স্ট্রোক প্রতিরোধে প্রয়োজন অলস জীবনযাপন পরিহার করা
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
আজ রবিবার বিশ্ব স্ট্রোক দিবস ২০২৩। স্ট্রোক সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতি বছর ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উদযাপিত হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালন করা হচ্ছে। এবারের স্ট্রোক দিবসের প্রতিপাদ্য হলো—নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়।
মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কোনো কারণে বিঘ্নিত হলে স্ট্রোক সংঘটিত হয়। বিশেষ করে রক্তনালী বন্ধ হয়ে কিংবা রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কে এই রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। রক্তে থাকে অক্সিজেন আর পুষ্টিগুণ। ফলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো মারা যায়। স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ হলো উচ্চরক্তচাপ। সারাবিশ্বে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক।
স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে হলে লক্ষণও জানা চাই। কারণ, লক্ষণ না জানার কারণে স্ট্রোক হওয়ার পরও চিকিৎসা নিতে দেরি করে অনেকে।লক্ষণগুলোকে সংক্ষপে বলা হয় FAST। এখানে F = Face = মুখ বেঁকে যাওয়া, A = Arm = হাত দুর্বল অথবা অবশ হয়ে আসা, S = Speech = কথা জড়িয়ে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয় এবং T = Time তথা যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে আগে থেকেই খোঁজ নিয়ে রাখতে হবে কোন হাসপাতালে স্ট্রোকের ভালো চিকিৎসা রয়েছে। সারাবিশ্বে মানুষের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ ধরা হয় স্ট্রোককে।স্ট্রোক দুই ধরনের। রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং রক্তনালি ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো শরীরের ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে চোখে কম দেখা, মাথা ঘোরানো, অচেতন হয়ে পড়া, শরীরের এক দিক অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
স্ট্রোকে আক্রান্ত ৫০ শতাংশ রোগীর পক্ষাঘাত ঘটে আর এত দিন সবার ধারণা ছিল স্ট্রোক শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদের হয়। তবে সেই ধারণা এখন পরিবর্তন হয়েছে। করোনার মধ্যে তরুণদের স্ট্রোকের সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী যত অসংক্রামক ব্যাধি আছে, সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুর দিক থেকে হৃদ্রোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান এবং শারীরিক অক্ষমতার জন্য স্ট্রোক সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। যাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধকোটি মৃত্যুবরণ করেন এবং প্রায় অর্ধকোটি মানুষ সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেন। এই তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, স্ট্রোক কত ভয়ানক একটি মরণব্যাধি। প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের জীবনের যেকোনো সময় স্ট্রোক হতে পারে। উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এই ঝুঁকি নিয়মিত বেড়েই যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এটা ৮০ ভাগ বাড়তে পারে।
২০১৩ সালে প্রায় ৬৯ লাখ লোকের রক্তসংরোধজনিত স্ট্রোক ও ৩৪ লাখ লোকের রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক হয়েছিল। ২০১৫ সালে প্রায় ৪ কোটি ২৪ লাখ মানুষ ছিল যাদের পূর্বে একবার স্ট্রোক হয়েছিল এবং তখনও জীবিত ছিল। ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রতি বছর স্ট্রোক রোগীর সংখ্যা উন্নত বিশ্বে ১০% হ্রাস পেয়েছিল এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে ১০% বৃদ্ধি পেয়েছিল ২০১৫ সালে মৃত্যুর কারণের দিক থেকে করোনারি ধমনি রোগের পর স্ট্রোকের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। সেবছর স্ট্রোকে মারা গিয়েছিল ৬৩ লাখ মানুষ যা মোট মৃত্যুর প্রায় ১১%। প্রায় ৩০ লাখ মৃত্যু ঘটেছিল রক্তসংরোধজনিত স্ট্রোকে যেখানে রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকে মারা গিয়েছিল ৩৩ লাখ লোক। স্ট্রোকে আক্রান্ত মোট লোকের প্রায় অর্ধেকই এক বছরের কম সময় বাঁচে।সার্বিকভাবে, প্রায় দুই তৃতীয়াংশ স্ট্রোক রোগীর বয়স ছিল ৬৫ বছরের বেশি।
