E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

“অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র চলছে”

২০২৩ ডিসেম্বর ২৩ ১৬:৫৭:২৯
“অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র চলছে”

শিতাংশু গুহ


কিছুলোক এখনো বিশ্বাস করছেন যে, নির্বাচনটি হচ্ছেনা, কিছু একটা হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারাবে। তাঁদের অন্ধবিশ্বাস, আমেরিকা কিছু একটা করবে? তবে তাঁরা এটিও মনে করছেন যে, বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না। এদের ভাবনার সাথে বাংলাদেশের হিন্দুদের ভাবনার একটি অদ্ভুত মিল আছে! হিন্দুরা সাত দশক ধরে ভাবছে, আওয়ামী লীগ তাঁদের বন্ধু, সহায়তা করবে, ভারত তাঁদের উদ্ধার করবে। তা হয়নি, তা হয়না, হবার কোন কারণ নেই! যাঁরা নির্বাচনটি হবেনা বলে দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তাঁরা ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিন, কারণ নির্বাচনটি হচ্ছে।  

এখন সবকিছু ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব, যা কিছু ঘটে তা হটাৎ-ই ঘটে? ঠান্ডা ঠান্ডা ভাবের মধ্যেই নির্বাচনটি হবে। এদিকে ভোট বর্জনে অসহযোগের ডাক এসেছে। এক বন্ধু ভয় পেয়ে বলেছেন, অসহযোগ যদি আরব বসন্ত স্টাইলে মে-২০১৩’র হেফাজতের ঢাকা অবরোধের মত হয় তাহলে দেশে ‘গৃহযুদ্ধ’ বেঁধে যাবে? এরপর তিনি আরো যা বলেছেন তা লিখলে আমার চাকুরী থাকবে না। তবে দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধুক তা কেউ চায়না। নিউজ দেখলাম, ভারত-রাশিয়া-চীন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে। ভারত বৃহত্তম গণতন্ত্র, পাঠাতেই পারে, কিন্তু চীন-রাশিয়া?

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, দেশে অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, বিএনপি’র অসহযোগকে জনগণ অসহযোগ করছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত হটাৎ করেই দিল্লী গেছেন। তিনি একটু নড়লেই কথা হয়, হয়তো তিনি বড়দিনের বাজার করতে স্বস্ত্রীক দিল্লি গেছেন, কিন্তু এনিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আমাদের ব্যর্থ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বদা একটু এগিয়ে থাকেন, এবং জ্যোতিষীর মত ভবিষ্যৎবাণী দেন্, এবার তিনি বলেছেন, ৭ই জানুয়ারীর নির্বাচনটি আমেরিকা ও পশ্চিমারা ‘মডেল নির্বাচন’ হিসাবে গ্রহণ করবেন।

আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্রের সংজ্ঞামতে শিখেছিলাম যে, ‘ডেমোক্রেসী ইজ এ গভর্নমেন্ট অফ দি পিপল, বাই দি পিপল এন্ড ফর দি পিপল’। বিরোধী এক নেতা আমাদের নুতন করে শেখাচ্ছেন যে, ‘ইলেকশন অফ দি আওয়ামী লীগ, বাই দি আওয়ামী লীগ এন্ড ফর দি আওয়ামী লীগ’। আমাদের মন্ত্রীরাও কম যাননা, মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন ২০ হাজার, সেতুমন্ত্রী কাদের বললেন, ১১ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী জেলে আছেন। কোনটা ঠিক? এ সময়ে দুই মন্ত্রীর কথাবার্তায় ‘কেইস’ হালকা হয়ে গেছে, জনগণ যা বোঝার বুঝে নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ এখন সাধ্যমত চেষ্টা করছে নির্বাচনটি মুখর হোক, জনগণ ভোট দিতে যাক, সামনে আর মাত্র ক’দিন তেমন উৎসাহ দেখা যাচ্ছেনা, কি হবে? নৌকা ভার্সেস আওয়ামী লীগ (স্বতন্ত্রও) তেমন জমছে না। নৌকা বিজয়ীরা অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোরজবরদস্তি করছেন। মুখ্যত: নির্বাচনটি এখনো কিছুটা ঘোলাটে, সবাই ভাবছেন, কি হবে, কি হচ্ছে? আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেয়া ৩২ আসনের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে অসহায়, জিতিয়ে না-আনলে তাঁদের পক্ষে জেতা কঠিন।

যাই হোক, দলছুট বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর-এর কপাল হয়তো পুড়েছে, তিনি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন, তবে জিতবেন এমন গ্যারান্টি নেই, কারণ সেখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতার অবস্থান শক্ত। তিনি বলেছেন, ‘আমুভাই বিএনপি’তে পাঠিয়েছিলেন, তিনিই আওয়ামী লীগে এনেছেন’। শাহজাহান ওমর হয়তো ইতিমধ্যে রাজনৈতিকভাবে এতিম হয়ে গেছেন? নির্বাচনের পর তিনি ‘অপাংক্তেয়’ হয়ে যাবেন? আওয়ামী লীগে তার পরিচয় হবে, ‘বিএনপি’র শাজাহান-ওমর’, অনেকটা ‘ন্যাপের মহিউদ্দীন’র মত?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test