E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘প্রচণ্ড অসুস্থ’ খালেদার চিকিৎসার আবেদন

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১২ ১৫:২৩:৩২
‘প্রচণ্ড অসুস্থ’ খালেদার চিকিৎসার আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ‘প্রচণ্ড অসুস্থ’ তাই তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা আবারও চিকিৎসা করানোর আবেদন করেছেন আইনজীবী। আদালত এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নং বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।

এর আগে নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাজিরার জন্য বেলা ১২টা ২৩ মিনিটে হুইল চেয়ারে করে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে আটবার তাকে কারা আদালতে হাজির করা হলো। শুনানি শেষে দুপুর ২টা ৫ মিনিটে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতে আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি আদেশ দেয়া আছে। এর আগেও তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। কিন্তু তার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শেষ না হতেই আবার কারাগারে নেয়া হয়। এখন তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ তাই আমরা ব্যক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা আবারও তাকে চিকিৎসা প্রদানের অনুমতি চেয়ে আবেদন করছি।

এসময় হাইকোর্টের আদেশটি আছে কী-না জানতে চান আদালাত।

খালেদার আইনজীবী বলেন, আদেশটি আছে। পরে তা দাখিল করছি।

এসময় দুদকের আইনজীবীর কাছে তার বক্তব্য জানতে চান আদালত। দুদকের আইনজীবী মোশারখ হোসেন কাজল বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে জেল কোড অনুযায়ী আপনি আদেশ দিতে পারেন।

বিচারক পরে আদেশ দেবেন বলে জানান।

অপরদিকে এ মামলার অপর আসামি বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজের পক্ষে শুনানি শেষ করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, এ মামলার এজাহার প্রাপ্তিতে আমার বিরুদ্ধে কোরো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অর্থ আত্মসাতেরও কোনো অভিযেগ প্রমাণিত হয়নি। সব জায়গায় বলা হয়েছে মওদুদ আহমদ অপিনিয়ন (মতামত) দিয়েছেন। আমি কোথাও কোনো অপিনিয়ন দেইনি।

এদিন মামলার আরেক আসামি শহীদুল ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবী আসাদুজ্জামান আংশিক শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি আরও সময়ের আবেদন করেন। আদালত শুনানির জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত এক বছর ধরে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এর আগে সাতবার তাকে কারা আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ৮ নভেম্বর ও ১৪ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৩, ১৩ ও ২১ জানুয়ারি এবং ৪ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ মামলায় জব্দকৃত আলামত, সিডি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কপি চেয়ে একটি আবেদন করেন। ওই দিন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তার নিজের পক্ষে শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি। যারা অপরাধ করেছেন, তাদের বিচার হচ্ছে না। আইনি পয়েন্টে মামলার শুনানি শেষ করতে আরও দু'টি তারিখ লাগবে।’

আদালত বলেন, ‘একটি তারিখে শেষ করতে হবে।’ শুনানির জন্য আদালত আজকের দিন (১২ ফেব্রুয়ারি) ধার্য করেন।

অপরদিকে, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা নাইকো দুর্নীতি মামলার জব্দকৃত আলামত, সিডি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কপি চেয়ে আবেদন করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।

মামলার পরের বছরের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আসামি হলেন ১১ জন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test