২০১৭ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি ১ হাজারের মধ্যে প্রায় ১১ দশমিক ৩৯ জনের স্ট্রোক হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যাই বেশি এবং নারীদের তুলনায় পুরুষ প্রায় দ্বিগুণ। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস কিংবা হৃদ্রোগ ছিল অথবা তাঁরা ধূমপান, অ্যালকোহল বা অন্য কোনো তামাক সেবন করতেন। তবে এই সব কটি কারণই কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা যায়।২০১৮ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১ দশমিক ৩৯ জন মানুষ। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে। স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ৭ গুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি স্ট্রোকের প্রকোপ।দেশে ক্রমাগতই বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৫ হাজার ৫০২ জন। যা বেড়ে ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনে।
আর স্ট্রোকের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখে আমরা ধারণা করতে পারি, কোনো ব্যক্তির স্ট্রোক হয়েছে কি না। যেমন হঠাৎ কারও শরীর এক পাশ অবশ হয়ে যাওয়া বা মুখ বেঁকে যাওয়া অথবা কথা জড়িয়ে যাওয়া স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ। কখনো কখনো তীব্র মাথাব্যথা, যা আগে কখনো হয়নি, মাথা ঘোরানো কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়াও স্ট্রোকের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের লক্ষণ যদি কারও মধ্যে দেখা যায়, তাহলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। কারণ, প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে আসতে পারলে বিশেষ কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কিন্তু সময় পার হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষগুলো স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ এমনকি রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এখন পর্যন্ত স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসা মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক হলেও প্রান্তিক জনগণকে চিকিৎসাসেবার আওতায় আনার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ এবং জনসচেতনতা।
স্ট্রোকের ইতিহাস
খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দ থেকে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া ও পারস্য সভ্যতা পর্যন্ত স্ট্রোক ও পারিবারিক স্ট্রোকের বর্ণনা পাওয়া যায়।হিপোক্রেটিস (৪৬০ থেকে ৩৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি আকস্মিক পক্ষাঘাত।পক্ষাঘাতের বর্ণনা দিয়েছিলেন যা প্রায়শই ইস্কিমিয়া বা রক্তসংরোধের সাথে সম্পর্কিত। এই বিষয়টিকে বর্ণনা করতে হিপোক্রেটিস তাঁর লেখায় গ্রিক ভাষার শব্দ অ্যাপোপ্লেক্সি বা সন্ন্যাস রোগ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন যার অর্থ হলো "মস্তিষ্কের রক্তনালিতে আঘাতের ফলে চেতনাশক্তি ও চলার ক্ষমতার লোপ" হিপোক্রেটিসের একটি বাণী হলো "অ্যাপোপ্লেক্সির তীব্র আক্রমণ আরোগ্য করা অসম্ভব এবং হালকা আক্রমণ আরোগ্য করা কঠিন।
- অ্যাপোপ্লেক্টিক সিজার বা সন্ন্যাস রোগজনিত খিঁচুনির প্রতিশব্দ হিসেবে স্ট্রোক প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হয়েছিল ১৫৯৯ সালের দিকে।এবং এটি গ্রিক পরিভাষার আক্ষরিক অনুবাদ। অ্যাপোপ্লেক্টিক স্ট্রোক একটি প্রাচীন, অনির্দিষ্ট শব্দ যা রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকে ব্যবহৃত হয়।মার্টিন লুথার ১৫৪৬ সালে মৃত্যুর ঠিক পূর্বে অ্যাপোপ্লেক্টিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে বর্ণিত হয়েছে যা তাঁর বাচন ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। ১৬৫৮ সালে, জোহান জ্যাকব ওয়েপফার (১৬২০-১৬৯৫) তাঁর অ্যাপোপ্লেক্সিয়াতে রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকের কারণ শনাক্ত করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন যে যাদের সন্ন্যাস রোগে মৃত্যু হয় তাদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ থাকে। ওয়েপফার মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান ধমনিগুলো যেমন ভার্টিব্রাল ও ক্যারোটিড ধমনি চিহ্নিত করেছিলেন, এবং সেরিব্রাল ইনফার্কশন নামে পরিচিত এক ধরনের রক্তসংরোধজনিত স্ট্রোকের কারণ শনাক্ত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, অ্যাপোপ্লেক্সি বা সন্ন্যাস রোগ ঐ সকল রক্তবাহের অবরোধের ফলেও হতে পারে।রুডল্ফ ফিরখো প্রথমবারের মতো প্রধান ফ্যাক্টর হিসেবে থ্রম্বোএম্বোলিজম গঠিত হওয়ার কৌশল বর্ণনা করেন।
সেরিব্রোভাস্কুলার দুর্ঘটনা শব্দটি ১৯২৭ সালে করা হয়েছিল, এটি যে ধারণার প্রতিফলন করছিল তা হলো "নালি সম্বন্ধীয় তত্ত্বসমূহ সম্পর্কে একটি বর্ধনশীল সচেতনতা ও গ্রহনযোগ্যতা এবং মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহের আকস্মিক বিঘ্ন ঘটার পরিণতির স্বীকৃতি" অনেক স্নায়ু বিদ্যার পাঠ্যবইয়ে বর্তমানে এই শব্দের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হয় এই যুক্তিতে যে, দুর্ঘটনা শব্দটি দ্বারা যে আকস্মিকতার গূঢ়ার্থ বুঝায় তা দ্বারা এর ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টরগুলোর পরিবর্তন বা সংশোধনযোগ্যতা কে পর্যাপ্তভাবে গুরুত্বারোপ করে না।এর পরিবর্তে সেরিব্রোভাস্কুলার ইনসাল্ট পরিভাষাটিও ব্যবহার করা যায়।
