E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিলার নির্দেশেই এসিড নিক্ষেপ : রিমান্ডে কিম

২০১৯ জুলাই ০৮ ১৭:৫৭:৪০
মিলার নির্দেশেই এসিড নিক্ষেপ : রিমান্ডে কিম

স্টাফ রিপোর্টার : ‘সাবেক স্বামী পারভেজ সানজারিকে এসিড নিক্ষেপ করতে সহকারী কিমকে নির্দেশ দিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মিলা নিজেই’ -পুলিশের রিমান্ডে এমন তথ্য জানিয়েছেন মিলার সহকারী ও ব্যক্তিগত দেহরক্ষী কিম জন পিটার হালদার। মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনদিনের রিমান্ড শেষে সোমবার (৮ জুলাই) কিম জন পিটার হালদারকে নিম্ন আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে। তদন্তের তদারকি কর্মকর্তা বলেন, ‘কিম আমাদের কাছে বলেছে, সে সানজারির ওপর এসিড ছুড়েছে। সে মিলার নির্দেশেই এসিড ছুড়েছে বলে ডিবির কাছে জবানবন্দি ও দিয়েছে। তাকে আমরা আদালতে পাঠিয়েছি। তবে এখনো সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি।’

জানা গেছে, তিনদিনের রিমান্ডে কিম ডিবিকে জানিয়েছে, ‘গত ২৫ মে বিকেলে মিলা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন সানজারি আমার জীবনটা নষ্ট করেছে। সানজারিকে তুই (কিম জন পিটার হালদার) তো কিছু করতে পারবি না, যা করার আমি নিজেই করব। তখন আমি মিলা আপুকে বলি যে, আমি কিছু একটা করবই। এ সময় মিলা আপুর সঙ্গে পরামর্শ করি সানজারির গোপনাঙ্গে এসিড দেব।’

তিনি বলেন, ‘তখন আপু বলেন, পারলে কিছু করে দেখা, তারপর আসিস। তখন আমি চিন্তা করি, সানজারি মিলা আপুর জীবন নষ্ট করেছে, তার জীবনও নষ্ট করব। ওই দিনই (২৫ মে) সন্ধ্যায় এসিড কিনি। ২৬ ও ২৭ মে উত্তরায় সানজারির বাড়ির সামনে ইফতারের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবস্থান করি। কিন্তু তাকে দেখিনি। ২ জুন বিকেলে আবার যাই। তখন তাকে এসিড মেরে দৌড়ে পালিয়ে যাই।’

রিমান্ডে কিম আরও বলেন, ‘মিলা ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর এক বন্ধুর বাসায় তাকে লুকিয়ে রেখেছিল।’

এদিকে মামলার তদন্তের বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) বদরুজ্জামান জিল্লু বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’

এসিড নিক্ষেপের মামলায় গত ১ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন গায়িকা মিলা। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জামিন আবেদনের শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন। সেই সঙ্গে আট সপ্তাহ পর তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে এডিসি বদরুজ্জামান জিল্লু বলেন, ‘তদন্তের প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে মিলার জামিন বাতিলের আবেদন করব। জামিন বাতিল হলে তাকে কাস্টডিতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

স্বামীকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলা ইসলাম বলেন, ‘যেভাবে তাকে (কিম জন পিটার হালদার) রিমান্ডে মারধর করা হয়েছে আর কী বলবো? মারধর করে আমার নাম বলাতে পারে। কিন্তু আমি এ ধরনের কোনো তথ্য জানি না। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক কোনো জবানবন্দি ও দেয়নি।’

মিলা আরও বলেন, ‘তাকে (সানজারি) কোনো এসিড মারা হয়নি। যদি এমন কাজ করাতে হয় আমি আমার সহকারীকে দিয়েই কেন করাবো? কিম গরিব ছেলে, তাকে মারধর করে বায়াস করিয়ে এসব বলাতেই পারে। আমি মনে করি, ঘটনা ঘটিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে, যাতে আমার ওপর আমার স্বামীর নির্যাতনের মামলাটি ধামাচাপা দেওয়া যায়।’

এ বিষয়ে মামলার বাদী পারভেজ সানজারি বলেন, ‘আমি আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলাম মিলার নির্দেশেই আমাকে এসিড মারা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা তার জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করতে পারে, তা না হলে বাদী হিসেবে আমিও আমার উকিলদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছি।’

এর আগে ২ জুন উত্তরায় সানজারিকে এসিড ছোড়েন কিম। এসিডে সানজারির পা, কাঁধ ও হাতের বেশকিছু জায়গা ঝলসে যায়। এ ঘটনায় ৪ জুন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় কিম ও মিলার বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test