পরিবেশ বিধ্বংসী বিদেশি গাছ
দেশীয় গাছ বিলুপ্তির কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ বিদেশি প্রজাতির গাছের আগ্রাসন। তাই অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা ঘটছে দেশে। নানাভাবে আমাদের সবুজ-শ্যামল প্রকৃতিতে ঢুকে পড়েছে বিদেশি প্রজাতির অনেকগুলো বৃক্ষ। বিদেশি এসব গাছ ও গুল্মের ক্রমাগত বর্ধনের ফলে গত এক দশকে বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে অন্তত এক হাজার প্রজাতির নিজস্ব গাছ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি প্রজাতির নানান বৃক্ষ বাংলাদেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের অপরিসীম ক্ষতি করছে। তাই পরিবেশ বাঁচাতে বিদেশি ক্ষতিকর বৃক্ষ বর্জন করতে হবে।
সবুজ গাছপালায় আচ্ছাদিত আমাদের গ্রাম বাংলা। এখানে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় অসংখ্য প্রজাতির বৃক্ষ, গুল্ম, লতাপাতা। তবে সময়ের পরিক্রমায় আমাদের বৃক্ষ সম্পদ ধ্বংসের পথে। নানা কারণে দেশের বৃক্ষ সম্পদ হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আয়তনের ২৫ শতাংশ জমিতে গাছপালা বা বন জঙ্গল থাকার কথা থাকলেও এর অর্ধেক জমিতেও নেই বৃক্ষসম্পদ। আবাসন নির্মাণের পাশাপাশি জ্বালানির কাজে ব্যবহারের জন্য অবাধে কর্তন করা হচ্ছে বৃক্ষ সম্পদ। আর এই সুযোগেই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে দ্রুত বর্ধনশীল বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। এগুলো জ্বালানি সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখে ঠিকই, তবে ক্রমাগত মাটি ও পরিবেশের সর্বনাশ করে চলেছে। বিদেশী বৃক্ষগুলো বাংলাদেশের মানুষই যেমন এনেছে, আবার কিছু উদ্ভিদ নিজেই বাংলাদেশে ইকোসিস্টেমে বা বাস্তুসংস্থানের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। বিদেশী প্রজাতির রেইনট্রি, সেগুন, আকাশমণি, আকাশি, শিশু, বাবলা, ইউক্যালিপ্টাস জাতীয় গাছের জন্য প্রচুর জায়গার দরকার হয়। এগুলো দেশী গাছের তুলনায় অনেক দ্রুততার সঙ্গে বেশি পরিমাণে পুষ্টি ও পানি শোষণ করে। তাই এসব বৃক্ষের আশেপাশে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষ বাঁচতে পারে না। বৃটিশ আমলে বৈধভাবেই দেশে আসে রেইনট্রি, মেহগনি, চাম্বুল ইত্যাদি। আশির দশকে আসে আকাশমণি, ইউক্যালিপ্টাস, শিশু, ইপিলইপিল, বাবলা ও খয়ের জাতীয় গাছ। আর বিভিন্ন সময় অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করেছে- রিফুজিলতা, স্বর্ণলতা, মটমটিয়া, পিসাইস, পার্থোনিয়াম, কচুরিপানা ইত্যাদি।
গবেষকদের মতে, অতীতে বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার প্রজাতির বৃক্ষ ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এক হাজারের বেশি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, বিদেশি এইসব আগ্রাসি বৃক্ষ। আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশীয় বট, কদম, হিজল, জারুল, তমাল আর বাংলা মানেই বট, পাকুড়, ডুমুর, আম, জাম, শিমুল, পলাশ, হিজল, ছাতিম, কদম, শাল, তাল, তেঁতুলসহ অজস্র দেশী বৃক্ষে আচ্ছাদিত। বাংলা মানেই জুঁই, চামেলি, মালতি, গন্ধরাজ, ভাঁট ফুলসহ অজস্র লতাগুল্মের বাহার। বাংলার এসব গাছগাছালিকে কেন্দ্র