E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধের নির্দেশ

২০১৯ এপ্রিল ২৫ ১৭:০৭:১০
প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার : বিশেষজ্ঞ বা রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জনস্বার্থে দায়ের করা এ-সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারিসহ দুইদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে এ আদেশ দেন।

সারাদেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়েটিক বিক্রি বন্ধ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

হাইকোর্ট বলেছেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি) সার্কুলার জারি করবেন। দুইদিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ জন্য প্রতি জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দেবেন তিনি।

রিট দায়েরকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদেশের পরে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘আদালত আমাদের রিট পিটিশনের শুনানি শেষে একটি রুল ইস্যু করেছেন। রুলে সারাদেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে, এ আদেশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রতি জেলার সিভিল সার্জন ও ডিসিদের প্রতি সর্কুলার জারি করে এসব আদেশ বাস্তবায়ন করার জন্য পাঠাবেন।’

গত ২২ এপ্রিল ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে ‘সুপারবাগস লিঙ্কড টু এইট আউট অব টেন ডেথস ইন বাংলাদেশ আইসিইউ’স’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ৮০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সুপারবাগ দায়ী।

এরপরই রিটটি দায়ের করেন সায়েদুল হক সুমন। রিট আবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুললে সে অবস্থাকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। এসব কারণে প্রতিবছর বিশ্বে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে এক কোটিতে।

পশুখাদ্য, মাছ এবং কৃষিতে অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষিতে, যা দেশে ব্যবহৃত মোট অ্যান্টিবায়োটিকের প্রায় অর্ধেক। ফলে খুব সহজেই কৃষি খাদ্যের মধ্য দিয়ে এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীর ঢুকছে। এতে একদিকে যেমন অ্যান্টিবায়াটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে, তেমনি শরীরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে।

রিটে আরও বলা হয়, অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা যে নষ্ট হয় বা হুমকি তৈরি করে-সে বিষয়টি তুলে ধরতে জাতীয় ওষুধ নীতি ব্যর্থ হয়েছে। অ্যাটিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার মানুষের মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এই ফাঁদ থেকে মানুষকে রক্ষা করা।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test