E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দু:সময়ে দেশ-দল অামাদের!

২০১৭ মার্চ ৩০ ১৬:১১:৪১
দু:সময়ে দেশ-দল অামাদের!

ম. কফিল উদ্দিন বাহাদুর


দেশের ক্রান্তিলগ্ন! সাঈদীর রায় পরবর্তী দেশে ক্রান্তিলগ্ন যাচ্ছিল চরমভাবে। বোমা, চাপাতি, গুলি, খুন, রক্ত...। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভয়ে অাজকের অধিকাংশ সাহসী পুরুষ চুড়ি পরে ঘরে রান্না বান্নার কাজ করেছিল! এতগুলো নেতাও ছিল না। সেলফি-টেলফি তুলত না। তোলার জোও ছিল না! কারণ কোন দল সরকার গঠন করছে সেটা নিয়ে তো একটা সংশয় ছিলই। তাই এত মিছিল, এত ব্যানার, এত অস্ত্রবাজ নেতা, এত হুমকিবাজ নেতা... সবাই তখন নাক ডেকে ঘুমুচ্ছিল।

সারাদেশের চেয়ে অামার পেকুয়ায় অবস্থা ছিল অারো ভয়াবহ। এই এলাকায় অাছে একজন কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাসহ কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের অনেক নেতা। জামায়াত-বিএনপির বুকে সাহস ছিল। কারণ শেল্টার দাতার অভাব ছিল না। যা হোক পেকুয়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। রাস্তা-ঘাটে গাছ অার গাছ। ভয়ে লোম খাঁড়া হয়ে যাওয়ার মতন অবস্থা! ঠিক তখনি অামি অার উদীয়মান সংবাদকর্মী হানিফ, সুজনরা মাঠে ছিলাম। তখনকার ওসি অানোয়ার ভাইকে সহযোগিতা করতাম বিভিন্ন কৌশলে। যখন পেকুয়ায় রক্তের বন্যা শুরু হয় তখনো অামরা জনবল সৃষ্টির পাশাপাশি প্রশাসনকে সহযোগিতা করে রাত ১টা, ২টায় বাড়িতে ফিরতাম। অনেক সময় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে বাড়িতে অাসতাম মা-বাবার অগোচরে।

শত শত কংকর বর্ষণের মাঝে, গুলি বর্ষণের ভেতরে তখনকার ডিএসবি শাহীনকে শিবির ক্যাডাররা পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার সময় অামরাই দৌড়ে এসেছিলাম। তখন অাজকের অনেক বড় বড় নেতা এলাকায় ছিল না। কিন্তু এখন মাঠ তাদের দখলে। খবরদারি তারা করে এখন। সুবিধা তো ভাল পাচ্ছেই!

ওই সময়ে জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারীকে ধরে, উপজেলা শিবিরের সেক্রেটারীকে ধরে, বিভিন্ন ক্যাডারদের ধরে পুলিশে দিয়ে নিজের জীবনকে গড়ে তুলেছি ঝুঁকিপূর্ণ। কক্সবাজার কলেজের শিবিরের হোষ্টেল বন্ধ করার সময় অন্যান্য নেতা-কর্মীদের সাথে একসাথে কাজ করে জীবনকে করে তুলেছি বিষাদময়। কারণ সেসব শিবিররা তো ছাড়বেনা। সময়ে অাল্লাহু অাকবর বলে শেষ করে দিবে। অাজকে কক্সবাজার কলেজে শিবিরের উৎপাত কমানোতে অামি বা অামাদের অবদান কম ছিল না। এসবের পরেও কোন নেতা সাহস বা বাহবা দেয়না! (দরকারও নাই। তবে এসব বলার কারণ গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হল) ।

যখন গ্রাম, সমাজ,দেশ,দলের জন্য এসব করি তখন কোন নেতা বলেনা, তুমি ভাল কিছু করছ দেশ বা দলের জন্য। যখন দলীয় কিছু ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, কলম দিয়ে অান্দোলন করি অনেক সিনিয়ররা একটি উপাধি দেয় 'বেয়াদব'! তবু শ্রদ্ধা রইল উনাদের প্রতি।

সমাজটাকে অাসলেই ঘুণে খেয়ে ফেলছে। কারণ মানুষের বিবেক চরমভাবে লোপ পেয়েছে। বিবেকের যখন এমন অবস্থা হয় সে সমাজটা এমনিতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁঁছে যায়। অাজকালের প্রজন্মের হালচিত্র দেখলে বড় ব্যাথা লাগে। সম্মান, ব্যক্তিত্ব অাজ সব হরণ করে ফেলছে ঘুণে ধরা গুটিকয়েক নেতৃত্বের কারণে।

সারাদেশে কিছু নেতৃত্বের কারণে শিবির,ছাত্রদল ক্যাডার/সমর্থক বড় টাইপের নেতা বনে গেছে রাতারাতি। তাদের হাত ধরে অাবার পরগাছাদের পয়দা হচ্ছে। অাস্তে অাস্তে গ্রাস করে ফেলছে পরগাছারা; ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন, ইউনিয়ন থেকে উপজেলা, উপজেলা থেকে জেলা।

প্রতিদিন সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে নিজের বা বাবার টাকা দিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করে জাতীয়,অাঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে অান্দোলনে পাশে থাকি। সফলও হই সবার মতন। অামি তাও জানি অাজকের লেখা সময়ে স্ক্রিন শট হয় কাল সাপ হয়ে দাঁড়াবে। তবু থামিনি। দূর্বার গতি ঠিক রেখে প্রাণের নেত্রীকে একটুখানি হলেও সহযোগিতা করে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলি।

ঠিক সে সময় কেউ বলেনা কফিল ভাল একটা কিছু করল বা করছে! অামার ফসলী জমি সবাই ভোগ করবে স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু স্বীকার করার মত বিবেক সমাজে জন্মায়নি! এদিকে যখনি দলীয় সন্ত্রাস, দল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেই তখন হৈ হুল্লোড় অবস্থা! কফিল্লা অমুক লিখেছে, সমুক লিখছে! ছেলেটা ভাল মনে করতাম! দেখি অাচরণ খুব খারাপ!

সব শেষে বলব, এক কফিল থেমে গেলে হাজারো কফিলের জন্ম হবে। অামার দরকার পড়বেনা জানি। কারণ যুগে যুগে তা প্রমাণিত। কিন্তু সময়ে প্রত্যেক পৃষ্ঠা সাক্ষ্য দিবে অামি কি করেছিলাম, কেন করেছিলাম।

যদি জামায়াত-বিএনপির অামল বা দু:সময়ে কারো গুলিতে মরব, তখন বেওয়ারিশ লাশ হয়ে যাব! বা কালো ব্যাচে সীমাবদ্ধ থেকে দায় এড়াবে নষ্ট নেতৃত্বরা। রাজনীতির প্রতিটি পরতে পরতে তাই সাক্ষ্য দেয়।

সময়টা খুব কাছে! প্রতিটি মানুষ ভাল থাকুক! প্রতিটি তরুণ নেতৃত্ব ভাল থাকুক! প্রতিটি সুবিধাভোগী,সমালোচকরা ভাল থাকুক! নেত্রী যতদিন বেঁচে অাছেন ততদিন দেশটা তাদের! দল যতদিন ক্ষমতায় ততদিন দলটা তাদের! কিন্তু দু:সময়ে দেশ-দল অামাদের, অবশ্যই আমাদের!

লেখক : হাতেগোনা কয়েকজন বঙ্গবন্ধু অন্তপ্রাণ আদর্শিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের একজন।

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test