করেই বাস করে বহু প্রজাতির পশু-পাখি, কীটপতঙ্গ। মানুষ বেড়েছে ভারসাম্যহীনভাবে। চাহিদা বেড়েছে খাদ্য, বস্ত্র ও আবাসের। সেই সঙ্গে বেড়েছে ভোগ-বিলাস, বিত্ত-বৈভব, লালসা ও নগদ প্রাপ্তির অসীম চাহিদা। তাই চলছে প্রকৃতি লুণ্ঠনের অজস্র আয়োজন। কলকারখানার জন্য উন্নয়নের নামে গাছগাছালি সাবাড় করে উজাড় হচ্ছে বন। তা আবার উদ্ধারের নামে রাষ্ট্রের লাখো কোটি টাকায় শত শত প্রকল্পে চলছে সবুজায়নের এক অদ্ভুত আয়োজন। রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি সর্বস্তরে চলছে বাংলার বৃক্ষ-প্রকৃতি বিনাশের কাজ।
আর ইউক্যালিপটাস বাংলাদেশে ১৯৬০ সালে আনার পর থেকে সরকারি উদ্যোগেও সামাজিক বনায়নের আওতায় লাগানো হয়েছে সর্বত্র। সারা দেশে রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে, ক্ষেতের আইলে এখন চোখে পড়ে এসব পরিবেশ হানিকর গাছ। ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি গাছ শুধু কাঠের বিবেচনায় রোপণ করা হয়। কিন্তু একটি গাছ মানে তো শুধু কয়েক ঘনফুট কাঠ নয়। গাছের সঙ্গে প্রধান বিবেচ্য বিষয় বাস্তুতন্ত্র তথা পরিবেশ-প্রকৃতি। বিবেচনায় নিতে হবে সেসব গাছ বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে কতটা সংগতিপূর্ণ। একটি গাছের সঙ্গে থাকে অনেক প্রজাতির পশু-পাখি, অজস্র অনুজীবের জীবনচক্র ও জীবনপ্রবাহ। মানুষ বুদ্ধি, কৌশল ও বাহুবলে গাছের সর্বাঙ্গ লুণ্ঠন করছে যেন প্রকৃতিতে একমাত্র মানুষ প্রজাতিই একক স্বত্বভোগী! কিন্তু প্রকৃতিতে অন্যান্য প্রাণীরও অধিকার রয়েছে। মানুষ এখন ভোগ-বিলাসে ও বিত্ত-বৈভব অর্জনে আত্মকেন্দ্রিকতায় অন্ধ। এদিকে বিদেশী ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি গাছের গড়ন ও আচরণও অত্যন্ত আত্মকেন্দ্রিক। এসব গাছ রাত-দিন প্রচুর পানি শোষণ করে।
ইউক্যালিপটাস গাছের পানি শোষণসংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য কোনো গবেষণার তথ্য জানা না থাকলেও আমি প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণে দেখেছি যে আমাদের দুটি পাশাপাশি ছোট্ট পুকুরের একটির পাড়ে কিছু ইউক্যালিপটাস গাছের প্রচুর পানি শোষণ। খরা মৌসুমে এ পুকুরের পানি তলানিতে ঠেকত। অন্য পুকুরপাড়ে সাধারণ দেশী গাছ ছিল, যার পানি তুলনামূলক অনেক বেশি থাকত। আবার আমাদের একটি জমির যে পাশে কিছু ইউক্যালিপটাস ছিল, সে পাশের মাটি বর্ষাকালেও দু-চারদিন বৃষ্টি না হলে জল শুকিয়ে ঝরঝরে হতো। আর যে পাশে আম-কদম গাছ ছিল, সে পাশের মাটি থাকত অনেক আর্দ্র। সেসব ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার পর এ সমস্যা আর দেখা দেয় না। এ রকম তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রত্যেক ভুক্তভোগী কৃষকেরই আছে। ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি গাছের শাখার গড়ন হলো খাড়া ও ছড়ানো। ফলে এসব গাছের ডালে কোনো পশু-পাখিই বাসা বাঁধতে পারে না। এমনকি বসে বিশ্রামও নিতে পারে না। এদের ফুল-ফল খেতে পারে না কোনো প্রাণী। পাতা গরু-ছাগলেরও খাবার উপযোগী নয়। এমনকি এদের ওপর কোনো মাইক্রো ফ্লোরা-ফোনা (ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও প্রাণী) জন্মাতে পারে না। যাকে এককথায় বলা যায় একেবারেই আগ্রাসী আত্মকেন্দ্রিক!