স্ট্রোকের তীব্র প্রকৃতি বুঝাতে আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন ব্রেইন অ্যাটাক বা মস্তিষ্ক আক্রমণ পরিভাষাটির প্রচলন করেছিল, যা ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করা হতোএবং বর্তমানে ইস্কিমিক ও হেমোরেজিক উভয় প্রকার স্ট্রোক বুঝাতেই কথ্যরূপে ব্যবহৃত হয়।
স্ট্রোকের প্রধান কারণ ও করণীয়
বিশ্বব্যাপী যত অসংক্রামক ব্যাধি আছে, সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুর দিক থেকে হৃদরোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান।এছাড়া পঙ্গুত্বের অন্যতম বড় কারণ স্ট্রোক। দিন দিন এতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বলে মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরা হয়, তাহলে প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে ১১ জনই স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ উচ্চ রক্তচাপ।
কয়েকটি কারণে স্ট্রোক হতে পারে সেগুলো হল:
- রক্তে কোলেস্টোরেলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে।
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলে। হৃদরোগ থাকলে।
- মানসিক চাপ, অতিরিক্ত টেনশন, অবসাদের মতো মানসিক সমস্যা থাকলে।
- সারাদিন শুয়ে বসে থাকলে, কায়িক পরিশ্রম না করলে, ওজন অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে।
- অস্বাস্থ্যকর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। বিশেষত অতিরিক্ত তেল ও চিনিযুক্ত, ভাজাপোড়া খাবার ও পানীয় খেলে।
- ধূমপান, তামাক-জর্দা বা অন্যান্য মাদক সেবন, মদপান।
নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে স্ট্রোকের ঝুঁকি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
>স্ট্রোকের জরুরি সংকেত
* মুখের এক দিক ঝুলে পড়া বা অবশ হয়ে ।
* দুই হাতের কোনো একটির বাহু দুর্বল বা অবশ হলে বা একটি হাত ঝুলে পড়ে গেলে।
* কথায় জড়তা থাকলে।
এগুলোর মধ্যে কোনো একটি দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের কাছে যান।
> অন্যান্য উপসর্গ
* অবশ হওয়া দেহের একদিকে মুখ, বাহু বা পা অবশ বা দুর্বল হওয়া
* হতবিহ্বল কথা বলতে থাকা, বুঝতে সমস্যা হওয়া
* এক চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া
* হাঁটতে অসুবিধা হওয়া বা মাথা ঝিমঝিম করে ওঠা
* কারণ ছাড়া প্রচণ্ড মাথা ধরা
> স্ট্রোক দুই ধরনের
_ইস্কিমিক স্ট্রোক: এ ধরনের স্ট্রোকে রক্তনালির পথে ক্লট বা রক্তপিণ্ড জমে রক্ত চলাচলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৮৭ শতাংশ স্ট্রোক হলো ইস্কিমিক স্ট্রোক।
_ হেমোরেজিক স্ট্রোক: মগজে রক্ত পৌঁছে দেয় এমন রক্তনালি দুর্বল হয়ে ফেটে বা ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হলে এ ধরনের স্ট্রোক হতে পারে। এর মূল কারণ উচ্চ রক্তচাপ।
এ ছাড়া মিনি স্ট্রোক হয় অনেক সময়। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ট্রাঞ্জিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক। এতে মগজে সাময়িকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
> স্ট্রোকের আক্রান্ত থেকে মুক্ত থাকতে ঘরোয়া কয়েকটি পরামর্শ:-
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা।
- অতিরিক্ত তেলচর্বি ও চিনি-লবনযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড এড়িয়ে পুষ্টিকর ডায়েট মেনে চলা।
- ধূমপান, জর্দা-তামাক, মাদক সেবন, মদপান এড়িয়ে চলা।
- প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম। শরীরচর্চা বা নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করা। ওজন ঠিক রাখা।
- প্রতি ছয়মাস অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।
হোমিও সমাধান
স্যামুয়েল হ্যানিম্যানের আবিষ্কৃত চিকিৎসা পদ্ধতির নাম হোমিওপ্যাথি। যেকোনো ওষুধ সুস্থ মানুষের ওপর যে রোগ লক্ষণ সৃষ্টি করে তা সৃদশ লক্ষণের রোগীকে আরোগ্য করতে পারে। অর্থাৎ ওষুধের রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষমতার মাধ্যমেই এ রোগ আরোগ্যকারী ক্ষমতা নিহিত। এমনটাই মনে করে স্যামুয়েল হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি আবিষ্কার করেন। আর স্ট্রোকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধের কার্যকারিতা বহু প্রাচীনকাল থেকেই সন্দেহাতীতবাবে দৃঢ়তার সাথে প্রমাণিত হয়ে আসছে।স্ট্রোক যে সব ঔষধ ব্যবহৃত হয়। সেগুলোর মধ্যেই আর্নিকামন্ট, জেলসিয়াম, কস্টিকাম, এসিড হাইড্রোসিয়ানিক, হায়োসিয়াম, ল্যাকেসিস, লাইকোপোডিয়াম, ওপিয়াম সহ আরো অনেক ঔষধ লক্ষণের উপর আসতে পারে।
