E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হয়রানি মুক্ত অভিবাসন নিশ্চিত করতে আন্তরিকতার প্রয়োজন

২০২৩ ডিসেম্বর ১৭ ১৭:৫২:৫৬
হয়রানি মুক্ত অভিবাসন নিশ্চিত করতে আন্তরিকতার প্রয়োজন

ডা. মুহাম্মদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২৩। বাংলাদেশে এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে "প্রবাসি কর্মীরা উন্নয়নের অংশীদার সমুন্নত রাখবো তাঁদের অধিকার "আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সকল সদস্যভুক্ত দেশে পালিত হয়ে আসছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে দিনটি বিশ্বব্যাপী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। মূলতঃ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি।

এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমানো মানুষদের আমরা বিভিন্ন নাম দিয়ে থাকি।এসব নাম প্রায়ই শুনে থাকি: প্রবাসী, অভিবাসী, শরণার্থী বা আশ্রয় প্রার্থী।আন্তর্জাতিক অভিবাসন হলো যখন মানুষ নিজ রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করে এবং গন্তব্য দেশে ন্যূনতম সময়ের জন্য অবস্থান করে।অভিবাসন অনেক কারণেই ঘটে। অন্য দেশে অর্থনৈতিক সুযোগের সন্ধানের জন্য অনেকে নিজের দেশে ছেড়ে চলে যায়। অভিবাসন করেছেন এমন পরিবারের সদস্যদের সাথে থাকতে অনেকে স্থানান্তরিত হয়। তাদের দেশে রাজনৈতিক অবস্থার কারণেও অভিবাসন হয়ে থাকে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে যায় তাই আন্তর্জাতিক অভিবাসনের আরেকটি কারণ শিক্ষা।

আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের শ্রেণীবদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন সম্ভাব্য ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও একটি ব্যবস্থা তাদের নয়টি দলে সংগঠিত করে: অস্থায়ী শ্রম অভিবাসী; অনিয়মিত অভিবাসী, অবৈধ, বা অনিবন্ধিত অভিবাসী; অত্যন্ত দক্ষ এবং ব্যবসায়ী অভিবাসী; শরণার্থী; আশ্রয়প্রার্থী; জোরপূর্বক অভিবাসী; পরিবারের সদস্যগণ; প্রত্যাবৃত্ত অভিবাসী; এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বল্প দক্ষ অভিবাসী।এই অভিবাসীদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী দুটি বৃহৎ দলে ভাগ করা যায়। স্থায়ী অভিবাসীরা নতুন দেশে তাদের স্থায়ী বাসস্থান প্রতিষ্ঠা করা এবং সম্ভবত সেই দেশের নাগরিকত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে আসেন। অস্থায়ী অভিবাসীরা কেবলমাত্র সীমিত সময়ের জন্য থাকার উদ্দেশ্যে আসেন। তারা অধ্যয়নের কোনও নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম, তাদের কাজের চুক্তি বা নির্দিষ্ট কাজের জন্য আসেন।উভয় ধরনের অভিবাসী বিদেশ এবং স্বদেশের অর্থনীতি এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

একইভাবে, যেসব দেশ এই অভিবাসীদের গ্রহণ করে তাদের প্রায়শই চারটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়: ঐতিহ্যবাহী বসতি দেশ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে শ্রম অভিবাসনকে উৎসাহিত করেছে এমন ইউরোপীয় দেশ, ইউরোপীয় দেশ যারা তাদের পূর্ববর্তী উপনিবেশগুলো থেকে অভিবাসী জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ গ্রহণ করে এবং যে দেশগুলো থেকে পূর্বে অনেকে অন্য দেশে যেত তবে সম্প্রতি অভিবাসীরা সেই দেশে আসে।এই দেশগুলো দুইভাবে গোষ্ঠীভুক্ত করা হয়। যথা, প্রবাসী-প্রেরণকারী ও অভিবাসী-গ্রহণকারী দেশ যাদের প্রশাসনের সমস্যা রয়েছে। তবে এইভাবে শ্রেণিবদ্ধ করাটি কৃত্রিম এবং এটি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়গুলোকে অস্পষ্ট করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি অভিবাসী-প্রেরণকারী দেশ একইসাথে অভিবাসীদের গ্রহণকারী দেশ হয়ে থাকে।

সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর মধ্যে বিস্তৃত বহুসংস্কৃতি জনসংখ্যা রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৮% অভিবাসী। কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাতই নয়, কাতারে ৭৪%, কুয়েতে ৬০%, এবং বাহরাইনের ৫৫% জনসংখ্যা বিভিন্ন দেশ (যেমন, ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান) থেকে চলে এসেছেন। জনসংখ্যার ৫০০% বৃদ্ধি হয়ে জনসংখ্যা ১৯৯০ সালে ১৩ লাখ থেকে ২০১৩ সালে ৪৮ লাখে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সরকারের সাথে তুলনা করে, বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসন পূর্বের ওবামা প্রশাসনে শরণার্থী এবং আশ্রয় প্রার্থীদের সংখ্যা দ্বিগুণ করে ১২,০০০ জন করেছে এবং ২০২০ সালের মধ্যে এটি হবে মাত্র ১৮,০০০ জন। অভিবাসন ও সীমান্ত পরিষেবা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এ বছর অতীতের চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশি দাবি করা হয়েছে এবং তা পূর্ববর্তী প্রশাসনের চেয়ে অর্ধেকেরও কম স্বীকৃতি পেয়েছে। ওবামা প্রশাসনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া প্রতিবেদনের সংখ্যা ১১০,০০০ যা ২০২০ সালের মধ্যে ৩৪৮,০০০-এ পৌঁছেছে।

এই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে আছে: রেমিটেন্সের ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দেশের অভ্যন্তরে প্রবাসীদের অধিকার এবং আগত অভিবাসীদের অধিকার। মানুষ আর্থিকভাবে সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশে অভিবাসিত হতে শুরু করার সাথে সাথে রেমিটেন্স হিসাবে তাদের আয় পাঠিয়ে তাদের দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে। বিশ্বব্যাংকের এক অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বিভিন্ন দেশের মানুষ প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পায় এবং এটি পরের বছরে ০.৪% বৃদ্ধি পেয়ে, ৫৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের গোড়ার কথা

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি। শুরুর দিকে তারা ১৮ ডিসেম্বরকে নির্ধারণ করে এবং অভিবাসীদের ঘিরে, আন্তর্জাতিক ঐক্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। উল্লেখ্য ১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ অভিবাসী শ্রমিক ও দেশে তাদের রেখে আসা পরিবারের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছিল। এই সম্মেলনে অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ৪৫/১৫৮ প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষাপটে ১৮ ডিসেম্বর দিনটিকে লক্ষ্য করে মাইগ্রেন্ট রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন মাইগ্রেন্টস রাইটসসহ বিশ্বের অনেক সংগঠন অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বৈশ্বিকভাবে প্রচারণা চালায়। ১৯৯৭ সাল থেকে ফিলিপিনো এবং অন্যান্য এশীয় অভিবাসী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করতে শুরু করে। অবশেষে ১৯৯৯ সালের শেষার্ধে অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণার ফলে জাতিসংঘের মুখপাত্র ১৮ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হন। ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। অভিবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। অভিবাসী ভাইবোনেরা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের ১৬০টি দেশে প্রায় ৯০ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৩ জন বাংলাদেশি কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৭৪ হাজার ২১৩ জন নারী কর্মী। বর্তমানে বছরে প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহের হার ৬১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। যা বিগত সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি। যাদের অর্থে সচল আমারেদর অর্থনীতির চাকা তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মানবপাচার বিরোধী আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি অভিবাসন ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে বিশ্বের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিদেশে যেতে আগ্রহী অভিবাসীদের কর্মের সুযোগ সৃষ্টিতে নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানসহ অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রতারণারোধ, অভিবাসন ব্যয়হ্রাস, প্রশিক্ষণ, ঋণপ্রাপ্তিতে সহজকরণের মাধ্যমে অভিবাসীর অধিকার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। এছাড়াও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন সাধন এবং নিরাপদ অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে পারে। তাই অভিবাসী নারী-পুরুষ ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

অভিবাসনের কারণ

★ বিকর্ষকারণ

* নিম্নমানের স্বাস্থ্যসেবা * অপর্যাপ্ত চাকরি
* সীমিত সুযোগ * অনুন্নত জীবনমান * রাজনৈতিক ভয় * অত্যাচার ও দুর্ব্যবহারের ভয়
* ধর্মীয় বৈষম্য * অর্থ-সম্পদের ক্ষতি
* প্রাকৃতিক দুর্যোগ * উৎপীড়ন