এর সঙ্গে বাংলার পরিবেশবান্ধব বটজাতীয় বৃক্ষের তুলনা করা যাক। মায়ামাখা ছায়াঘন বটবৃক্ষের শাখার আনুভূমিক গড়ন যেন বাহু প্রসারিত করে পাখিদের আহ্বান করছে—‘এসো আমার শাখায় বাসা বেঁধে ফল সেবন করো! প্রশস্ত পাতার সুনিবিড় ছায়ায় শান্তির নীড়ে প্রাণ জুড়াও!’ শুধু পাখি নয়, অজস্র অনুজীব, মৌমাছি, বাদুড়-বানরের নিশ্চিত নিরাপদ আশ্রয়স্থল বট গাছ। আবার বটের নিকট গোত্রীয় ডুমুর বা খোকসা গাছ পশু-পাখির সারা বছর খাদ্য জোগানদাতা। বনে বাঁদর ও হনুমান অনেকাংশে ডুমুর ফলের ওপর নির্ভর করে। যজ্ঞ বা জগডুমুর ফল মানুষের অসাধারণ পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু উন্নত সবজি। এর ভাজি, ভর্তা ও ঝোলও রাঁধা হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে খাদ্যশক্তি ৩৭ কিলোক্যালরি, ১২৬ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ, বি, সি, প্রচুর আয়রনসহ অন্যান্য উপাদান রয়েছে। ডুমুর খুবই উচ্চমানের ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, গুটিবসন্ত, ডায়াবেটিস, হূদরোগ, কিডনি ও মূত্রসংক্রান্ত সমস্যা, স্নায়বিক দুর্বলতা, মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি, সর্দি-কাশি, ফোঁড়া বা গ্রন্থস্ফীতি (টিউমার) ও স্ত্রীরোগের চিকিৎসায় জগডুমুর বেশ কার্যকর।
বাংলায় উত্পত্তি বেশির ভাগ বৃক্ষের ফুল ও ফল সাধারণত সরস ও শোভাপূর্ণ। এসব বৃক্ষ ঘিরে অসংখ্য পশু-পাখির আবাস গড়ে ওঠে। গাছের গড়নবিশেষে পশু-পাখি তাদের আবাস বা আশ্রয় নির্বাচন করে। হরেক প্রজাতির শালিক, শ্যামা, টিয়া, ঘুঘু, বুলবুলি, বক, বাজপাখি, চিল বাদুড়সহ অসংখ্য পাখি সাধারণত আম, জাম, কাঁঠাল, বট, অশ্বত্থ, খেজুর গাছে বাসা বাঁধে। বাবুই পাখি তাল, নারকেল, খেজুর গাছের পাতায় অসাধারণ নৈপুণ্যে বাসা বাঁধে, তা সবারই জানা। বক সাধারণত উচু তেঁতুল গাছে বাসা বাঁধতে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমি গ্রামে দেখেছি জঙ্গলের মাঝে বাঁশঝাড় ও উঁচু তেঁতুল গাছে শত শত বককে বাসা বাঁধতে। আবার কলা-বাদুড়ের আশ্রয়ও উঁচু তেঁতুল গাছ। আমার দেখা বেশির ভাগ বাদুড়ের বাস তেঁতুল গাছের শক্ত-চিকন ভূমি সমান্তরাল ডালে। তবে তারা সে গাছকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্যান্য গাছ বা বাঁশঝাড়েও ঝুলে থাকে। আশপাশে বট, পাকুড়, ডুমুর গাছে এদের আনাগোনা বেশি। টিয়া পাখি নরম কাঠবিশিষ্ট বড় শিমুল গাছের মগডালে গর্ত করে বাস করে। ছোটবেলায় দেখেছিলাম নদীর ধারে প্রকাণ্ড শিমুল গাছের শীর্ষে শকুনের বাসা। আজ শিমুল, ছাতিম, তেঁতুল গাছ আর চোখেই পড়ে না। এসব গাছ কেউ আর রোপণ ও পরিচর্যা করে না। যার দরুন বৃক্ষের বিলুপ্তিতে পাখিদের আবাস আজ চরম সংকটে। ফলে হারিয়ে গেছে অনেক পাখি প্রজাতি। মানুষ শুধু কয়েক ঘনফুট কাঠের প্রত্যাশায় অন্ধের ন্যায় রোপণ করছে বিদেশী গাছ। আমাদের ব্যক্তি-সমাজ জীবনের চাহিদা ও চিন্তাধারার বহু পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান বিত্ত-বৈভবের লোভে সমাজ-সংস্কৃতির হয়েছে বিরূপ পরিবর্তন।
