E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১৬:০৮:১৮
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৪ উদযাপন হয়েছে গত শুক্রবার। প্রতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ দিবসটি পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য  স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সমৃদ্ধি চাই, নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে  ২ ফেব্রুয়ারি পালিত জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস। ২০১৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হয় নিরাপদ খাদ্য দিবস। ওই বছর সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতন করে তোলার অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট অনিরাপদ এবং এটি হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ। ট্রান্স ফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। সরকার ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১’ পাস করলেও এখনো তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন শুরু করতে পারেনি। প্রবিধানমালাটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। দেশে উৎপাদন ও প্রস্তুত থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে খাদ্যপণ্য নিরাপদ করতে কাজ করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। খাদ্য নিরাপদ করতে প্রতিষ্ঠানটি জনসচেতনতায় গুরুত্ব দিলেও জরিমানাও করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট ১৬৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এর মধ্যে ১৩৬টি মামলার বিপরীতে ১৩৬ জনকে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৯৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮৫ জনের মোট এক কোটি ৫৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অর্থাৎ দেড় বছরে ২২১ জনকে তিন কোটি ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সরকারি এই প্রতিষ্ঠান শাস্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে। কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা না গেলে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষতিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন রোধ করা কঠিন হবে।

বিএফএসএ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ হাজার ৩৪১টি এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে দুই হাজার ৯৫৮টি খাদ্য উৎপাদন স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে ১৬১৫৫ নম্বরের সহায়তা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সারা দেশে খাদ্য ও সেবার মান বৃদ্ধি এবং জনগণকে সচেতন করতে গ্রেডিং পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। গত অর্থবছরে ঢাকাসহ ১৬৫টি হোটেল-রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান ও বেকারিকে অ+, অ ও ই ক্যাটাগরিতে গ্রেডিং দেওয়া হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে দেওয়া হয়েছে ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানকে।

সর্বশেষ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা ‘হোটেল ও রেস্টুরেন্ট জরিপ ২০২১’ থেকে জানা গেছে, সারা দেশে এখন হোটেল-রেস্টুরেন্টের সংখ্যা চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪। যেখানে কাজ করছেন ২০ লাখ ৭১ হাজার ৭০৭ জন। খাদ্য নিরাপদ করতে মূলত এসব মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে বিএফএসএ। একই সঙ্গে মালিক-কর্মচারীদের সচেতন করতেও কাজ করছে।

বিএফএসএর সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, ‘আমরা সবার আগে গুরুত্ব দিচ্ছি জনসচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রে। এর পরের ধাপে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। দেশে যে খাদ্য প্রতিষ্ঠান, হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে অর্থাৎ যারা খাদ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের মধ্যে আমরা জনসচেতনতা তৈরিতে কাজ করছি।’

ভেজাল খাদ্যে দীর্ঘমেয়াদি রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি বিকল, লিভারে সমস্যা, হৃদরোগ, স্নায়ু অকার্যকর হওয়া ও উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের বিস্তার কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। এসব রোগে যেমন মৃত্যু বাড়ছে, তেমনি চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে বহু পরিবার। দীর্ঘমেয়াদি রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ভেজাল খাদ্য। উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোগ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে খাদ্যে বিষাক্ত ভারী ধাতু যুক্ত হচ্ছে।

তবে দেশে এখনো ভারী ধাতু পরিশোধনের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। খাদ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারি তথ্য মতে, দেশের ৭০ শতাংশ মৃত্যু হয় দীর্ঘমেয়াদি বা অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে ক্যান্সারে প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে দেড় লাখ মানুষ, মারা যাচ্ছে এক লাখ আট হাজার।

পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতিবছর কিডনি বিকল হচ্ছে ৪০ হাজার মানুষের, তাদের ৭৫ শতাংশ মারা যায় ডায়ালিসিস বা কিডনি সংযোজন ছাড়াই। হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির রোগে মৃত্যু হয় দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের।

মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করার পরের ধাপই হলো নিরাপদ খাদ্য। বাংলাদেশের মতো দেশের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ এখানে লোকজন অনেক বেশি।আর খাদ্যে ইনসুলিন তৈরি উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, ভারী ধাতুর কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

চাল সাদা করার জন্য ইউরিয়া দেয়। এই ইউরিয়া গ্যাস্ট্রিক-আলসারের জন্য দায়ী। আমাদের এমন কোনো বাড়ি নেই, যেখানে গ্যাস্ট্রিকের রোগী নেই। কলা বা ফল পাকাতে কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে এতে মানুষের লিভার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করে। টমেটো-আনারসে হরমোন ব্যবহার হয়, পোল্ট্রি ফিডে হাড়ের গুঁড়া দেয়, সেখানে যে ভারী ধাতু ব্যবহার করা হয় এগুলো আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। যে কারণে অসংখ্য মানুষ দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা ব্যাটারিসহ এ ধরনের অন্যান্য ভারী ধাতুসম্পন্ন বর্জ্য যত্রযত্র ফেলা হয়ে থাকে। যা মাটি-পানি কিংবা বাতাসের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে, তেমনি ফল-ফসল, গবাদি পশু ও মাছের শরীরেও সহজেই ঢুকে যায়। আর এসব মাছ-মাংস কিংবা শাক-সবজি, ফল মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার ফলে তা মানুষের দেহে ঢোকে।

