E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ওসি মোয়াজ্জেমের খুঁটির জোর কোথায় : ব্যারিস্টার সুমন

২০১৯ জুন ১১ ১৫:১৪:১৫
ওসি মোয়াজ্জেমের খুঁটির জোর কোথায় : ব্যারিস্টার সুমন

স্টাফ রিপোর্টার:  মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলোচনায় আসা ফেনীর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের খুঁটির জোর কোথায় বলে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলেও আদালতে আসছেন না। আত্মসমর্পণও করছেন না। তার গ্রেফতার এবং পালানোর বিষয়ে মন্ত্রীসহ অনেকেই কথা বলছেন, তারপরও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি অথবা তিনি এখন পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেননি। তার খুঁটির জোর কোথায়?

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার সুমন এমন মন্তব্য করেন। ওসি মোয়াজ্জেম ইঁদুর-বিড়াল খেলছেন বলেও মন্তব্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই প্রসিকিউটর।

ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে যদি ব্যর্থ হয় বা তিনি আত্মসমর্পণ না করেন তাহলে আগামী ১৬ জুন হাইকোর্টে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হবে।

তিনি বলেন, এর আগে গত ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। নুসরাতের পরিবারসহ সারাদেশের মানুষ অপেক্ষা করছে কখন তিনি গ্রেফতার হবেন বা আইনের আওতায় আসবেন। আমরা ভেবেছিলাম, আজ তিনি হাইকোর্টে আগাম জামিন নিতে আসবেন। কিন্তু তার মামলাটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠেনি। মনে হচ্ছে এর মাধ্যমে তিনি সময়ক্ষেপণ করে আমাদের এবং জাতির সঙ্গে ইঁদুর-বিড়াল খেলছেন। এ সপ্তাহে হাইকোর্টে আর মাত্র দু’দিন অবকাশকালীন বেঞ্চ বসবে। আগামী ১৬ জুন থেকে নিয়মিত বেঞ্চ বসবে। তাই এ সময়ের মধ্যে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার না করলে আমি বাদী হয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করব।

তিনি আরও বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম পুরোপুরি বহিষ্কৃত হননি, সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন। আর কতটা সময় নিলে মনে হবে পুলিশ প্রসাশন তাকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হয়নি? আমি জানি, পুলিশ প্রশাসন চাইলে এমন কোনো কাজ নেই যে তারা করতে পারে না। ভুরিভুরি উদাহরণ আছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও তারা আসামি ধরেছে। নুসরাত হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৬ জন আসামিকে তারা বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ধরে এনেছেন। পিবিআই একমাস তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং এই প্রতিবেদন পুলিশের হাতে ছিল। ওই প্রতিবেদনে তিনি (মোয়াজ্জেম) দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তবে এ পর্যায়েও কেন তারা (পুলিশ) তাকে (মোয়াজ্জেম) চোখেচোখে রাখতে পারলেন না? ওসি মোয়াজ্জেমকে ধরতে যত দেরি হচ্ছে ততই মানুষের মধ্যে বিশ্বাস প্রবল হচ্ছে যে, তারা (পুলিশ) ওসি মোয়াজ্জেমকে আসলেই ধরতে চাচ্ছেন কি-না?

প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করার পর নুসরাত জাহান রাফিকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তার বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। পরে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও দেন তিনি।

এদিকে রাফির বক্তব্য ভিডিও করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।

বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও মামলার নথি পর্যালোচনা করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন গত ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। তবে এরপরও গ্রেফতার হননি আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা।

(ওএস/অ/জুন ১১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test