আর্দ্র ভূমির সবুজ-শ্যামল আবহমান বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রকৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পর্কিত। সাধারণত বট বা অশ্বত্থ বৃক্ষের তলা ছিল মুনি-ঋষির আরাধ্য স্থান। গৌতম বুদ্ধের অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে একযোগে ধ্যানের কথা শাস্ত্র বা ইতিহাসে রয়েছে। মধ্যযুগে সৃষ্ট বটতলার সাহিত্যের কথা আমরা সবাই জানি। আধুনিক সাহিত্যে বটবৃক্ষের মহিমায় মুগ্ধ হয়ে কবিগুরু এক বিশাল ছড়ায় লিখেছেন, ‘লুটিয়ে পড়ে জটিল জটা, ঘন পাতায় গহন ঘটা, হেতা-হোতায় রবির ছটা, পুকুর ধারে বট’। বাংলার স্বরূপ উপস্থাপনে আমাদের জাতীয় সংগীতে বটবৃক্ষের গুনগান গেয়েছেন, ‘কি শোভা কি ছায়া গো কি স্নেহ কি মায়া গো কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে নদীর কূলে কূলে!’ পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বিখ্যাত গান কাজল ভ্রমরায় বটবৃক্ষের অনন্য উপমা—‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন রে, মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে’। এ রকম অসংখ্য কবির অজস্র কবিতায় বটবৃক্ষের উপমা রয়েছে।
বটবৃক্ষ শুধু সাহিত্যে নয়, লোকজ জীবন ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে আছে। রোদ-বৃষ্টি ঝড়-ঝাপটায় আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বট গাছের উপযোগিতা অপরিসীম। হাটবাজার-মেলা তো বটতলা ছাড়া কল্পনাই করা যেত না। মানুষ তখন কোনো ঠিকানা নিশ্চিত করতে বট গাছকেই ব্যবহার করত। গ্রীষ্মে প্রখর রৌদ্রে শ্রান্ত শরীরে বিশ্রাম নিতে বটবৃক্ষের তলে বসত মানুষের মিলনমেলা। বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে বা খেয়াঘাটে বটগাছের নিচে মানুষের জন্য তৈরি করা হতো বাঁশের মাচা। দুপুর গড়িয়ে চলত গলা ছেড়ে গান, লাগামহীন গল্প। ঝুরিমূলে দোল খাওয়া নিয়ে শৈশব-কৈশোরে বটবৃক্ষের সঙ্গে সখ্য ছিল না, গ্রাম-বাংলায় বেড়ে ওঠা এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। খেলাধুলা, বেড়ে ওঠা, গড়ে ওঠার বিকাশ কেন্দ্র ছিল সেসব বৃক্ষতলা। বাংলার পথপ্রান্তরের নাম বটতলা নির্ধারণ করা হয়। এ নামকরণে বাংলার অন্যান্য বৃক্ষেরও প্রভাব দেখা যায়। যেমন পাকুড়তলী, শিমুলতলী, নিমতলী, কদমতলী, তেঁতুলতলী, আমতলী, জামতলী। সারা দেশে এ রকম রাস্তা-ঘাট ও মাঠের নাম পাওয়া যায়। তবে বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংগতির জন্য বটতলা নামটি বেশির ভাগ স্থানে দেখা যায়।
বট-পাকুড় বৃক্ষের সঙ্গেই শুধু প্রাণীদের সৌহার্দের সম্পর্ক নয়, অন্যান্য গাছের সঙ্গেও সম্প্রীতির সাক্ষ্য বহন করে। বট অশ্বত্থ বা পাকুড় গাছের সঙ্গে জড়িয়ে একত্রে বেড়ে উঠতে পারে। তাল, খেজুরসহ অনেক গাছের সঙ্গে একসঙ্গে বেড়ে উঠতে দেখা যায়। বট-পাকুড় গাছের এ মিলনকে বাংলার মানুষ দম্পতি বলেও অভিহিত করে। কোনো কোনো বৃক্ষপ্রেমিক আবার বট-পাকুড় পাশাপাশি রোপণ করে বিয়েও দিতেন একসময়। আমাদের মাঠের মাঝখানে বিশাল একটি বট-পাকুড় গাছ ছিল। আমরা সেই যুগল বৃক্ষকে বিয়াতলী নামেই ডাকতাম। ২০-২৫ বছর আগে সেটি কাটা হলেও এখনো সেই মাঠকে বিয়াতলী বলা হয়।
