E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ধরে রাখতে চলচ্চিত্র

২০১৫ মার্চ ২৬ ০৮:২০:০২
মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ধরে রাখতে চলচ্চিত্র

বিনোদন ডেস্ক : স্বাধীনতার ৪৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও নতুন প্রজন্মের বড় একটি অংশ ১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ এবং হানাদার বাহিনীর বর্বরতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নয়। কারণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত নাটক চলচ্চিত্রের প্রতি তাদের খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় না। ইন্টারনেটের যুগে বিশ্ব এখন নতুন প্রজন্মের হাতের মুঠোয়।

পড়াশোনার পরে অবসর সময়টুকু তাদের কাটে ইন্টারনেট নিয়ে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের পেছনের ইতিহাস, আত্মত্যাগ এবং বীরত্বের চিত্রগুলো তাদের কাছে তুলে ধরা জরুরি। এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে সিনেমা। তিন ঘণ্টার একটি সিনেমায় যেটা দেখানো সম্ভব সেটা অন্য কোন মাধ্যমে সম্ভব নয়। তাছাড়া আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ভাল ভাল সিনেমা নির্মিত হয়েছে। এই ভাল মানের সিনেমাগুলো স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মকে দেখানোর দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে।

একটা সময় বিশেষ বিশেষ দিন, যেমন- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বিনা পয়সায় ভাল ভাল সিনেমা দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। এখন এ উদ্যোগটা বন্ধ বলে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের সিনেমা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছে ইতিহাস জানা থেকে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সিনেমা একটা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এক জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি তৎকালীন পশ্চিমা সরকারের ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। একটি সিনেমা দেশ ও জাতির প্রয়োজনীয় মুহূর্তে কতটা দায়িত্ব পালন করতে পারে, ‘জীবন থেকে নেয়া’ তার জ্বলজ্বলে উদাহরণ। এখন ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আগুনের পরশমনি’, ‘গেরিলা’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’সহ অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র বিশেষ বিশেষ দিনে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের দেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করলে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, বীরত্বগাথা, আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্ম সহজেই জানতে পারবে এবং বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে।

পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্থানে যেভাবে ক্রিকেট খেলা দেখানো হয় সেভাবে যদি মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখানো হয় তাহলে সাধারণ দর্শকেরাও সিনেমার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারতেন। জানতে পারতেন একটি বাংলাদেশ জন্মের নেপথ্যে বাঙালি জাতির বীরত্বগাথা। আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বিষয়টি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও ভেবে দেখতে পারেন। এবং তাদের সুবিধার্থে মহান ভাষা আন্দোলন, গণআন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ঘটনা নিয়ে নির্মিত ছবিগুলোর তালিকা তুলে ধরা হলো। এখন কিভাবে উদ্যোগ নেবেন, কিভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাবেন সেটার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। কারণ, বর্তমানে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি নির্মাণের আগ্রহ বেড়েছে। এখন এই ছবিগুলো যদি সবাই না দেখেন তাহলে আগ্রহে ভাটা পড়ে যেতে পারে। বর্তমানে সিনেমার প্রতি দর্শকদের আগ্রহ কম নানা কারণে। কারও ইচ্ছা নেই, কারও সামর্থ্য। অর্থ ব্যয় করে সিনেমা দেখা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই অনেকের সংখ্যা বাড়ছে। এদেরকে সিনেমা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য বিশেষ দিনে বিনা পয়সায় সিনেমা দেখানোর সুযোগটা জরুরি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর বয়সে এমন সুযোগ বাংলাদেশের জনগণ পেতেই পারেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ছবিগুলো হলো, জীবন থেকে নেয়া, স্টপ জেনোসাইড, ওরা ১১ জন, জয় বাংলা, ধীরে বহে মেঘনা, আমার জন্মভূমি, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, রক্তাক্ত বাংলা, সংগ্রাম, বাঘা বাঙালি, কলমিলতা, মেঘের অনেক রঙ, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, আগুনের পরশমনি, মেঘের পরে মেঘ, শ্যামলছায়া, জয়যাত্রা, ধ্রুবতারা, খেলাঘর, মেহেরজান, খণ্ড গল্প ৭১, গেরিলা, আমার বন্ধু রাশেদ, একাত্তরের যিশু-পিতা, একাত্তরের ক্ষুদিরাম, অনুক্রোশ, রাবেয়া, লাল সবুজ, নদীর নাম মধুমতি, মুক্তির গান, বাঙলা, জীবনঢুলি, একাত্তরের যোদ্ধা, মুক্তি, এইতো প্রেম এবং একাত্তরের মা জননী। স্বাধীনতা-পরবর্তী পটভূমিকা নিয়ে নির্মিত ছবিগুলো হলো- আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, স্লোগান, এখনো অনেক রাত, কার হাসি কে হাসে, ঘাতক, রাক্ষস ইত্যাদি।

(ওএস/এটিআর/মার্চ ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test