E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শুভ জন্মদিন সুবর্ণা মুস্তাফা

২০২০ ডিসেম্বর ০২ ১৬:১৩:১৪
শুভ জন্মদিন সুবর্ণা মুস্তাফা

বিনোদন ডেস্ক : তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ের আঙিনায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন একুশে পদকজয়ী অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। বাংলাদেশের নাট্যজগতে বিশেষ মর্যাদার স্থান অধিকার করে আছেন তিনি। আশির দশকে ছিলেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী।

বিশেষ করে আফজাল হোসেন, হুমায়ুন ফরীদি ও আসাদুজ্জামান নূরের সাথে তার জুটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিলো আশি-নব্বই দশকে। সেইসাথে হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রে দারুণ সব চরিত্রে কাজ করে সুবর্ণা পৌঁছে গিয়েছিলেন সব শ্রেণির মানুষের কাছে।

আজ ২ ডিসেম্বর এই গুণী অভিনেত্রীর ৬১তম শুভ জন্মদিন। এবারে তিনি ৬২ বছরে পা রাখলেন।

বিশেষ এই দিনটিতে প্রিয় অভিনেত্রীকে নানাভাবে নানা মাধ্যমে শুভেচ্ছায় সিক্ত করছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা। পাশাপাশি তার সহকর্মীরাও তাকে অভিনন্দিত করছেন। জানা গেছে, ঘরোয়া আয়োজনেই নিজের জন্মদিন পালন করবেন সুবর্ণা মুস্তাফা।

প্রখ্যাত অভিনেতা গোলাম মুস্তাফার মেয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা ১৯৫৯ সালের ২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন।

শৈশব থেকেই বাবার অনুপ্রেরণাতেই সংস্কৃতির প্রতি ঝোঁক তৈরি হয়। নিজেকে জড়িয়ে নেন মডেলিং আর অভিনয়ের সাথে। সম্মোহনের চাহনি আর অসাধারণ বাচনভঙিতে সুবর্ণা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন চমৎকার ব্যক্তিত্বের এক অভিনেত্রী হিসেবে।

প্রথমে মঞ্চে কাজ করলেও আশির দশকে টিভিতে অভিষেক ঘটে তার। মঞ্চ ও টিভি- দুই মাধ্যমেই জনপ্রিয়তা পান সুবর্ণা। সেসময় তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবেও কাজ করেন। তবে সুবর্ণা আলোচনায় আসেন ১৯৯০ সালে বিটিভিতে প্রচার হওয়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে বরকত উল্লাহর পরিচালনায় ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের।

সে নাটকে আসাদুজ্জামান নূরের করা কালজয়ী চরিত্র বাকের ভাইয়ের নায়িকা মুনা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুবর্ণা। সেই চরিত্র দিয়ে তিনি বাজিমাত করে দিয়েছিলেন।

তারপর নিয়মিতভাবেই তাকে হুমায়ূনের নাটকে কাজ করতে দেখা যায়। তারমধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা পায় ‘আজ রবিবার’ নাটকটিও।

আর ১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত মুস্তাফিজুর রহমানের ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ছবি দিয়েও দর্শকদের মনে দোলা দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে আসাদুজ্জামান নূর ও ডলি জহুরের ছোট বোনের চরিত্রে অভিনয় করেন সুবর্ণা।

তবে চলচ্চিত্রে সুবর্ণার অভিষেক ঘটে ১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ‘ঘুড্ডি’র মাধ্যমে। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে সাফল্য পেলেও তিনি নিয়মিত গড়পড়তা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। কিছু জীবন ঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্রে তার উপস্থিতি দেখা গেছে। তিনি অভিনয় করেছেন। তবে মূলধারার কিছু সিনেমাতেও তার উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।

‘নয়নের আলো’ সিনেমাতে তার অভিনয় সব শ্রেণির দর্শককে নাড়া দিয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ‘নতুন বউ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান।

সুবর্ণা মুস্তাফা ব্যক্তিজীবনে ভালোবেসে দাম্পত্য গড়েছিলেন প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদির সাথে। সেই সংসার ২০০৮ সালে ভেঙে গেলে তিনি পুনরায় বিয়ে করেন নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার বদরুল আলম সৌদকে। সুখেই কাটছে সেই সংসার।

মাঝেমাঝেই দারুণ সব চরিত্র নিয়ে অভিনয়ে দেখা যায় সুবর্ণা মুস্তাফাকে। কাজ করে যাচ্ছেন নিভৃতচারীর মতোই। সর্বশেষ তিনি দর্শক মাতিয়েছেন ‘গণ্ডি’ সিনেমা দিয়ে। এ সিনেমায় তাকে দেখা গেছে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ‘ফেলুদা’খ্যাত সব্যসাচী চক্রবর্তীর বিপরীতে।

২০১৯ সালটি এই অভিনেত্রীর জন্য দারুণ একটি বছর। এ বছরে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। সে সূত্রে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test