ঐতিহ্যের ধারক ও পরিবেশবান্ধব বটবৃক্ষ। ৫০ বছরের একটি বটবৃক্ষ মানুষ তথা বাস্তুতন্ত্রে কী উপকারে আসে, তা প্রকৃতিপুত্র নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা তার একটি হিসাবে দেখিয়েছেন, ২৫ লাখ টাকার অক্সিজেন, মানুষের উপকারী জীবজন্তুর খাবার জোগায় ২০ হাজার টাকার, মাটির ক্ষয়রোধ ও উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিতে লাভ হয় ২ লাখ টাকা, বাতাসের আর্দ্রতা বাড়িয়ে বৃষ্টিপাতে সহায়তায় বাঁচায় ৩ লাখ টাকা এবং বায়ুদূষণ ঠেকানোর জন্য সাশ্রয় হয় ৫ লাখ টাকা। অথচ আজ মানুষ নগদ প্রাপ্তির জন্য সারা বাংলায় দেশী বৃক্ষ সাবাড় করে সামাজিক বনায়নের নামে ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি গাছ লাগাচ্ছে।
বহু বছর ধরে বাংলায় জন্মানো বৃক্ষ অভিযোজনে উপযোগী করেছে নিজস্ব পরিবেশ-প্রকৃতিকে। জনঘন এ দেশে পরিবেশ দূষণ ও প্রকৃতি বিপর্যয় রোধে বাংলার বৃক্ষগুলোর গুরুত্ব অপরিহার্য।
পরিশেষে বলতে চাই, প্রভৃতি বৃক্ষের সমারোহ বাড়াতে বর্জন করতে হবে বিদেশি বৃক্ষগুলোকে। পানিতে শাপলা-পদ্মের অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য বর্জন করতে হবে কচুরিপানাকে। সব মিলিয়ে বিদেশি বৃক্ষের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারণা দরকার।আর প্রতি মৌসুমে সকল বড় বড় রাস্তার ধারে, নদী বা খালের বাঁধে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, পতিত স্থান ও বসতভিটায় বৈচিত্র্যময় গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিলে দেশের সকল এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য যেমন সুরক্ষিত হবে, তেমনি এলাকায় প্রাণবৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পাবে এবং পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় খাদ্যের সহজলভ্যতা সৃষ্টি হবে। তাই, আসুন আমরা সকলে সংগঠিতভাবে ও ব্যক্তি উদ্যোগে সামর্থ অনুযায়ী বৈচিত্র্যময় (ফলজ, বনজ ও ঔষধী) গাছের চারা রোপণ করে পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখি। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সুন্দর ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে দেই।
লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।
পাঠকের মতামত:
- টানা পাঁচ দফা কমলো স্বর্ণের দাম
- কানাইপুরের মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ
- নড়াইলে মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে সফুরা খাতুন বেলী চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- লাখো দর্শকের পদচারনায় শেষ হলো তিন দিনব্যাপী জালাল মেলা
- শ্রীমঙ্গল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
- ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ পেল ওয়ালটন
- যশোরে উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা, আটক ২
- কালিয়াকৈর পাবলিক গ্রুপের বিনামূল্যে শরবত বিতরণ
- ‘কমিশনের বার্তা একটাই অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হবে’
- মাগুরায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
- নড়াইলে আদালতে হাজিরা দিতে এসে গাঁজাসহ যুবক গ্রেফতার
- দিনাজপুরে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালিত
