E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হিন্দুধর্মে নারীদের কতটা সম্মান দিয়েছে?

২০২৩ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৭:১৮:৫১
হিন্দুধর্মে নারীদের কতটা সম্মান দিয়েছে?

পূর্ণি ঘোষাল


একজন হিন্দু পিতা, কন্যাকে তার প্রাপ্য বা প্রাপ্যের চেয়ে বেশী দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে পাঠায়, (যে সম্পত্তি তার এবং তার স্বামী দুজনেরই হয়) যাতে সে মাথা উঁচু করে শ্বশুর বাড়িতে ঢুকতে পারে এবং মাথা উঁচু করে থাকতে পারে। সেই নারী যদি তার স্বামীর সম্পত্তিকে নিজের বলে ভাবতে না পারে। তাহলে সে তো তার স্বামীর স্ত্রী ই নয়, এমন হলে একদিন না একদিন সে তার স্বামীকে ত্যাগ করে চলে যাবেই। এই ঘটনা আরো দ্রুত ঘটবে, যদি সেই নারীর নামে তার পিতার সম্পত্তি বা ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি থাকে। এসব বিবেচনা করেই পৃথিবীর সংবিধান রচয়িতা মুনি-ঋষিরা, পিতার সম্পত্তিতে নারীর উত্তরাধিকার দেন নি । কারণ, নারীকে যদি পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার করা হয়, সমাজে নানারকম অশান্তি ও অস্থিরতারই শুধু সৃষ্টি হবে না, অনেক নারী নিজেই নিজেকে ধ্বংস করবে নিজ বুদ্ধি দ্বারাই। সমাজে এর বহু উদাহরণ রয়েছে, চারপাশে তাকালেই আমার কথার বাস্তবতাকে উপলব্ধি করতে পারবেন।

হিন্দু আইনে কোনো বিবাহ বিচ্ছেদ নেই। এটাও নাকি অনেকের গাত্রদাহের কারণ। অথচ এর মাধ্যমেই যে কোনো নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেটা এই নির্বোধদের মাথাতেই ঢোকে না। এদের যুক্তি হলো, নানা কারণ, যেমন- স্বামীর অত্যাচারের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ জরুরী এবং এর জন্য আইন থাকা আবশ্যক। কিন্তু এটা ৯৯% এরও বেশী ক্ষেত্রে সত্য যে- কোনো নারী, তার স্বামীর হাতে মার খায় তার নিজের দোষে। নিজের জিহ্বাকে কন্ট্রোল করতে না পেরে। এদেরকে বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া হবে কি এই কারণে যে এরা যাতে স্বামীর সাথে আরো বেশি ঝগড়া করতে পারে?

হিন্দু পুরুষরা চাইলেই যে তার স্ত্রীকে কারণে অকারণে বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে না। এটাই একজন হিন্দু নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় অধিকার।

একজন হিন্দু নারীর জীবনে সমস্যা নেই বললেই চলে। প্রথম কথা হচ্ছে- কোনোভাবেই সে তার স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হবে না, যদি কোনো কারণে স্বামী মারা যাওয়ায় সে অসহায় হয়েও যায়, তার ভাইদের কাছে গিয়ে সে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু হিন্দু নারীরা যদি পিতার সম্পত্তির অধিকার পায়, তাহলে সেই সম্পত্তির ভাগ নিতে গিয়ে নিশ্চতভাবে তার ভাইদের সাথে তার সম্পর্ক খারাপ হবে, মনোমালিন্যের কারণে ঐ নারী কখনো তার বাপের বাড়িতে বেড়াতেও যেতে পারবে না। ফলে সম্পত্তি নিতে গিয়ে নারীরা তার বাপের বাড়ি হারাবে, হারাবে বিপদে আপদে ভবিষ্যতের আশ্রয়, ফলে সে পথে এসে দাঁড়াবে, এই সুযোগ নেবে কিছু দুষ্ট মানুষ। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই আমার কথার বাস্তবতার প্রমাণ পাবেন।

একটি নারীর সারাজীবনের স্বপ্ন তার সংসার, বিয়ের মাধ্যমে যা সে লাভ করে এবং একজন হিন্দু নারী যখন সেই সংসার পায়, তখন তা এককালীন পায়, কোনোভাবেই তার কাছ থেকে সেটা কেউ কেড়ে নিতে পারে না, ফলে একজন হিন্দু নারীর সংসারজীবন সবদিক থেকে নিশ্চিন্ত, সংসার হারিয়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ানোর বা বাপের বাড়িতে গিয়ে বোঝা হওয়ার ভয় তার কখনো থাকে না। আর এটাই একটি নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় অধিকার, যা হিন্দুধর্ম তাকে প্রদান করেছে, যদি মেয়েরা তা বোঝে।

লেখক: সংবাদকর্মী।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test