E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট

২০১৮ মে ৩০ ১৮:১৬:৩০
ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট

স্টাফ রিপোর্টার : ভুল চিকিৎসায় রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শারমিন সরকার নামের এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ।

বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চার্জশিটটি গ্রহণ করে বিচারের জন্য নথি সিএমএম বরাবর প্রেরণ করেন।

এর আগে ১১ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় চার্জশিট জমা দেন।

চার চিকিৎসক হলেন- উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহম্মেদ খান, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল হোসেন, ডা. এম এ করিম ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফায়জুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ফ্রোবেল।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গলায় সিস্ট নিয়ে ২০১৫ সালের ৩০ মে শারমিন সরকার উত্তরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে ডা. ফিরোজ আহমেদ রোগটি খুব খারাপ জানিয়ে দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। অপারেশনটি তিনি নিজেই করবেন বলে শারমিনের পরিবারকে জানান। তার পরামর্শে ৩ জুন শারমিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তিনি অপারেশন করেননি।

৪ জুন ইএনটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল হোসেনকে ওই অপারেশনের দায়িত্ব দেন ডা. ফিরোজ। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের ডা. ফায়জুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ফ্রোবেল শারমিনকে অজ্ঞান করেন এবং ডা. আবুল হোসেন তার অপারেশন শুরু করেন।

অপারেশনের একপর্যায়ে ডা. ফ্রোবেল অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের প্রধান ডা. এম এ করিমের মৌখিক সম্মতি নিয়ে ওটিবয় জামালের হাতে অ্যানেসথেশিয়ার দায়িত্ব দিয়ে মিটিংয়ে চলে যান।

এরপর তিনি অপারেশন থিয়েটারে আর ফেরেননি। কোনো অ্যানেসথেশিস্ট ছাড়াই ওটিবয় জামালের সহায়তা নিয়ে ডা. আবুল হোসেন অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে ওটিবয় জামাল ডা. এম এ করিমকে ফোন করেন। ডা. করিম তারপরও ওটিতে না এসে ফোনে জামালকে একটি ইনজেকশন পুশ করতে বলেন। জামাল রোগীর শিরায় ইনজেকশন পুশ করেন। অপারেশন শেষ হওয়ার পর ডা. করিম ওটিতে ফিরে রোগীর লাইফসাপোর্ট খুলে নিয়ে পোস্ট অপারেটিভ রুমে নার্স কাজল ও আয়া শেবুতুনেচ্ছার কাছে রোগীকে হস্তান্তর করেন। ওই সময় পোস্ট অপারেটিভ কক্ষেও কোনো চিকিৎসক ছিলেন না।

মৃত শারমিনের মা সুফিয়া সরকার অভিযোগ করেন, মাইনর অপারেশনে দুই ঘণ্টা লাগার কারণে তার সন্দেহ হয়। তিনি জোর করে পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে প্রবেশ করে দেখতে পান, শারমিন যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এ সময় চিকিৎসক ও নার্সরা তাকে বের করে দেন। দুপুর ২টার দিকে শারমিনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ১৩ জুন রাত ১০টার দিকে শারমিনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় শারমিনের মা সুফিয়া সরকার ২ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা থানায় চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

২০১৬ সালে ডিবি পুলিশ ও ২০১৭ সালে পিবিআই অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার বাদী দুই দফাই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। সর্বশেষ সিআইডি মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান। সিআইডি ভুল চিকিৎসার কারণে শারমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

(ওএস/এসপি/মে ৩০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test