পরিশেষে বলতে চাই, স্ট্রোক থেকে মুক্ত থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম, সকাল-বিকাল হাঁটাচলা করতে হবে এবং অলস জীবনযাপন পরিহার করতে হবে। দুশ্চিন্তা বা টেনশনমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত ধর্মচর্চা এ ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আর স্ট্রোক অবশ্যই একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। একবার আক্রান্ত হয়ে গেলে চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল, ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। আক্রান্ত রোগী নিজে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, পরিবারের জন্য অনেক সময় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রতিরোধ করাই সর্বোত্তম। প্রান্তিক জনগণকে চিকিৎসাসেবার আওতায় আনার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ এবং জনসচেতনতা।
লেখক :কলাম লেখক ও গবেষক।
পাঠকের মতামত:
- টানা পাঁচ দফা কমলো স্বর্ণের দাম
- কানাইপুরের মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ
- নড়াইলে মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে সফুরা খাতুন বেলী চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- লাখো দর্শকের পদচারনায় শেষ হলো তিন দিনব্যাপী জালাল মেলা
- শ্রীমঙ্গল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
- ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ পেল ওয়ালটন
- যশোরে উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা, আটক ২
- কালিয়াকৈর পাবলিক গ্রুপের বিনামূল্যে শরবত বিতরণ
- ‘কমিশনের বার্তা একটাই অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হবে’
- মাগুরায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
- নড়াইলে আদালতে হাজিরা দিতে এসে গাঁজাসহ যুবক গ্রেফতার
- দিনাজপুরে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালিত
- বিরল উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ
- দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাভার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাজীব
- লক্ষ্মীপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন
- কোরবানির ঈদে পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
- রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড ছিঁড়লেন ছাত্রলীগ নেতা!
- মহম্মদপুরে পুলিশের পৃথক অভিযানে গাঁজাসহ আটক ২
- ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে’
- ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক
- নাগরপুরে ট্রাক্টর-সিএনজি সংঘর্ষে যুবকের মৃত্যু
- সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম
- টাঙ্গাইলে শ্রেণীকক্ষে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন মাদ্রাসা শিক্ষক
- হিট স্ট্রোকে প্রার্থীর মৃত্যু, গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত
- মোংলায় টেইলার্স কারখানায় আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেল রূপালি ব্যাংক
- ফরিদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত
- চাঁদপুরে নৌ পুলিশের অভিযানে জেলেসহ গ্রেপ্তার ২২
- চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- সাংবাদিক শাহীর পিতা মেহেরাব আলীর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার
- আ.লীগের প্রতিপক্ষ আ.লীগ
- মহম্মদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা
- কাপ্তাইয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়
- দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অসহনীয় তাপমাত্রা কেন?
- মেয়েদের এডিট করা ‘আপত্তিকর’ ছবি ফেসবুকে ছেড়ে ব্ল্যাকমেইল, ৪ যুবক গ্রেপ্তার
- বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ‘কৌশল’
- সালথায় টিউবওয়েলের পানি খেয়ে আতঙ্কে অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
- ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত
- মস্কোজয়ী ‘আদিম’ আসছে ওটিটিতে
- সান্তাহারে ইয়াবাসহ ২ মাদকের কারবারি গ্রেপ্তার
- গৃহবন্দীদশা থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন কিশোর শেখ জামাল
- সুন্দরবনের ‘বনবাস’: বনের ভেতর অন্যরকম অনুভূতি
- ফুলপুরে হাবিবের আনারস মার্কার গণজোয়ার
- বোয়ালমারীতে রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে আল আলী ইটভাটায়
- পদ্মা সেতুতে দেড় হাজার কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক
- খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রামে যান চলাচল বন্ধ
- যশোরে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু
- ঈশ্বরদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
- গোপালগঞ্জে র্যাবের নকল ড্রেস, ওকিটকি ও নকল পিস্তল উদ্ধার
- পণ্য পরিবহন ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট প্রত্যাখান
- জাতির পিতার সমাধিতে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরের শ্রদ্ধা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !