E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সাহায্য চেয়েছে

২০২৩ জুন ১৯ ১৬:১৯:৪২
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সাহায্য চেয়েছে

শিতাংশু গুহ


শেখ হাসিনার কঠোর অবস্থান নেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই, নিতেই হতো। অনেকে এটিকে একাত্তরের সাথে তুলনা করতে চান। ৭১-এ ভারত-রাশিয়া পক্ষে ছিলো, আমেরিকা-চীন বিপক্ষে। এবার চীন পক্ষে। কিন্তু অর্থনৈতিক সহায়তা ছাড়া চীনের করার কি আছে? চীন কখনো কি কাউকে সাহায্য করেছে, ৭১-এ পাকিস্তানকে কি সাহায্য করেছিলো? একাত্তরে ছিলো যুদ্ধ, এবার নির্বাচন। চীন-রাশিয়া-আমেরিকা শেখ হাসিনা-কে নির্বাচনে জিততে সহায়তা করতে পারবে না, ভারত পারবে। ২০১৪, ২০১৮-তে করেছে। একজন আমায় জানালেন, এবার নির্বাচন সুষ্ঠূ হবে, বিতর্ক হবেনা, শেখ হাসিনা জিতবেন? 

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ভারতের সাহায্য চেয়েছে। স্পষ্টত: ভারত শেখ হাসিনা’র পক্ষে লবিং করবে, ইতিমধ্যে মোদীর আগমন উপলক্ষে ভারত-মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যৌথ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠেছে। ভারত হয়তো আমেরিকাকে বোঝাতে চাইবে যে, শেখ হাসিনাকে বেশি ঘাটালে তিনি চীনের দিকে ঝুঁকতে চাইবেন। যাঁরা বলছেন, আমেরিকা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চাইছে, এটি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, তিনি হয়তো জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে চাইছেন। বাংলাদেশ সেন্ট মার্টিন কাউকে দেবেনা, ভারত চাইবে না তাঁর ‘নাকের ডগায়’ বসে কেউ খবরদারি করুক।

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে অন্য খেলা চলছে। এ খেলায় আমরা দর্শক। ভারত যদি আমেরিকাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়, অথবা আমেরিকা-ভারত যদি বাংলাদেশ প্রশ্নে দুই শিবিরে বিভক্ত থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সমস্যায় পড়ার সম্ভবনা থাকবে। এরমধ্যে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ‘ব্রীক্স’ জোটে যোগ দিতে পারে। আমেরিকা এটি কিভাবে নেয়, তা দেখার বিষয়। ব্রীক্স নিয়ে ভিন্নভাবে লিখবো, আপাতত: এটুকু বলা যায়, রাশিয়া ও চীনের সাথে বেশি খাতির আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া বা জাপান খুব একটা ভালো চোখে দেখবে না?

ভারতের নিজস্ব সমস্যা আছে, সীমাবদ্ধতা আছে। আমেরিকা ভারতের বিরুদ্ধে যাবেনা, কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরো কঠোর হবেনা, এমন গ্যারান্টি নেই? মোদির আসন্ন ওয়াশিংটন সফর এদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ফাইনাল খেলা সম্ভবত: হবে সেপ্টেম্বরে ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে। সেখানে বাইডেন-পুটিন-জিনপিং থাকার কথা। পর্যবেক্ষক হিসাবে শেখ হাসিনা সেখানে নিমন্ত্রিত। ইউক্রেনের অভিনেতা প্রেসিডেন্ট জিলেন্সকি’র ভুলে দেশটিতে প্রক্সি যুদ্ধ চলছে। শেখ হাসিনা ঝানু রাজনৈতিক, বাংলাদেশকে তিনি পরাশক্তির ‘ঝগড়ার ক্ষেত্র’ হতে দেবেন না।

এরমধ্যে খারাপ খবর, ‘রিপোর্টার্স উইথাউট বর্ডার’ (আরএসএফ) গোলাম রব্বানী নাদিমকে পিটিয়ে মেরে ফেলার বিষয়টি তদন্ত করার দাবি করেছে, নাদিম ১৫ই জুন ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। ৬জন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানের চিঠির পর এবার ৬জন ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান প্রায় একই ধরণের চিঠি দিয়েছেন ফরেন সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন-কে। ডেমোক্র্যাট উইলিয়াম বিল কিটিং এক টুইটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

চীন বাংলাদেশের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। হিউম্যান রাইট্স ওয়াচ বিপক্ষে বলেছে। ৬জন ইইউ পার্লামেন্ট সদস্য ইইউ ভাইস প্রেসিডেন্ট জোজেফ বোরেল-কে এক চিঠিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন, তাঁদের বক্তব্য ৬-কংগ্রেম্যানের চিঠির অনুরূপ। কানাডা আগেই বলে দিয়েছে তারা আমেরিকার ভিসানীতি অনুসরণ করবে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বিশ্ব-মোড়লদের চিন্তার শেষ নেই, সমস্যা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে রাজনীতিকরা ক্ষমতায় যেতে বা থাকতে বিদেশের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন। সেই ধারা এখনো বজায় রয়েছে। সত্য হচ্ছে, অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচনের জন্যে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কখনোই আন্তরিক ছিলোনা, এখনো নয়?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test