E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালাফ হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

২০১৭ নভেম্বর ০১ ১৬:০৩:১১
খালাফ হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে এ মামলায় একজনের ফাঁসির আদেশ ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল রইলো।

বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আজ রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের আইনজীবী সাবেক বিচারপতি শিকদার মকবুল হক এবং আসামিপক্ষের অপর আইনজীবী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন মোল্লা।


অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, খালাফ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের তিনটি ও আসামি পক্ষের করা একটি আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তিনি আরও বলেন, খালাফ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির দণ্ড বহাল রেখেছেন। অপর আসামি সেলিমকে খালাস দেন।

আমরা যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের ফাঁসি এবং খালাসপ্রাপ্ত সেলিমের দণ্ড বাড়ানোর জন্য আপিল করেছিলাম। অপরদিকে আসামী সাইফুল ইসলাম তার দণ্ড কমানোর জন্য আপিল করেছিল। আদালত আজ সব আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে আসামী সাইফুলের ফাঁসির আদেশসহ অপর তিন আসামির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের রায় বহাল রইলো।

তিনি জানান, আদেশে আপিল বিভাগ বলেছেন, ‘চার আসামির সাজা বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রপক্ষের করা এবং মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের পক্ষে করা আপিলের সবগুলোই খারিজ করা হলো।’

তিনি আরও বলেন, আশা করেছিলাম সাঈফুলসহ কমপক্ষে চারজনের মৃত্যুদণ্ড হবে। খালাসপ্রাপ্ত আসামি সেলিমের দণ্ড বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০/১২ বছর করা হবে। কিন্তু আদালত তা করেননি। এখন কী করা হবে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রায় প্রকাশের পর পরবর্তী করণীয় ভাবতে হবে।

অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের আইনজীবী সিকদার মকবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ কোন যুক্তিতে আপিল খারিজ করেছেন, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পরই জানা যাবে। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে রায় (রিভিই) পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে কি-না সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য ২০১২ সালের ৫ মার্চ গুলশানে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। পরদিন ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার দুই দিন পর ৭ মার্চ গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয়া হয় এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ রায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

নিম্ন আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে আসে। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। এর ওপর শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে আসামি আসামি সাইফুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আর তিন আসামি মো. আল আমিন, আকবর আলী ওরফে রবি, রফিকুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহম্মেদকে খালাস দেয়া হয়।

হাইকের্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি শেষে গত ১০ অক্টোবর এই মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য থাকলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করা হয়। পরে আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে আপিলের পুনরায় শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদেশ দেন। শুনানি শেষে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test