E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিয়ে পাগলদের গল্প ও আইনী শাস্তি

২০১৬ আগস্ট ১০ ১৯:০০:১৩
বিয়ে পাগলদের গল্প ও আইনী শাস্তি

এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক


মমতাজ বেগম ও আনোয়ার হোসেন একে অপরকে ভালবাসেন। সে সূত্র ধরে দুজন স্বামী-স্ত্রী রুপে ঘর সংসার করতে শুরু করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে বিয়ের কোন কাবিননামা রেজিষ্ট্রি হয়নি। এক পর্যায়ে লোভী আনোয়ার হোসেন মমতাজ বেগমের কাছে যৌতুক দাবি করে নির্যাতন করে এবং যৌতুক না পাওয়ায় মমতাজ বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। মমতাজ বেগম তাঁর ভরণপোষণ এবং দেনমোহর চেয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা টুকে দেন। কিন্তু বিধিবাম! আনোয়ার হোসেন মমতাজ বেগমের সঙ্গে তাঁর বিয়েকে অস্বীকার করে আদালতে জবাব দাখিল করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এদিকে মমতাজ বেগম দাবি করেন, তাঁদের মধ্যে মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা দীর্ঘদিন স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই একত্রে বসবাস করছেন এবং স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন। মামলার সাক্ষী-প্রমাণ শেষে পারিবারিক আদালত আদেশ দেন, তাঁদের মধ্যে বিয়ের অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। পারিবারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ আনোয়ার হোসেন ১৯৯৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন দায়ের করেন। হাইকোর্ট বিভাগের একটি একক বেঞ্চ ১৯৯৯ সালে পারিবারিক আদালতের আদেশটি খারিজ করে দেন। হাইকোর্ট বিভাগ তাঁর রায়ে বলেন, তাঁদের মধ্যে কোনো প্রকার কাবিননামা সম্পন্ন হয়নি যা বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং মমতাজ বেগম তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে মমতাজ বেগম লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) দায়ের করেন এবং আপিল মঞ্জুর হয় তিনটি বিষয়কে বিবেচনা করে:

১. মুসালিম আইন অনুযায়ী বিয়ে রেজিস্ট্রি না হলে এটি কি বাতিল, অবৈধ বা অস্তিত্বহীন কি-না।
২. তিন বছর ধরে তাঁদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করা এবং বসবাসের শর্ত বৈধ বিয়ে হিসেবে গণ্য হবে কি-না।
৩. হাইকোর্ট রিভিশনাল এখতিয়ার প্রয়োগ করে নিম্ন আদালতের আদেশ এবং পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে বৈধ বিয়ের অস্তিত্বের বিষয়ে বিবেচনা করেছেন কি-না।
আপিল বিভাগে মমতাজ বেগমের পক্ষে ২০০৩ সালে আপিলটি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাবেয়া ভুঁইয়া। সিভিল আপিল নম্বর-১৩৯/২০০৩। তিনি আপিলে দাবি করেন, কাবিননামার অনুপস্থিতিতে বিয়ের অস্তিত্ব প্রমাণ করা যাবে না-হাইকোর্ট বিভাগের এ বিবেচনা যুক্তিসংগত নয় এবং তা আইনের সঠিক মর্ম নয়। অবশেষে ৩১ জুলাই ২০১১ ইং তারিখে আপিল বিভাগ মমতাজ বেগমের পক্ষে রায় দেন। মমতাজ বেগম বনাম আনোয়ার হোসেন মামলায় আপিল বিভাগের রায়ে বিচারপতি এস কে সিনহা মন্তব্য করেছেন, মুসলিম নর ও নারী যদি স্বামী ও স্ত্রীর পরিচয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করেন এবং তাঁদের মধ্যে যদি রেজিস্ট্রিকৃত কাবিননামা না-ও হয়ে থাকে, তাহলেও এখানে বৈধ বিয়ের অস্থিত্ব বিদ্যমান থাকতে পারে। তারা উভয়ে স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের মধ্যে মুসলিম আইন অনুযায়ী বৈধ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলেও গণ্য হতে পারে। সুতরাং কাবিননামা ছাড়া স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করলে বৈধ বিয়ের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকতে পারে।

দিনমজুর বুদো মন্ডল, ১০ বছরে পাঁচটি বিয়ে করেন। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপেষণ না দিয়ে আবারও বিয়ের পরিকল্পনা করায় পঞ্চম স্ত্রী তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করেন। স্ত্রীদের অভিযোগ, বিয়ের পর এক-দেড় বছর সংসার করার পর স্ত্রীদের অনুমতি না নিয়েই বিয়ে করেন বুদো মন্ডল। আবার যখন-তখন তালাকও দেন।

