E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১০ লাখ লোকের সেবায় মাত্র ১০ জন বিচারক

২০১৯ এপ্রিল ২৭ ২২:২৫:১৬
১০ লাখ লোকের সেবায় মাত্র ১০ জন বিচারক

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে বিচারাধীন মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা অপর্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, বিচারক সঙ্কটের কারণে আদালতে প্রতিদিন মামলাজট বেড়েই চলছে। দেশে প্রতি ১০ লাখ লোকের জন্য বিচারক আছেন মাত্র ১০ জন। যেখানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৮ জন, ব্রিটেনে ৫১ যুক্তরাষ্ট্রে ১০৭, কানাডায় ৭৫ এবং অস্ট্রেলিয়ায় ৪১ জন বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।

দেশের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার-সংক্রান্ত একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরতে শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ যৌথভাবে এই আয়োজন করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, মামলাজট নিরসন ও বিচার প্রার্থীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতে কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তাই বিচারক সঙ্কট, অবকাঠামোগত অপ্রতুলতাকে মামলাজটের অন্যতম কারণ মনে হলেও শুধুমাত্র বিচারক বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা; যা নিশ্চিতে আমাদের দুটি ধাপে কাজ করতে হবে। প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় মামলা দায়েরের হার কমানো এবং দ্বিতীয়ত, মামলা দায়েরের পর প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মত দেশগুলোতে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলা পারস্পরিক বোঝাপড়া বা বিকল্প ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। বড়জোড় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয় আদালতে। আর আমাদের দেশে এর চিত্র ঠিক তার বিপরীত। এদেশে কেবল ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয় বোঝাপড়া বা বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে। আর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয় আদালতে।

বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় মামলা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিকল্পভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রচলিত আইনি বিধানগুলো আরও সূক্ষ্মভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের কারাগারগুলো বিচারাধীন মামলার আসামিতে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানের জন্য জিআইজেডের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। জিআইজেড কারাগারগুলোতে আইনি উপদেষ্টা পরিষেবা চালু করেছে, যা মামলাজট হ্রাসের পাশাপাশি অতিরিক্ত কারাবন্দির চাপও কমিয়ে আনবে বলে আমি আশা করি।

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটির চেয়ারম্যান ও আপিল ভিাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) বাংলাদেশের প্রধান জুডিথ হারবার্টসন, জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মাইকেল শুলথহাইস ও জিআইজেড বাংলাদেশের রুল অব ল’র হেড অব প্রোগ্রাম প্রমিতা সেন গুপ্ত।

এছাড়া জাস্টিস অডিটের ফলাফল উপস্থাপন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ম্যাপিং সেন্টারের পরিচালক জোসেপ এরিক ক্যাডোরা।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test