নিজের অধিকারের প্রশ্নে হতে হবে আপোষহীণ
![নিজের অধিকারের প্রশ্নে হতে হবে আপোষহীণ](https://www.u71news.com/article_images/2023/12/08/Nilkantha-Aich-Majumdar.jpg)
নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার
হাল সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি শব্দ মানবাধিকার। অবস্থাষ্টে মনে হয় এ শব্দটি নিয়ে যারা বেশি কথা বলে তারাই এ বিষয়টির হরণকারি। বেশি কথা বলার পাশাপাশি চলে হরণের নগ্ন হামলা। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়া সম্পর্কে যতকথা বলা হয় তা রক্ষার জন্য তত কাজ করা হয় বলে হয় না। প্রেস রিলিজে আটকে যায় মানবতা। মানবাধিকারের নাম করে বিভিন্ন প্রকার অত্যাচার চলে ছোট দেশ ও সাধারণ মানুষের উপর। এই অত্যাচারের মাধ্যমে বড়রা ছোটদের মানবাধিকার হরণ করছে তা কিন্তু ভাবা হচ্ছে না। এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রায়ই কিন্তু সত্যিকার অর্থে এসবের প্রতিকার পাওয়া অনেক কঠিন। প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় মানবাধিকার দিবস।
দিবসটি নিয়ে আলোচনার পূর্বে তার জন্ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১০ ডিসেম্বরকে মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। বলা চলে সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরুপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন। পরবর্তীতে ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সদস্যভূক্ত দেশ সমুহ এবং আগ্রহী সংস্থাগুলোকে নিজেদের মতো করে উদযাপনের আহবান জানানো হয়। প্রতিবারই মানবাধিকার দিবস আসে পালিত হয় জাঁকজমকপূর্ণভাবে কিন্তু কাজ হয় একেবারেই কম। মানবাধিকার দিবসের আলোচনার পূর্বে জানা প্রয়োজন মানবাধিকার কি? কারণ মানবাধিকার কি সেটা সাধারণ মানুষ না জানলে মানবাধিকার রক্ষা করা একেবারেই সম্ভব নয়। মানবাধিকারের বিষয়গুলো জানা থাকলে এবং লঙ্ঘিত হলে এর প্রতিকার চেয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তি এই লঙ্ঘনের বাইরে নয়। উকিপিডিয়া থেকে নেয়া মানবাধিকারের কিছু আলোচনার পর সেগুলিকে আরো স্পষ্ট করা যেতে পারে।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারই হচ্ছে মানবাধিকার। এছাড়া মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ মাত্রই এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারন হতে পারবে না। মূল কথা হলো মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য। আমাদের মতো দেশে সমস্যাটা সে জায়গাই সবচেয়ে বেশি। আইন সকলের জন্য সমান বলা হলেও বাস্তবে তা নেই। আইনের প্রয়োগ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করবে।
জন্মগতভাবে সকল মানুষ স্বাধীন এবং সমান সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবে। এক কথায় বলা যায়, দৈনন্দিন জীবনে চলার জন্য মানুষের যে সকল অধিকার রাষ্ট্রের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত তাদেরকে মানবাধিকার বলে। রাষ্ট্র পরিচালনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হচ্ছে সংবিধান। সংবিধান অনুযায়ি দেশ পরিচালিত হলে মানুষের অধিকার রক্ষা হবে কিন্তু মানবাধিকারের বেলায় সংবিধান মানা হয় না। সকল মানুষ সব জায়গায় সকল অধিকার পায় না সঠিকভাবে। বাংলাদেশে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) স্বায়িত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে অস্তিত্ব লাভ করে। সংস্থাটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের বিধানের অধীনে গঠিত হয়েছিল। পরবর্তী বছর ডিসেম্বর মাসে কমিশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মানব মর্যাদা ও অখন্ডতার মূর্ত প্রতীক এবং গণতন্ত্রের মৌলিক শৃঙ্খলা রক্ষায় অবদান রাখা যাতে সকল ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত হয় এবং মানবাধিকারের মান উন্নত হয়।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন মানুষের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এসব সংগঠন এবং আইন কোন কিছুই সাধারণ মানুষকে অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না। দেশ বিদেশে আজ মানবাধিকার হরণের মহোৎসব চলছে। যার ফলে মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষমতার লোভে প্রতিনিয়তই সাধারণ মানুষ অত্যাচারিত হচ্ছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় নিলজ্জভাবে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন ও ধর্ষণ করে বিতারিত করা হয়েছে দেশ থকে। যাযাবরের মতো জীবন যাপন করতে হচ্ছে বাংলাদেশে। গাজাতে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি ঘর হাসপাতাল।