সীমা (ছদ্মনাম)। কুষ্টিয়া আদালতে বিচার চেয়ে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেছেন। আরজির বিষয়বস্তু থেকে জানা যায়, মামলার বাদিনীর পিতা-মাতা অতিশয় দরিদ্র মানুষ এবং বাদিনী স্বল্প শিক্ষিতা নারী হওয়ায় জীবিকার তাগিদে ছোট খাটো চাকুরী খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এ সুযোগে আসামী বাদিনীকে ঢাকায় নিয়ে গার্মেন্টসে চাকুরী দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখায়। বাদিনী সরল বিশ্বাসে আসামীকে তার পিতা-মাতার নিকট যেতে বলায় আসামী সুযোগমত বাদিনীর পিত্রালয়ে গিয়ে বাদিনীর পিতা-মাতাসহ সাক্ষীগণের সন্মুখে প্রকাশ করে যে, ঢাকাতে তার উচ্চ পর্যায়ের লোক আছে। তার পক্ষে বাদিনীর গার্মেন্টেসে চাকুরী পাইয়ে দেওয়া সহজ কাজ। আসামী বাদিনী ও তার পিতা-মাতাকে এবং সাক্ষীগণকে বিভিন্ন স্তব বাক্য শুনিয়ে মিথ্যা চাকুরীর আশ্বাস দিয়া বাদিনীকে তার পিতার বাড়ি থেকে গত ইং ২৫/০৭/২০১১ ইং তারিখে ঢাকাতে নিয়ে আসামীর এক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে তোলে। তৎপর বাদিনীকে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ভূয়া চাকুরীর কথা বলে ঘুরে বেড়ান এবং বলে যে, চাকুরী পেতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যাবে।

এভাবে কয়েক দিন কাটানোর পর আসামী বাদিনীকে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠে এবং বলে যে, বাসায় থেকে চাকুরী খোঁজা সম্ভব নয়। গত ইং ৩০/০৭/২০১১ তারিখে রাতে হোটেলে এসে আসামী সাগর আলী বাদিনীর সাথে অবৈধভাবে সহবাস ও যৌন সঙ্গম করতে গেলে বাদিনী বাঁধা দেওয়ায় আসামী বাদিনীর সাথে অবৈধভাবে যৌন সঙ্গম করতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা প্রলোভন ও অপকৌশল অবলম্বন করে বাদিনীর সাথে যৌন সঙ্গম করার চেষ্টা করতে থাকে।

আসামী সাগর আলী গত ৩১/০৭/২০১১ তারিখে তার পরিচিত একজন লোককে প্রতারণামূলকভাবে ভূয়া কাজী সাজিয়ে নিয়ে উক্ত হোটেলে এসে বিবাহের কথা বলে বাদিনীর নিকট থেকে একটি সবুজ কাগজে সই করে নিয়ে বলে আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। আজ থেকে আমরা স্বামী-স্ত্রী। আমাদের আজ থেকে যৌন সঙ্গমসহ একত্রে সহবাস করার আর কোন বাঁধা রইল না। বাদিনীর সাথে আসামীর বৈধ ও প্রকৃত বিবাহ সম্পন্ন না হওয়া সত্ত্বেও আসামী মিথ্যাভাবে ও প্রতারণামূলকভাবে ভূয়া কাজী সাজিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কাহিনী সৃষ্টি করে। তারপর ওই দিনই অর্থাৎ ৩১/০৭/২০১১ তারিখ রাত ১০.০০ টার সময় আসামী সাগর আলী উক্ত রূপ ভূয়া কাজী সাজিয়ে প্রতারণামূলে সৃজিত বিবাহ বৈধ নহে এবং উক্ত বিবাহ তাদের উপর বাধ্যকর নহে জেনেও আসামী বাদিনীর সাথে প্রতারণামূলক ও প্রবঞ্চনামূলকভাবে উক্ত বিবাহ বৈধ ও বাধ্যকর মর্মে বাদিনীকে বিশ্বাস করিয়ে বাদিনীর সঙ্গে একত্রে সহবাসসহ যৌন সঙ্গম করে।

স্বামীর পরকীয়ার কারণে ক্ষুব্ধ স্ত্রী তার বিশেষ অঙ্গ কেটে নিয়েছেন। আবার দ্বিতীয় স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়েছেন কিংবা স্বামী স্ত্রীকে পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য করেছেন। এ ধরনের হাজারো ঘটনা আমরা প্রায়ই পত্রিকার পাতায় দেখতে পাই। উল্লেখিত ঘটনাগুলে বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের অন্তর্ভূক্ত। বাংলাদেশে এ রকম অপরাধের জন্য আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণ এ সম্পর্কে সচেতন নয়।

বিয়ে মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুখকর অনুভূতি ও প্রজন্ম বিস্তারের একমাত্র উপায় হলেও কখনও কখনও তা অভিশাপ রূপে দেখা দেয়। বিয়েকে কেন্দ্র করে অপহরণ, ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। বিয়ের পর মেয়েরা স্বামীর ঘর করবে। সংসারের খুঁটিনাটি দেখবে। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, ছেলেমেয়ে নিয়ে হাসিখুশিতে দিন কাটাবে এটাই বাঙালি বধূর বৈশিষ্ট্য। একজন স্বামীও তাঁর স্ত্রীকে ভালোবাসবে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখে বসবাস করবে এই আশা সবার। কিন্তু এমনটি এখন আর দেখা যায় না। পারিবারিক অশান্তি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি এখন যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আর এগুলো ঘটছে বিয়ে-পরবর্তী পরকীয়া, প্রেম, বিয়েকেন্দ্রিক বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কারণে। এ রকম চিত্র এখন পত্রপত্রিকা খুললেই চোখে পড়ে।

বিয়ে সম্পর্কিত অপরাধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনে শাস্তি :
দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারা থেকে ৪৯৮ ধারা পর্যন্ত বিয়ে-সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান প্রণীত হয়েছে, যার অধিকাংশই জামিন-অযোগ্য অপরাধ।

বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৩ ধারায় বলা অছে, যে স্ত্রীলোক যে পুরুষের সাথে আইনতঃ বিবাহিত নয়, সেই পুরুষ কর্তৃক সেই স্ত্রীলোকের মনে প্রতারণা পূর্বক বিশ্বাস জন্মানো যে সে তার সাথে বিবাহিত এবং এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে তার সাথে যৌনসংগম করা। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীকে প্রতারণামূলকভাবে আইন সম্মত বিবাহিত বলে বিশ্বাস সৃষ্টি করান, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে যদি আইনসম্মতভাবে না হয়ে থাকে এবং ওই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে। জামিন অযোগ্য ধারার অপরাধ।

বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৪ ধারায় বলা অছে, স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পূনরায় বিবাহ করা। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পুনরায় বিয়ে করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে যে প্রাক্তন স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, বিয়ের সময় পর্যন্ত সে স্বামী বা স্ত্রী যদি সাত বছর পর্যন্ত নিখোঁজ থাকেন এবং সেই ব্যক্তি বেঁচে আছেন বলে কোনো সংবাদ না পান, তাহলে এ ধারার আওতায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধী বলে গণ্য হবেন না। জামিন যোগ্য ধারার অপরাধ।

বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৫ ধারায় বলা অছে, যে ব্যক্তির সাথে পরবর্তী বিবাহ হচ্ছে, তার নিকট পূর্ববর্তী বিবাহ গোপন করে তাকে বিবাহ করা। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন রাখেন, তা যদি দ্বিতীয় বিবাহিত ব্যক্তি জানতে পারেন, তাহলে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড দন্ডিত হবেন এবং অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। তবে জামিন যোগ্য ধারার অপরাধ।

বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৬ ধারায় বলা অছে, আইনতঃ বিবাহ নয় জেনেও প্রতারণার উদ্দেশ্যে বিবাহের অনুষ্ঠান উদযাপন করা। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলকভবে বিয়ে সম্পন্ন করেন, তাহলে অপরাধী সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে জামিন যোগ্য ধারার অপরাধ।

৪৯৭ ধারায় ব্যভিচারের শাস্তির উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো নারীর সঙ্গে স্বামীর সম্মতি ব্যতীত যৌন করেন এবং অনুরূপ যৌনসঙ্গম যদি র্ধষণের অপরাধ না হয়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবেন, যার শাস্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতাকে অন্য লোকের স্ত্রী হতে হবে। তবে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকের কোনো শাস্তির বিধান আইনে নেই। তবে জামিন যোগ্য ধারার অপরাধ।

বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৮ ধারায় বলা অছে, অপরাধজনক উদ্দেশ্যে বিবাহিত নারীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া বা আটক রাখা। অর্থাৎ কোনো বিবাহিতা নারীকে ফুসলিয়ে বা প্ররোচণার মাধ্যমে কোথাও নিয়ে যাওয়া এবং তাকে অপরাধজনক উদ্দেশ্যে আটক রাখা দণ্ডবিধির ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী অপরাধ। এ ধারা অনুযায়ী, অপরাধী ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদ-সহ উভয় ধরণের শাস্তি পাবেন। তবে জামিন যোগ্য ধারার অপরাধ।

দণ্ডবিধিতে বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তির বিধান থাকলেও পারিবারিক মানহানির ভয়ে স্বামী বা স্ত্রীর বিরুদ্ধে কেউ আইনের আশ্রয় নেয় না। কিন্তু আগে থেকে সচেতন থাকলে ও এসব অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এসব অপরাধের রেশ ধরে খুন, অপহরণ ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটত না।

যদি কোন খ্রীষ্টান ব্যক্তি নিজেকে হিন্দু হিসাবে পরিচয় দিয়ে হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে হিন্দু গোত্রের কোন মেয়েকে বিবাহ করে, পরে প্রকাশ পায় যে, সে হিন্দু নয়। এইসব ক্ষেত্রে উক্ত ধারায় অপরাধ সংঘটিত হবে।


লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, আইন গ্রন্থ প্রণেতা ও সম্পাদক দৈনিক ‘সময়ের দিগন্ত’।


পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test