E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বিশ্ব আজ দু’টি শিবিরে বিভক্ত

২০২৩ অক্টোবর ০৬ ১৬:২১:২৮
বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বিশ্ব আজ দু’টি শিবিরে বিভক্ত

আবীর আহাদ


তথাকথিত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নগ্ন হস্তক্ষেপকে কেন্দ্র করে বিশ্ব আজ দু'টি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এ বিষয়ে তাকে সমর্থন দিচ্ছে তার পদলেহী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ ক'টি রাষ্ট্র। তবে ফ্রান্স, তুরস্ক, জার্মানী, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরো কয়েকটি রাষ্ট্র মার্কিনিদের চরম পন্থাকে সমর্থন নাও দিতে পারে। ব্রিটেন, কানাডা ,অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চরম পন্থায় সমর্থন দেবে তাতে সন্দেহ নেই।

অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরাশক্তি রাশিয়া ও চীন। সেইসঙ্গে ইরান, সৌদি আরব, উত্তর কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, এমনকি পাকিস্তান বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেবে। কৌশলগত কারণে ফ্রান্স ও তুরস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচরণ না করলেও ভেতরে ভেতরে তারা বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে। অন্যতম পরাশক্তি ও বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধানতম মিত্র ভারতের সাথে হালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠলেও ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত কোনোক্রমেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি মেনে নেবে না। বাস্তব কারণে এখানেই চীন ও রাশিয়ার সাথে ভারতের গাঁটছড়া গড়ে উঠবে যা বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে।

তবে আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে-পড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভূত্বগীরী ফলানোর জন্যে এখানে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিতে সাহস করবে না। তবে কিছু কিছু স্যাংশন, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ এধরনের কিছু পদক্ষেপ নিতে থাকবে। তবে বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং চীনের সাথে তাইওয়ানের যে রেষারেষি চলছে, সেসবের মধ্যে নাক গলাতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলা চলে ফেঁসে গেছে। আর এ অবস্থায় বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বিশ্ব যখন দু'টি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই আরেকটি সামরিক জাতীয় আত্মঘাতী পদক্ষেপ নিতে যাবে না। কারণ আন্তর্জাতিক ও ভৌগোলিক বিবেচনায় বাংলাদেশে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা মার্কিনিদের জন্যে কোনোভাবেই অনুকূল নয়।

মূলতঃ একটু জুজুর ভয় দেখিয়ে ছোট্ট বাংলাদেশকে বশে এনে সে তার সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তার মূল লক্ষ্য , ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে, বিশেষ করে ছোট্ট বাংলাদেশকে বশে এনে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি বসিয়ে বিশ্বের ৩য় ও ৪র্থ সামরিক শক্তি চীন ও ভারতকে মোকাবিলা করা। এ বিষয়টি চীন বুঝলেও ভারত এখনো বুঝেনি। তবে আজ হোক কাল হোক, ভারতও বুঝবে। এবং এ বুঝার মধ্য দিয়ে নয়া মেরুকরণ সৃষ্টি হবে। ঐক্যবদ্ধ হবে রাশিয়া, চীন ও ভারত। আর এই তিন পরাশক্তির ঐক্যের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভূত্বগীরী চিরতরে ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। সেদিন বেশি দূরে নয়।

লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test