E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এফডিসিতে বাড়ছে করোনার ঝুঁকি

২০২০ জুলাই ২৯ ১৫:৪৮:০০
এফডিসিতে বাড়ছে করোনার ঝুঁকি

বিনোদন ডেস্ক : শিল্পী ও কলাকুশলীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এফডিসির প্রবেশমুখে এবং শিল্পী সমিতির প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়েছিলো মে মাসের ১৮ তারিখে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে জীবাণুনাশক এ টানেলটি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন বিএফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরসহ আরো অনেকে।

এই টানেল স্থাপনের উদ্যোগটি খুবই খুবই প্রশংসিত হয়েছিলো। করোনাভাইরাস যখন ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছিলো তখন এফডিসিমুখী মানুষেরা এ দুটি টানেল পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলেছিলেন।

কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিদিন থাকেনি। প্রায় একমাস ধরেই অচল হয়ে পড়ে আছে দুটি টানেল। সেগুলো কোনো কাজে লাগছে না। দীর্ঘ সময় ধরে নষ্ট থাকলেও সেগুলো সারানোর কোনো উদ্যোগও চোখে পড়ছে না। ঈদের আগে সারবে কি না এমন কোনো তথ্যও দিতে পারেননি এফডিসির গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীরা।

শুধু তাই নয়, টানেল দুটি বন্ধের পাশাপাশি এফডিসিতে ঘুরে দেখা গেল করোনা মোকাবিলায় অবহেলা এবং উদাসীনতা। এফডিসিতে প্রবেশ করার সময় কোনোরকম চেকিং ব্যবস্থা নেই, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও রাখা নেই কোথাও। যে যার মতো করে ঢুকছেন। কেউ একা কেউ বা দলবেঁধে।

প্রবেশমুখেই চেয়ারের সঙ্গে চেয়ার ঘেঁষে বসে থাকছেন নিরাপত্তারক্ষীরা কোনো রকম সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ছাড়াই। তাদের হাতে নেই কোনো হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

করোনার কারণে এফডিসির প্রায় সব কার্যক্রমই বন্ধ। নেই শুটিং। জুন মাস পর্যন্ত চলচ্চিত্রের মানুষদের আনোগোনা প্রায় ছিলোই না বলা যায়। সেসময় করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা দেখা গেছে, সুরক্ষা টানেল বসানো হয়েছে। কিন্তু জুলাই থেকেই যখন মানুষের আসা যাওয়া বাড়লো তখন দেখা গেল বিপরীত চিত্র।

সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে সরগরম এফডিসি। কয়েক দফা আলোচনা ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। পাশাপাশি আসন্ন কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে নানা সংগঠন থেকেই সাধারণ সদস্যদের মধ্যে ঈদ উপহার ও অর্থ সাহায্য দেয়া হচ্ছে।

যার ফলে এফডিসিতে প্রায় প্রতিদিন শত শত মানুষের সমাগম ঘটছে। কিন্তু বেশিরভাগকেই দেখা গেল মাস্ক ব্যবহার করছেন না। কেউ কেউ আবার মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন, কেউ বা হাতে নিয়ে ঘুরছেন।

নিরাপত্তারক্ষীদের বরাতে জানা গেল, এফডিসিতে একটু যা কিছু সচেতনতা তা আছে কেবল প্রশাসনিক ভবনে। সেখানে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসেনও স্বাস্থ্যবিধি মেনে। প্রশাসনিক ভবনের নিচে প্রবেশের মুখে হাত ধোয়ার চমৎকার ব্যবস্থাও রয়েছে।

কিন্তু করোনা নিয়ে উদাসীনতা দেখা গেছে চলচ্চিত্রকর্মীদের মধ্যে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের অফিসগুলোতে প্রবেশের আগে হাত ধোয়া বা নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রযোজক সমিতিতে প্রবেশের পর রিসিপশনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেখে কিছুটা স্বস্তি এলেও সেটি ব্যবহারে সবার অনাগ্রহ নিমিষেই আবার মন খারাপ করিয়ে দেয়।

এফডিসির ক্যান্টিনে উপস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা কম। তবে সেখানেও রয়েছে চরম উদাসীনতা। ক্রেতারা কোনোরকম সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই খাবার কিনছেন বাইরের ছোট দোকান থেকে। আর মূল ক্যান্টিনে ভারী খাবার বন্ধ থাকলেও অনেকে চা নিয়ে গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। এফডিসির বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেককেই দেখা যায় আড্ডা দিতে।

তাই যে কোনো সময় এফডিসিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার জোর আশংকা দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা। সেই ঝুঁকি এড়াতে এফডিসির প্রবেশ পথ, সকল সংগঠনের অফিসের প্রবেশ পথে জরুরি ভিত্তিতে সুরক্ষা টানেল, তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা উচিত। সেইসঙ্গে সবাই যেন যথাযথভাবে মাস্ক পড়া এবং হাত ধোয়ায় মনযোগ দেন সেটাও নিশ্চিত করা জরুরি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test