আমরা শুধু বলে যাচ্ছি মানবাধিকার হরণের কথা কিন্তু এর জন্য কার্যকরি কোন ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছি। শুধু ক্ষমতার মোহে হারিয়ে যাচ্ছে মানবতা। চলছে ইউক্রেনে হামলা। মীমাংশার কাজ না করে দেওয়া হচ্ছে উসকানি। সারা পৃথিবীতেই আজ মানবতার আকাল। থেমে নেই ১৯৭১ সালে এক সাগর রক্ত আর মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে যুদ্ধ করে স্বাধীন করা বাংলাদেশটাও। মতের অমিল আর ক্ষমতার লোভে মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হচ্ছে বারবার। সমাজ ব্যবস্থায় তৈরি হচ্ছে নানা অসঙ্গতি। আগামীর সুন্দর সোনার বাংলা বির্নিমাণে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার স্থাপন একান্ত জরুরি। প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি গ্রাস করছে সাধারণ মানুষদের। ফলে মানুষের মৌলিক অধিকারের জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। তাই অধিকার রক্ষায় প্রত্যেকেই নিজের জায়গা থেকে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। অধিকার পাওয়া নয় আদায় করে নিতে হবে। নিজে সচেতন হয়ে আদায় করে নিতে নিতে হয়তো একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে মানবাধিকার।
লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।
পাঠকের মতামত:
- বিদেশি উৎসবে মেহজাবীনের প্রথম সিনেমা
- ‘ব্যর্থতা আড়াল করতে মানুষকে গ্রেপ্তার করছে সরকার’
- ছাত্রনেতাদের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের আলোচনার আহ্বান
- কোটা আন্দোলনে আহতদের আয়-রুজির ব্যবস্থার আশ্বাস
- ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেফতার ২৩৫৭
- সাংবাদিকদের উপর ও বিটিভি ভবনে হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ
- নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের পুনঃপ্রত্যয় হয় জয়, না হয় মৃত্যু!
- মাদারীপুরে সহিংসতায় দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত
- স্কুলের জমিতে দোকান, কোমলমতি শিশুদের পাঠদান ব্যাহত
- রাজবাড়ীতে ইউপি সদস্যসহ ২ সহোদর কারাগারে
- ‘শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে’
- ‘যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
- সেমিফাইনালে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
- প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা
- ট্রাম্প কী পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরছেন
- বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র, মুম্বাইয়ে রেড অ্যালার্ট
- যা থাকছে প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
- আপাতত বন্ধই থাকছে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ
- ইথিওপিয়ায় ভূমিধসে ২২৯ জনের মৃত্যু
- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে নাক না গলাতে মমতাকে নয়াদিল্লির বার্তা
- গৌরনদীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ বিতরণ
- গ্রেপ্তারদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিতের আহ্বান কানাডার
- বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬ বিলিয়ন ডলার
- আশাশুনির বাহাদুরপুরে বাসন্তী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর
- সাতক্ষীরায় নাশকতার মামলায় জামায়াত বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- ভাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর বেঁচে থাকার আর্তনাদ
- দুর্নীতিবাজ সিনহার বই অন্তর্জ্বালা থেকে : আইনমন্ত্রী
- সংলাপে রাজি নন আন্দোলনকারীরা
- আর্জেন্টিনার জয়ে খুশি মেহজাবীন
- ‘নতুন কারিকুলামের শিক্ষা সার্কভুক্ত দেশগুলোও ফলো করছে’
- ট্রাম্পের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের জন্য অনুদান দিলেন ইলন মাস্ক
- কালিগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
- প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে যাচ্ছে বেনজীরের রূপগঞ্জের ডুপ্লেক্স বাড়ি
- কোটা বাতিলের দাবিতে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ
- নাটোরের বড়াইগ্রামে ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার সমাপনী
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী
- রাজবাড়ীতে শিক্ষার্থী-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত ২
- কোটা সংস্কার ইস্যুতে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র
- মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৩০, আটক ৮
- ‘পরিস্থিতি বুঝে মোবাইল ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে’
- নেপালে বন্যা-ভূমিধসে নিহত অন্তত ১১
- মিছিলে মিছিলে মুখরিত কোটালীপাড়া
- বোয়ালমারীতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে জরিমানা