★ আকর্ষকারণ

* চাকরির সুযোগ * উন্নত জীবনমান * উপভোগ
* শিক্ষা * ভালো স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা * পারিবারিক সম্পর্ক * নিম্ন অপরাধ হার

> অভিবাসী , শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য

* অভিবাসী:

কোন দেশে শিক্ষা,ব্যবসা, চাকুরি,শ্রম , গবেষণা ইত্যাদির জন্য স্থায়ী বা অস্থায়ী ভিত্তিতে বসবাসের উদ্দেশ্যে পাড়ী জমায় তখন তাকে অভিবাসী বলে। মানুষ বিভিন্ন কারণে অভিবাসী হতে পারে। কাজ বা উন্নততর জীবনযাপনের খোঁজে যাঁরা দেশ ছাড়েন, তাঁদের অর্থনৈতিক অভিবাসী বলা হয়।

পড়াশোনার উদ্দেশ্য বা পারিবারিক কারণেও অনেকে অভিবাসী হয়। নিজ দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে বা পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও মানুষ অভিবাসনের পথ বেছে নেয়।

* শরণার্থী :

সশস্ত্র লড়াই বা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে যদি কেউ দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং দেশে ফিরে গেলে তাঁর জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি থাকায় তাঁকে আন্তর্জাতিক সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে স্বীকৃতি থাকে, তাঁকে শরণার্থী বলা যেতে পারে। অথাৎ রাজনৈতিক,সামাজিক, জাতিগত বিভিন্ন নিরাপত্তাগত কারণে নিজ ভূমি ছেড়ে বা আশ্রয়ের সন্ধানে অন্য কোন দেশে অস্থায়ীভাবে অবস্থানকৃত জনসমষ্টিকে শরণার্থী বলে।১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদ অনুযায়ী তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হয়। ওই সনদের মূলনীতি হলো, শরণার্থীদের তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না অথবা সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে বাধ্য করা যাবে না যেখানে তাদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখোমুখি হবে। কেউ শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর তাঁকে সামাজিক আবাসন ও কল্যাণমূলক সুবিধাগুলো দিতে হবে এবং কাজের ব্যবস্থা ও সমাজে মিশে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে।

* আশ্রয় প্রার্থী :

কেউ কোনো দেশে গিয়ে আশ্রয় চাইলে তাঁর দাবি বিবেচনা করার এবং তাঁকে অবিলম্বে নিজ দেশে ফেরত না পাঠানোর জন্য কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শরণার্থী সনদে বলা হয়েছে, কেউ শরণার্থী হলে আশ্রয়ের আবেদন করার জন্য তাঁকে সুযোগ দিতে হবে এবং ওই আবেদন-প্রক্রিয়া চলাকালীন তাঁর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

* প্রবাসী

ভিনদেশে স্থায়ীভাবে যখন কেউ বসবাস করতে আসে তখন তাদের সাধারণত প্রবাসী বলা হয়ে থাকে।এই ধরণের মানুষ সাধারণত নিজের ইচ্ছাতেই নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমান।

কর্মসংস্থান বা উন্নত জীবনের খোঁজের পাশাপাশি পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কারণেও অনেকে স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন।

জোর পূর্বক বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে নয়, স্বেচ্ছায় ও স্বতস্ম্ফূর্তভাবে যারা স্থায়ীভাবে বিদেশে পাড়ি জমান তাদের প্রবাসী বলা হয়ে থাকে।

পরিশেষে বলতে চাই, প্রাচীনকাল থেকেই জীবিকার সন্ধান, আর্থ-সামাজিক, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। তাই মানব সভ্যতার বিকাশে অভিবাসনের গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীকে আরও বৈচিত্র্যময় ও বাসযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রেও অভিবাসী জনগোষ্ঠীর ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ-বিগ্রহ ও ভূ-রাজনৈতিক নানা কারণে অভিবাসন আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অভিবাসীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, কনভেনশন ও সনদসমূহে বর্ণিত বিধানাবলীর যথাযথ প্রতিপালন অত্যন্ত জরুরি। হয়রানি মুক্ত অভিবাসন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার একান্ত প্রয়োজন।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test