বিভিন্ন গবেষণায় যা দেখা গেছে

সর্বশেষ খাদ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল ফ্রন্টিয়াসে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুরগির মাংস ও মাছে মিলেছে সিসা, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়ামের মতো বিষাক্ত ভারী ধাতু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বোতলজাত ৬৬.৭ শতাংশ ও খোলা ২৪.৫ শতাংশ সয়াবিন তেলে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটি এসিড (টিএফএ) রয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলছে, এই মাত্রা ১ শতাংশের বেশি যেন না হয়।

সরকারের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ২০১৭ সালের নভেম্বরে পরিচালিত খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিক দূষণ ও জীবাণু সংক্রমণ বিষয়ক সমীক্ষার দেখা যায়, ঢাকার ৯০ শতাংশ স্ট্রিট ফুডই (রাস্তার খাবার) অনিরাপদ। এতে ই-কোলাই ও সালমোনেলার মতো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর জীবাণু পাওয়া গেছে। ২০২১ সালে ঢাকার পানির মান নিয়ে একই প্রতিষ্ঠানের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, চায়ের দোকানে ব্যবহার করা পানির ৯৪ শতাংশে মলের জীবাণু, ৪৪ শতাংশ পানিতে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া ও ২৯.৪ শতাংশ পানিতে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় ভারী ধাতু মিলেছে। এর আগে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় ৫৫ শতাংশ রাস্তার খাবারে ক্ষতিকর জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল; আর ৮৮ শতাংশ বিক্রেতার হাতে অস্বাস্থ্যকর জীবাণু থাকে।

২০১৩ সালে সরকার নিরাপদ খাদ্য আইন পাস করে। এরপর ২০১৫ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকারের এই সংস্থাটি পুরোদমে কাজ শুরু করতে পেরেছে ২০২০ সাল থেকে।

দেশে যেকোনো খাদ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিভাগের সদস্য আবু নূর মো. শাসুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য রাতারাতি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের দেশে একটা বিশাল অংশ এখনো বাইরের খাবার খায়। বিশেষ করে দুপুরের খাবার, সকালের নাশতা বেশির ভাগ মানুষ বাইরে খায়। রাস্তার খাবার যারা বিক্রি করে তাদের আমরা লাইসেন্সের আওতায় আনতে পারিনি। ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

আবু নূর মো. শাসুজ্জামান বলেন, ‘যেকোনো প্রগ্রাম সফলতার মুখ দেখে সামাজিক আন্দোলনের রূপ নিলে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সেটা সামনে রেখে কাজ করছি। এ জন্য সেমিনার, ওয়ার্কশপ, ট্রেনিং সারা বাংলাদেশে আয়োজন করেছি। স্কুলে প্রগ্রমিং করছি।’

বাংলাদেশ স্ট্যাডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) উপপরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, ‘এ পর্যন্ত ২৭৩টি পণ্য বিএসটিআই থেকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়া বিক্রি করা নিষেধ। এর মধ্যে ১০২টি খাদ্যপণ্য। বিএসটিআই শুধু প্রসেস কোট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মানসম্পন্ন মনে করলে লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। লাইসেন্স নেওয়ার পরে কোনো প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের পণ্য বাজারজাত করছে কি না, তা অথবা লাইসেন্স ছাড়া বাজারজাত করছে কি না, তা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটর করে।

তিনি বলেন, ‘বাজার থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত পণ্য আমরা নিজেরা কিনে বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষা করে থাকি। পরীক্ষায় যদি কোনো পণ্য নিম্নমানের পাই প্রথমে শোকজ করি এবং ব্যাখ্যা শুনি। পরে দ্বিতীয়বার যদি নিম্নমানের পাওয়া যায় তাহলে লাইসেন্স বাতিল করে পত্রিকায় দিয়ে মানুষকে সচেতন করি।’

জনস্বাস্থ্য বিশেজ্ঞরা বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক দিন ধরে খাবারে রাসায়নিক থেকে শুরু করে রং মেশানো হচ্ছিল। এর প্রেক্ষাপটে আমাদের সবার প্রত্যাশা এবং দাবি ছিল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য। সেটি হয়েছে, তার পরও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ৬৭ শতাংশ সয়াবিনে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটি এসিড পাওয়া যাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার নিষেধ করা হয়েছে, অথচ বাংলাদেশে এ কারখানা রয়েছে। খাবারে কৃত্রিম রঙের ব্যবহার এখনো বন্ধ হয়নি। অতিরিক্ত কীটনাশক এবং সার ফসলে-শস্যে দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা রোগমুক্ত সুস্থ জীবনের জন্য যে খাবার খাই, তা রোগ তৈরি করছে।’

পরিশেষে বলতে চাই, দেশে নিরাপদ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য পেতে হলে সরকারের উদ্যোগ ও নিয়মনীতির পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। আর এদেশের সিংহভাগ মানুষের মধ্যে পুষ্টি সম্পর্কে অজ্ঞতা ও কুসংকার রয়েছে। ভোজনরসিক বাঙালিদের খাবার মুখরোচক না হলেই নয়। এছাড়া খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসব অন্তরায় দূরীকরণে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্গানিক কৃষক তৈরি করে এবং তৃণমূল মানুষের মধ্যে পুষ্টিযুক্ত খাবার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জনে সেমিনার ক্যাম্পেইন লিফলেট ও গণমাধ্যমে প্রচারণা বৃদ্ধি করে, মানুষের সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে এ কাজে বেসরকারি সংস্থা ও উদ্যোক্তাগণ এগিয়ে এলে বাংলাদেশ একদিন নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি সক্ষমতা অর্জন করবেই।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test