- বিরল উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ
- দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাভার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাজীব
- লক্ষ্মীপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন
- কোরবানির ঈদে পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
- রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড ছিঁড়লেন ছাত্রলীগ নেতা!
- মহম্মদপুরে পুলিশের পৃথক অভিযানে গাঁজাসহ আটক ২
- ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে’
- ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক
- নাগরপুরে ট্রাক্টর-সিএনজি সংঘর্ষে যুবকের মৃত্যু
- সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম
- টাঙ্গাইলে শ্রেণীকক্ষে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন মাদ্রাসা শিক্ষক
- হিট স্ট্রোকে প্রার্থীর মৃত্যু, গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত
- মোংলায় টেইলার্স কারখানায় আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেল রূপালি ব্যাংক
- ফরিদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
- চাঁদপুরে নৌ পুলিশের অভিযানে জেলেসহ গ্রেপ্তার ২২
- চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- সাংবাদিক শাহীর পিতা মেহেরাব আলীর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার
- আ.লীগের প্রতিপক্ষ আ.লীগ
- মহম্মদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা
- কাপ্তাইয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়
- দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অসহনীয় তাপমাত্রা কেন?
- মেয়েদের এডিট করা ‘আপত্তিকর’ ছবি ফেসবুকে ছেড়ে ব্ল্যাকমেইল, ৪ যুবক গ্রেপ্তার
- বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ‘কৌশল’
- সালথায় টিউবওয়েলের পানি খেয়ে আতঙ্কে অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
- ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত
- মস্কোজয়ী ‘আদিম’ আসছে ওটিটিতে
- সান্তাহারে ইয়াবাসহ ২ মাদকের কারবারি গ্রেপ্তার
- গৃহবন্দীদশা থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন কিশোর শেখ জামাল
- সুন্দরবনের ‘বনবাস’: বনের ভেতর অন্যরকম অনুভূতি
- ফুলপুরে হাবিবের আনারস মার্কার গণজোয়ার
- বোয়ালমারীতে রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে আল আলী ইটভাটায়
- পদ্মা সেতুতে দেড় হাজার কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক
- খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রামে যান চলাচল বন্ধ
- যশোরে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু
- ঈশ্বরদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
- গোপালগঞ্জে র্যাবের নকল ড্রেস, ওকিটকি ও নকল পিস্তল উদ্ধার
- পণ্য পরিবহন ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট প্রত্যাখান
- জাতির পিতার সমাধিতে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরের শ্রদ্ধা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !