E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেনের রহস্যজনক মৃত্যু

২০১৮ ডিসেম্বর ০১ ১৫:২৩:৪৬
‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেনের রহস্যজনক মৃত্যু

বিনোদন ডেস্ক : জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চিত্রগ্রাহক।

তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজের সবখানে। শোক প্রকাশ করছেন পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও নানা অঙ্গনের তারকারা।

এদিকে তার মৃত্যু নিয়ে রহস্যও ছড়িয়েছে। আজ শনিবার সকালে পান্থপথের হোটেল ওলিও ড্রিম হেভেনের একটি রুমের দরজা ভেঙে আনোয়ার হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার।

তার জীবনী ঘেঁটে জানা যায়, ১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার আগানবাব দেউড়িতে আনোয়ার হোসেনের জন্ম। বর্তমানে যেখানে তাজমহল সিনেমা হল, ঠিক তার পেছনে। বেড়ার সব ঘর, তার মধ্য দিয়ে চলে গেছে সরু গলি। এতটাই সরু যে, দুজন লোক একসঙ্গে সাইকেলে যেতে পারে না। এখানেই কেটেছে আনোয়ার হোসেনের শৈশব।

তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও পড়ালেখার প্রতি আনোয়ার হোসেনের এতটাই টান ছিল যে, প্রতিদিন ভোর চারটায় পড়তে বসতেন।

সকাল হয়ে এলে পাড়ার ছেলেরা হাজির হতো। তাদের সাথে হাফ প্যান্ট পরে উদোম গায়ে খালি পায়ে হাটে যেতেন বস্তা নিয়ে। সেখানে গাছ চেরার পর কাঠের ছোট টুকরো সংগ্রহ করতেন তিনি। সেগুলো বস্তা প্রতি আট-নয় আনায় বিক্রি হতো। সেখান থেকে ফিরে বাজার করতেন, তারপর যেতেন স্কুলে।

স্কুলে বরাবর প্রথম হলেও খাতায় তার নাম থাকতো না; যদিও বিভিন্ন বৃত্তি থেকে টাকা পেতেন তিনি। কিন্তু তা সংসারের প্রয়োজনেই ব্যয় হয়ে যেতো।

স্কুলে একবার বিশেষ পোশাক সাদা শার্ট পরে যেতে বলা হলে বিব্রত হলেন। পরে প্রধান শিক্ষককে তার বাবা বলে কয়ে তা থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির টুকটাক কাজ করতেন। সন্ধ্যা হলে পাড়ার বন্ধু সেলিম, দ্বীন ইসলাম, পাশা সবাই মিলে উঠোনে চৌকিতে গোল হয়ে বসতেন, এতে এক হারিকেনেই চলতো তাদের। এভাবেই কঠিন দারিদ্র্যের মাঝে শৈশব কাটিয়ে উঠেছিলেন এই আলোকচিত্রী।

১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে মাত্র দুই ডলার (সমমান ৩০ টাকা) দিয়ে কেনা প্রথম ক্যামেরা দিয়ে আলোকচিত্রী জীবন শুরু করেন। প্রথম সাত বছর ধার করা ক্যামেরা আর চলচ্চিত্রের ধার করা ফিল্ম দিয়ে তিনি কাজ চালান। ওই চলচ্চিত্রগুলো ছিলো সাদাকালো।

তিনি ৩৬ টাকা ব্যয়ে রঙিন ছবি তোলা শুরু করেন ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তী ২০ বছর আলোকচিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন।

১৯৭৯ সালে‌ ‌‘সূর্যদীঘল বাড়ী’, ১৯৮০ সালে ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’, ১৯৮৩ সালে ‘পুরস্কার’, ১৯৯৫ সালে ‘অন্য জীবন’, ও ২০০১ সালে ‘লালসালু’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test