্রচুর মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়বে।

২. সাধারণ মানুষের দায়িত্বহীনতাও পানি-সমস্যার অন্যতম কারণ। এই ভোগবাদী সমাজে সকলেই কেবল নিজের স্বার্থ দেখে। আগামী প্রজন্মের দিকে নজর না দিয়ে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য পানির ব্যাপারে হয় অমিতব্যয়ী। ফলে পানিসম্পদ আজ খাদের কিনারে এস পৌঁছেছে।

৩. দ্রুত নগরায়ন ঘটানোও এর এক অন্যতম কারণ। কোনো নগরে একসাথে বহু লোক বসবাস করায় সেই অঞ্চলের সীমিত পানির ভান্ডরে টান পড়ে। ফলে পানি-সমস্যা দেখা দেয়।

৪. আমাদের দেশের বেশ কিছু অংশে ভূপৃষ্ঠ পানি ব্যবহার না করে ভূগর্ভের পানি ব্যবহার করে পাম্পের সাহায্যে উপরে এনে জমিতে ব্যবহার করাও অন্যতম কারণ।

পানির সমস্যা যে কেবল বাংলাদেশের তা অবশ্য নয়। বলতে গেলে সমস্যাটি বিশ্বব্যাপী। বলা হয়ে থাকে যে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি কখনও বাধে তা হলে তা বাঁধবে পানি নিয়ে। বিশ্বজুড়ে পানি সংকটের কারণ যতটা না প্রকৃতিগত, তার চাইতে অনেক বেশি মনুষ্যসৃষ্ট। বিশ্বের ২৬০টি দীর্ঘ ও বৃহৎ নদী দুই বা ততোধিক দেশের মধ্য দিয়া প্রবাহিত। নদ-নদীর পানি ব্যবস্থাপনা ছাড়াও পরিবেশ-প্রতিবেশগত আরও নানান কারণে দুনিয়ার দেশে দেশে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে এরই মধ্যে। ওয়ার্ল্ড ওয়াটার কাউন্সিলের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ আজ সুপেয় পানির অধিকার হতে বঞ্চিত। পৃথিবীতে প্রতিদিন গড়ে ৩৯ হাজার শিশু মারা যায় পানিবাহিত রোগে। ডায়রিয়ায় মারা যায় ১০ লাখ ৮০ হাজার মানুষ। বলাবাহুল্য, ডায়রিয়া রোগের প্রধান কারণ দূষিত পানি। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৮৯ শতাংশ মানুষ পরিষ্কার পানি পাচ্ছেন। বিশেষ করে চীন ও ভারতে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির সাথে সাথে পানি সরবরাহেরও উন্নতি হয়েছে। ২০১৫ সাল নাগাদ ৯২ শতাংশ মানুষের কাছে পরিষ্কার পানি পৌঁছে দেয়া যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেছিল জাতিসংঘ। কিন্তু সে লক্ষ্যে এখনও পৌঁছা যায়নি। বিশ্বের জনসাধারণের একটা বিরাট অংশ অর্থাৎ ১১ শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানি পান থেকে বঞ্চিত। অন্য কথায় পৃথিবীর প্রায় ৮০ কোটি (৭৮৩ মিলিয়ন) মানুষ প্রতিদিন দূষিত পানি পান করছে।

জাতিসংঘে সুপেয় পানির অধিকারকে মানবাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হলেও সেখানে লক্ষ করা যায় যে, শুধু কাগজে-কলমে আইন করে কাজ হয় না। আমার মনে হয় এটা অত্যন্ত জটিল বিষয়, যার বাস্তবায়নও সহজ নয়। এজন্য প্রয়োজন বিশেষ কলাকৌশলের। পৃথিবীর চারভাগের মধ্যে তিনভাগ পানি। কিন্তু এই বিশাল পরিমাণ পানির মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ পানি পান করার যোগ্য। আবার এই পানির একটা বড় অংশই রয়েছে বরফ হিসেবে। এই অ-লবণাক্ত পানির বাকি অংশ রয়েছে ভূপৃষ্ঠে ও ভূগর্ভে। এই পানির ৮৩% ব্যবহার হয় কৃষিকার্যে ও বাকি ১৭% শিল্প, গৃহস্থালির প্রয়োজনে। তাই পৃথিবীর পানিসম্পদ যা এক সময় অফুরন্ত উৎস হিসেবে গণ্য হতো তা আজ বিরল সম্পদে পরিণত হচ্ছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে গোটা পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবের মুখোমুখি হবে। বাংলাদেশের অবস্থা হবে ভয়াবহ। এ বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।

সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বিশুদ্ধ পানি বিশুদ্ধ করার ৭ উপায়ের কথা উল্লেখ করেছে। পাঠকের প্রয়োজেনে এখানে তা উল্ল্যেখ করলাম।

১. ফুটিয়ে: পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরানো ও কার্যকর পদ্ধতির একটি হল সেটা ফুটিয়ে নেয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পানি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটানো হলে এরমধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানি ঠা-া করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন ওয়াটার এইডের পলিসি ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের প্রধান আবদুল্লাহ আল মুঈদ। পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের পাত্রের পরিবর্তে কাচ অথবা স্টিলের পাত্র ব্যাবহার করার কথাও জানান তিনি। পানি বিশুদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখন ফিল্টারের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়।

২. ফিল্টার: পানি ফোটানোর মাধ্যমেই ক্ষতিকর জীবাণু দূর করা সম্ভব হলেও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত থাকতে ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। তাছাড়া যাদের গ্যাসের সংকট রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ফিল্টারে পানি বিশুদ্ধ করাই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। বাজারে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। যার মধ্যে অনেকগুলো জীবাণুর পাশাপাশি পানির দুর্গন্ধ পুরোপুরি দূর করতে সক্ষম। বাজারে মূলত দুই ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। যার একটি সিরামিক ফিল্টার এবং দ্বিতীয়টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত রিভার অসমোসিস ফিল্টার। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ সিরামিক ফিল্টার ব্যবহার করে থাকে। তবে আবদুল্লাহ আল মুঈদের মতে, এই ফিল্টার থেকে আপনি কতোটুকু বিশুদ্ধ পানি পাবেন সেটা নির্ভর করে ফিল্টারটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কিনা, তার ওপরে।

৩. ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লিচিং: পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক। যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানি বিশুদ্ধিকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি পরিশোধন করা যেতে পারে। সাধারণত দুর্গম কোথাও ভ্রমণে গেলে অথবা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে বা জরুরি কোন অবস্থায় ট্যাবলেটের মাধ্যমে পানি শোধন করা যেতে পারে। সাধারণত প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট বা ১০ লিটার পানিতে ব্লিচিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। এভাবে পরিশোধিত পানিতে কিছুটা গন্ধ থাকলেও সেটা পরিষ্কার স্থানে খোলা রাখলে বা পরিচ্ছন্ন কোন কাঠি দিয়ে নাড়াচাড়া করলে গন্ধটি বাতাসে মিশে যায় বলে জানান আবদুল্লাহ আল মুঈদ। পানি সরবরাহের পাইপলাইন থেকে সবচেয়ে বেশি দুষণ হয়ে থাকে।

৪. পটাশ বা ফিটকিরি: এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে। অথবা পানি ছেকে নিয়ে সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন মিস্টার মুঈদ।

৫. সৌর পদ্ধতি: যেসব প্রত্যন্ত স্থানে পরিশোধিত পানির অন্য কোনও উপায় নেই সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সৌর পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে দুষিত পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে কয়েকঘণ্টা তীব্র সূর্যের আলো ও তাপে রেখে দিতে হবে। এতে করে পানির সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। জরুরি অবস্থায় দূষিত পানি জনিত রোগ ঠেকাতে এই পদ্ধতি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

৬. আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি: পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি জীবাণু মুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ কার্যকরী একটা পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। বাজারের বেশ কয়েকটি আধুনিক ফিল্টারে এই আল্ট্রাভায়োলেট পিউরিফিকেশন প্রযুক্তি রয়েছে। তবে ঘোলা পানিতে বা রাসায়নিক-যুক্ত পানিতে এই পদ্ধতিটি খুব একটা কার্যকর নয়। তাছাড়া এই উপায়টি কিছুটা ব্যয়বহুলও।

৭. আয়োডিন: এক লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিনের দ্রবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। তবে এই কাজটি শুধুমাত্র দক্ষ কারও মাধ্যমে করার পরামর্শ দিয়েছেন মিস্টার মুঈদ। কেননা পানি ও আয়োডিনের মাত্রা ঠিক না থাকলে সেই পানি শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
উপরের ৭টি বিষয়ে রখ্য রেখে আমাদের বিশুদ্ধ পানি পানের কথা ভাবতে হবে। তা না হলে যে পানিকে আমরা জীবন বলছি সে পানি জীবন হন্তারক হতে পারে।

এখনই বিশুদ্ধ পানির ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক হতে হবে সরকারকে। এজন্য বিশুদ্ধ পানির জন্যবিশুদ্ধ পানির উৎসস্থল নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয় রক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। বেশি করে বৃষ্টির পানি সংরণ ও ব্যবহারে ব্যবস্থা করতে হবে।প্রতিটি বাড়ীতে বৃষ্টির পানি সংরন ও ব্যবহৃত পানি পুনব্যবহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।শিল্প-কারখানার, পয়ঃবর্জ্য, বিদ্যুাৎকেন্দ্র এবং আবর্জনা প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনার বর্জ্য নদী বা জলাশয়ে ফেলা বন্ধ করতে হবে। শিল্প-কারখানায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বাদ্ধতামূলক করতে হবে।পানি ব্যবহারে সংযমী হতে জনসাধারণকে উৎসাহী করতে হবে।ভুগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস করা এবং ভূ-পৃষ্টের পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষে প্রয়োজনী পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়ন করতে হবে।পুকুর, দীঘি, খাল-বিল-নদীসহ যে কোন জলাশয় ভরাট বন্ধে কার্যকর পদপে গ্রহণ করতে হবে।পানি পরিশোধনের লক্ষে প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণ ও অবিলম্বে নদী- দূষণের প্রক্রিয়া বন্ধ করা।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, কলামিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ, চেয়ারম্যান, আল-রাফি হাসপাতাল।

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test